মথি একজন ইহুদি নেতার মৃত মেয়েকে জীবিত করার ঘটনা লেখেছেন। বালিকার পিতা যীশুকে বলে, ‘‘আমার মেয়েটা এইমাত্র মারা গেছে। কিন্তু আপনি এসে তার উপর হাত রাখুন তাতে সে বেঁচে উঠবে’’ (মথি ৯/১৮)। যীশু মেয়েটার ঘরে যেয়ে উপস্থিত মানুষদের বলেন: ‘‘তোমরা বাইরে যাও। মেয়েটি মারা যায় নি, ঘুমাচ্ছে। এই কথা শুনে তারা হাসাহাসি করতে লাগল। লোকদের বের করে দেওয়া হলে পর তিনি ভিতরে গিয়ে মেয়েটির হাত ধরলেন। তাতে সে উঠে বসল। এই ঘটনার কথা সেই এলাকার সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল।’’ (মথি ৯/২৪-২৬, মো.-০৬)
‘‘মেয়েটি মারা যায়নি, ঘুমাচ্ছে’’- যীশুর এ কথাটার বিষয়ে আপত্তি করেন সমালোচকরা। বাহ্যত মেয়েটা মারা গিয়েছিল এবং বাহ্যত যীশু বাস্তবতার বিপরীত কথা বলেছিলেন, যা মিথ্যা বলে গণ্য। খ্রিষ্টান প্রচারকরা একে ‘রূপক’ বলে দাবি করেন। কিন্তু প্রশ্ন হল রূপকভাবেও মিথ্যা বলার প্রয়োজনীয়তা কী? মহাপুরুষরা যখন রূপকভাবে এরূপ মিথ্যা বলেন তখন অনুসারীদের মন থেকে মিথ্যার প্রতি ঘৃণা ও আপত্তি চলে যায়। মিথ্যা মানুষের কাছে সহজ হয়ে যায়। এছাড়া এভাবে ‘রূপক মিথ্যা’ বলে মানুষের সামনে সত্যকে অস্পষ্ট করার মধ্যে কী কল্যাণ বিদ্যমান? সহজ, সরল ও সর্বজনবোধ্য সত্য কথাই কি মানুষের সামনে সত্যকে সহজ করে না? বিশেষত এ ক্ষেত্রে মিথ্যা বলে যীশুর অলৌকিকতাকে গোপন করার মাধ্যমে মানুষের জন্য বিশ্বাসের দরজা কি রুদ্ধ করা হল না?
আমেরিকান লেখক সি. ড্যানিস ম্যাককিন্সি (Claud Dennis McKinsey) ১৯৯৫ সালে ‘বাইবেলীয় ভুলভ্রান্তি বিশ্বকোষ’ (The Encyclopedia of Biblical Errancy) নামে একটা এবং ২০০০ সালে বাইবেলীয় ভুলভ্রান্তি: একটা তথ্যসূত্র নির্দেশিকা (Biblical Errancy: A Reference Guide) নামে আরেকটা গ্রন্থ প্রকাশ করেন। গ্যারি ডেভানি ড্যানিস ম্যাককিনসির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন:
“If the ruler's daughter was dead, then, Jesus lied (G: sinned). If she was not dead, then Jesus performed no miracle." (G: A sin of deception) C. Dennnis McKinsey.” ‘‘যদি উক্ত নেতার মেয়েটার মৃত্যু হয়ে থাকে তবে যীশু মিথ্যা বললেন (গ্যারি: পাপ করলেন)। আর যদি মেয়েটার মৃত্যু না হয়ে থাকে তবে যীশু কোনো অলৌকিক কর্ম সম্পাদন করেননি (গ্যারি: একটা প্রতারণার পাপ)। সি ড্যানিস ম্যাককিনসি।’’[1]