বাইবেলের অন্য প্রসিদ্ধ নবী যিশাইয় বা ইশাইয়া (Isaiah)। প্রটেস্ট্যান্ট বাইবেলের ২৩ নং পুস্তক ও ক্যাথলিক বাইবেলের ২৯ নং পুস্তকটা তাঁর রচিত বলে প্রচলিত। এ প্রসঙ্গে এনকার্টা বিশ্বকোষ লেখেছে:
“Isaiah, longest prophetic book of the Old Testament. Isaiah, traditionally considered the author of the book, was born the son of Amoz about 760 bc. ... Isaiah was martyred in either 701 or 690 bc. ... Although the whole book is attributed to Isaiah, scholars now recognize that it took shape over several centuries, attaining its present form sometime before 180 bc.
‘‘যিশাইয় পুস্তকটা পুরাতন নিয়মের সর্ববৃহৎ ভাবাবদী পুস্তক। প্রচলিতভাবে যিশাইয়া বিন আমোসকে এ পুস্তকের রচয়িতা বলা হয়। তিনি খ্রিষ্টপূর্ব ৭৬০ সালের দিকে জন্ম গ্রহণ করেন... যিশাইয় খ্রিষ্টপূর্ব ৭০১ বা ৬৯০ সালের দিকে নিহত হন। ... যদিও ‘যিশাইয়’ পুস্তকটা পুরোটাই যিশাইয়র লেখা বলে প্রচলিত, তবে বর্তমানে গবেষকরা স্বীকার করেন যে, পুস্তকটা কয়েক শতাব্দী ধরে রূপগ্রহণ করেছে এবং খ্রিষ্টপূর্ব ১৮০ সালের কিছু আগে পুস্তকটা বর্তমানে প্রচলিত আকৃতি গ্রহণ করে।’’[1]
এ পুস্তকে ঈশ্বর যিশাইয়কে তিন বছর উলঙ্গ থাকতে নির্দেশ দেন: ‘‘সেই সময়ে মাবুদ আমোজের পুত্র ইশাইয়ার মধ্য দিয়ে এই কথা বললেন, তুমি গিয়ে নিজের কোমর থেকে চট খোল ও পা থেকে জুতা খোল। তাতে তিনি তা করলেন, উলঙ্গ হয়ে ও খালি পায়ে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন। তখন মাবুদ বললেন, আমার গোলাম ইশাইয়া যেমন মিসর ও ইথিওপিয়া দেশের বিষয়ে তিন বছরের চিহ্ন ও অদ্ভুত লক্ষণের জন্য উলঙ্গ হয়ে ও খালি পায়ে ঘুরে বেড়িয়েছে, তেমনি আসোরিয়ার বাদশাহ মিসরের লজ্জার জন্য আবালবৃদ্ধ (young and old)-মিসরীয়-বন্দী ও ইথিওপীয় নির্বাসিত লোকদেরকে উলঙ্গ অবস্থায়, খালি পায়ে ও পেছন অনাবৃত (with buttocks bared: পাছা অনাবৃত, কেরি: অনাবৃত-নিতম্ব) করে চালাবে।’’ (ইশাইয়া ২০/২-৪, মো.-১৩)
বিষয়টা বড়ই অদ্ভুত! মিসর-রাজের বা জনগণের অপরাধের জন্য মিসরীয় যুবক-যুবতী ও বৃদ্ধবৃদ্ধা (young and old) সকলের উলঙ্গ ও অনাবৃত নিতম্ব করা ছাড়া কি আর কোনো গ্রহণযোগ্য শাস্তি ঈশ্বর ও তাঁর ভাববাদীর নিকট ছিল না?
আর ঈশ্বরের নিকট থেকে মিসরীয়দের এ ‘অদ্ভুত’ শাস্তি আদায় করার জন্য ঈশ্বরের প্রিয় ভাববাদীর তিন বছর উলঙ্গ হয়ে চলা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না? তাওবা, প্রার্থনা, যজ্ঞ, কোরবানী ইত্যাদি শালীন ও ঈশ্বরের স্মরণমূলক কর্মের মাধ্যমে কি তা পাওয়া সম্ভব ছিল না?
সর্বোপরি পবিত্র পুস্তকে ‘অনাবৃত নিতম্ব’ অশোভন শব্দ ব্যবহার না করে কি এ অর্থ প্রকাশ করা যেত না? ‘নিতম্ব’ শব্দটা যদিও বাংলায় কম ব্যবহার হয় এবং অর্থ কিছুটা অস্পষ্ট, কিন্তু ইংরেজিত ‘buttock’ শব্দটা বাংলা ‘পাছা’ অর্থে বহুল ব্যবহৃত। পাঠক গুগল অনুবাদে ‘buttock’ লেখে বাংলা অর্থ চাইলে ‘পাছা’ অর্থই দেখবেন। আর বাংলা কোনো শালীন রচনায় ‘পাছা’ শব্দটার ব্যবহার কী শোভনীয়? বাহ্যত শব্দটার অশালীনতার কারণে কিতাবুল মোকাদ্দসের অনুবাদে ‘পেছন অনাবৃত’ লেখা হয়েছে। প্রশ্ন হল, ঈশ্বর কি বাটক (buttock) বা পাছা শব্দটা ব্যবহার না করে ব্যাক/ ব্যাকসাইড (back/backside) বা পিছন শব্দটা ব্যবহার করতে পারতেন না?