বাইবেলের অন্য প্রসিদ্ধ ভাববাদী বা নবী ইলীশায় (Prophet Elisha)। কিতাবুল মোকাদ্দসের অনুবাদে তাঁর নাম আল-ইয়াসা। তিনি তাঁর মহা অলৌকিক ক্ষমতার জন্য প্রসিদ্ধ। বাইবেলের বর্ণনায়, কিছু শিশু ইলীশায় ভাববাদীকে টাক বলে ঠাট্টা করে। এ জন্য ৪২ জন শিশুকে ভয়ঙ্করভাবে মৃত্যুবরণ করতে হয়: ‘‘পরে তিনি সেই স্থান থেকে বেথেলে চললেন; আর তিনি পথ দিয়ে উপরে যাচ্ছেন, এমন সময়ে নগর থেকে কতগুলো বালক (ইংরেজি: little children: ছোট্ট শিশু) এসে তাঁকে বিদ্রূপ করে বললো, রে টাক্পড়া উঠে আয়, রে টাক্পড়া উঠে আয়। তখন তিনি পিছনের দিকে মুখ ফিরিয়ে তাদেরকে দেখলেন এবং মাবুদের নামে তাদেরকে বদদোয়া দিলেন; আর বন থেকে দু’টা ভল্লুকী এসে তাদের মধ্যে বেয়াল্লিশ জন বালককে ছিঁড়ে ফেললো।’’ (২ রাজাবলি ২/২৩-২৪, মো.-১৩)
ছোট শিশুদের এ চপলতা কি অভিশাপযোগ্য অপরাধ! কোনো সাধারণ মানুষ কি এরূপ চপলতায় ক্রুদ্ধ হবেন? ক্রুদ্ধ হয়ে তাদের হত্যা করবেন? এখানে এ বাইবেলীয় ভাববাদীর ক্রোধ, আক্রোশ ও অভিশাপ যেমন লক্ষণীয়, তেমনি বা তার চেয়েও অধিক লক্ষণীয় চপলমতি শিশুদের বিরুদ্ধে অভিশাপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে ঈশ্বরের ব্যস্ততা!
উল্লেখ্য যে, ইলীশায় তাঁর মৃত্যুর পরেও একইভবে অলৌকিক কর্ম করতেন। ২ রাজাবলি ১৩/২০-২১ আমাদেরকে বলছে যে, একটা মৃতদেহকে ইলীশায় ভাববাদীর কবরে ফেলে দেওয়া হয়। সেই মৃত লাশটা কবরের মধ্যে ইলীশায়ের অস্তি স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গে পুনরুজ্জীবিত হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। আমরা জানি না, মৃত্যুর পরে ইলীশায়ের যেরূপ ক্ষমতা ছিল জীবদ্দশায় তাঁর এরূপ ক্ষমতা ছিল কি না? কিন্তু আমরা ধরে নিতে পারি যে, তাঁর এরূপ ক্ষমতা ছিল এবং তাঁর অভ্যাস ছিল যে, তাঁর শিকারদেরকে তিনি ভল্লুক দিয়ে হত্যা করতেন, এরপর তাদের পুনরুজ্জীবিত করতেন, এরপর তাৎক্ষণিকভাবে পুনরায় ভল্লুক ডেকে তাদের হত্যা করতেন। তিনি বিরক্ত না হওয়া পর্যন্ত পুরো বিষয় বার বার করতেন!