বাইবেলে ব্যভিচার মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আবার বাইবেলীয় নবীদের ব্যভিচার ও বেশ্যাগমন ফলাও করেই লেখা হয়েছে। এরূপ একজন বাইবেলীয় ত্রাণকর্তা ও নবী স্যামসন (Samson)। কেরির অনুবাদে শিম্শোন, কি. মো.-২০০৬: ‘হযরত শামাউন’ এবং কি. মো.-২০১৩: ‘শামাউন’।
তিনি অলৌকিক দৈহিক শক্তিসম্পন্ন ইসরাইলীয় বিচারকর্তা ছিলেন। তিনি ঈশ্বরের আত্মা বা পাক-রূহ দ্বারা পরিচালিত নবী ছিলেন: ‘‘আর সদাপ্রভুর আত্মা (পাক-রূহ) প্রথমে সরার ও ইষ্টায়োলের মধ্যস্থানে, মহনেদানে, তাঁহাকে চালাইতে লাগিলেন ( And the Spirit of the LORD began to move him.. ) (বিচারকর্তৃগণ/ কাজীগণ ১৩/২৫)। তিনি যে ঈশ্বরের আত্মা বা পবিত্র আত্মা দ্বারা পরিচালিত নবী ছিলেন তা বাইবেলের বিভিন্ন স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে। (বিচারকর্তৃগণ ১৪/৬, ৯; ১৫/১৪, ১৮, ১৯; ইব্রীয় ১১/৩২-৩৪)। তিনি বনি-ইসরাইল জাতির ত্রাণকর্তা, জাতীয় বীর এবং মুক্তির প্রতীক।
ঈশ্বর জন্মের পূর্বেই তাঁকে নির্বাচিত করেন। গর্ভধারণের পূর্বেই ঈশ্বর তাঁর মাতাকে মদ পান করতে নিষেধ করেন এবং শামাউনের জন্মের পরে সে যেন কোনো প্রকার মদ বা আঙুরের পানীয় পান না করে তা নিশ্চিত করেন (কাজীগণ ১৩ অধ্যায়)। শামাউন মদ পান না করলেও বেশ্যাগমন করতেন এবং নারীদের প্রতি খুবই অনুরক্ত ছিলেন। বাইবেল সমালোচকরা বলেন যে, মদের প্রভাব ছাড়াও যে পবিত্র ব্যক্তিরা শুধু পবিত্র আত্মার প্রভাবে বেশ্যাগমনে এবং নারী-সাহচর্যে আগ্রহী হতে পারেন তা প্রমাণের জন্যই ঈশ্বর জন্মের আগেই তাঁর জন্য মদ নিষিদ্ধ করেন।
বাইবেল নিশ্চিত করেছে যে, মাবুদের রূহের প্রভাবাধীন এ ভাববাদী বেশ্যাগমন করতেন এবং যে মহিলাকে দেখে পছন্দ হত তার নিকটই শয়ন করতেন। ‘‘শামাউন যখন সরা আর ইষ্টায়োলের মাঝখানে মহনে-দান বলে একটা জায়গায় ছিলেন তখন থেকে মাবুদের রূহ তাঁকে উত্তেজিত করতে লাগলেন। ... শামাউন একদিন গাজা শহরে গিয়ে একটা বেশ্যাকে দেখলেন এবং তার কাছে গেলেন। শামাউন সেখানে গিয়েছে শুনে গাজার লোকেরা জায়গাটা ঘেরাও করে রাখল এবং সারা রাত শহরের সদর দরজার কাছে তাঁর জন্য ওৎ পেতে বসে রইল। রাতের বেলায় তারা চুপচাপ রইল আর বলল, ‘সকাল হলে পর আমরা তাকে মেরে ফেলব।’ কিন্তু শামাউন সেখানে কেবল মাঝরাত পর্যন্ত শুয়ে ছিলেন। তারপর উঠে তিনি হড়কা সুদ্ধ শহরের সদর দরজার দু’টা খুঁটি ও দরজা উপড়ে ফেললেন। সেগুলো তিনি তাঁর কাঁধের উপর তুলে নিয়ে হেবরনের সামনের পাহাড়ের উপরে গেলেন।’’ (কাজীগণ ১৩/২৫ ও ১৬/১-৩, মো.-০৬)
‘‘এরপরে তিনি সোরেক উপত্যকার দলীলা নামে এক জন স্ত্রীলোককে ভালবাসলেন।’’ (বিচারকর্তৃগণ/ কাজীগণ ১৬/৪, মো.-১৩)
পাঠক, এগুলো কি পবিত্র পুস্তকের পবিত্র মানুষদের পবিত্র কর্মের বিবরণ?