ঈশ্বর ফিরাউনের অপরাধে মিসরের সকল খাল, বিল, জলাশয় ও নদীর পানি রক্ত বানান এবং সকল মাছ হত্যা করেন। (যাত্রাপুস্তক/ হিজরত ৭/১৯-২১)। ঈশ্বর ব্যাঙ দিয়ে মিসর দেশ ভরে দিলেন এবং এরপর অগণিত ব্যাঙ হত্যা করলেন (যাত্রাপুস্তক/হিজরত ৮/৬-১৪)। এরপর ঈশ্বর ফেরাউন ও তার অনুসারীদের অপরাধে মিসরীয়দের সকল পশু হত্যা করলেন: ‘‘মিসরীয়দের সব পশু মরে গেল’’ (যাত্রাপুস্তক/ হিজরত ৯/৬)। এরপর ঈশ্বর মিসরীয় সকল মানুষ ও পশুর শরীরে ফোড়া ও ঘা দিলেন। (যাত্রাপুস্তক ৯/১০)। (পাঠক লক্ষ্য করুন, কয়েক দিন আগেই ঈশ্বর মিসরীয়দের সকল পশু মেরে ফেলেছেন। কয়েকদিন পরেই আবার সকল পশুর শরীরে ফোড়া ও ঘা দিলেন!) এরপর ঈশ্বর ভয়ঙ্কর শিলাবৃষ্টির মাধ্যমে মাঠে অবস্থানরত সকল মানুষ ও পশুকে হত্যা করলেন। শুধু যে সকল মিসরীয় তাদের পশুপাল ঘরে এনেছিল তারা বেঁচে গেল। (হিজরত/ যাত্রাপুস্তক ৯/১৮-২৬) (পাঠক আবারো দেখুন! মাত্র কয়েকদিন আগেই কিন্তু সব পশু মরে গিয়েছিল!)
এরপর ঈশ্বর ফিরাউনের অপরাধে মিসরের সকল মানুষের সকল প্রথম ছেলেকে হত্যা করেন। উপরন্তু মিসরীয়দের সকল প্রাণির সকল প্রথম পুরুষ বাচ্চা হত্যা করেন (যদিও মাত্র কয়েকদিন আগেই মিসরীয়দের সব পশু মরে গিয়েছিল!) যাত্রা/হিজরত ১১/১-৫, ২৯; ১২/১২, ১২/২৯-৩০)। ‘‘মূসা ফেরাউনকে বললেন ... মিসর দেশের সব পরিবারের প্রথম ছেলে মারা যাবে। সিংহাসনের অধিকারী ফেরাউনের প্রথম ছেলে থেকে শুরু করে জাঁতা ঘুরানো বাঁদীর প্রথম ছেলে পর্যন্ত কেউ বাদ যাবে না। এছাড়া পশুদেরও প্রথম পুরুষ বাচ্চা মারা যাবে।’’ (যাত্রাপুস্তক/ হিজরত ১১/৪-৫; ১২/১২, ১২/২৯-৩০, মো.-০৬)
বাইবেল বলছে, ঈশ্বর নিজেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে ফিরাউনের মনকে শক্ত করে দিয়ে তাকে অবাধ্য বানান, যেন তিনি মিসরীয়দের এভাবে হত্যা করার সুযোগ পান। (যাত্রাপুস্তক ৭/৩-৫, ১৩, ২২-২৩, ৮/১৫, ১৯, ৯/১২, ৩৫, ১০/১-২, ২০, ১০/২৭) ফেরাউনের এ বাধ্যতামূলক অবাধ্যতার জন্য মিসরীয়দের প্রথম ছেলে ও তাদের মায়েদের দায়ভার কী? ফেরাউনকে অবাধ্য বানিয়ে কুদরত দেখানোর ঈশ্বরীয় পরিকল্পনার কারণে এ সকল নিরপরাধ শিশু ও মাতাদের শাস্তি ভোগ করতে হবে কেন? মিসরীয় প্রথম ছেলেরা ও তাদের মায়েরা ঈশ্বরের প্রতি কী মহাপরাধ করেছিলেন? আপনি যদি ঈশ্বর হতেন তবে কি আপনি মিসরীয়দের সকল প্রথম ছেলে হত্যা করতেন?