উপরে আমরা বাইবেলের বৈপরীত্য ও ভুলভ্রান্তি বিষয়ে আলোচনা করেছি। এ অধ্যায়ে আমরা ‘বিকৃতি’ আলোচনা করব। বিকৃতি (alteration, distortion, change, deformation, perversion, corruption, fabrication) অর্থ শব্দ বা বাক্যের স্থানান্তর, সংযোজন, বিয়োজন বা সম্পাদনার মাধ্যমে মূল পাঠকে পরিবর্তন করা ।
বাহ্যত বৈপরীত্য ও ভুলভ্রান্তিও বিকৃতির অন্তর্ভুক্ত। বৈপরীত্যের ক্ষেত্রে দু’টা বক্তব্যের একটা বা দু’টাই বিকৃত বলে প্রতীয়মান। তবে এমনও হতে পারে যে, মূল লেখক বা লেখকরাই এরূপ সাংঘর্ষিক বা পরস্পর বিরোধী তথ্য উল্লেখ করেছেন। ভুলভ্রান্তির ক্ষেত্রে বাহ্যত ভুল তথ্যটা বিকৃত। তবে এমনও হতে পারে যে, মূল লেখকই এ ভুল তথ্য লেখেছেন। এজন্য বৈপরীত্য ও ভুলভ্রান্তিকে আমরা বিকৃতির অন্তর্ভুক্ত না করে পৃথক আলোচনা করেছি। যে সকল ক্ষেত্রে মূল পাঠের ‘পরিবর্তন’ স্বীকৃত সেগুলোকেই আমরা এ পরিচ্ছেদে ‘বিকৃতি’ প্রসঙ্গে আলোচনা করব।
বৈপরীত্য ও ভুলভ্রান্তি ছাড়াও বাইবেলের মধ্যে সংযোজন, বিয়োজন, পরিবর্তন ও সম্পাদনার মাধ্যমে অগণিত বিকৃতি সাধিত হয়েছে বলে বাইবেল বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন। সাধারণত ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, পাণ্ডুলিপি অধ্যয়ন বা বিভিন্ন পাঠের মধ্যে তুলনার মাধ্যমে বিকৃতির বিষয়টা নিশ্চিত করা যায়।
আমরা দেখেছি যে, বাইবেলের স্বীকৃত সংস্করণগুলোর অন্যতম (১) প্রটেস্ট্যান্ট বাইবেল, (২) ক্যাথলিক বাইবেল, (৩) অর্থোডক্স বাইবেল, (৪) ইথিওপীয় বাইবেল ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে পুস্তক সংখ্যা, পুস্তকগুলোর বিষয়বস্ত্ত, অধ্যায়, শ্লোক ইত্যাদির মধ্যে বিদ্যমান অকল্পনীয় বৈপরীত্যের কথাও আমরা জেনেছে। এগুলো সবই সংযোজন, বিয়োজন বা পরিবর্তনের মাধ্যমে বিকৃতির প্রকৃষ্ট নমুনা। আমরা এগুলো আলোচনা করব না। আমরা শুধু বর্তমানে প্রচলিত ও স্বীকৃত প্রটেস্ট্যান্ট বাইবেল বা কিং জেমস বাইবেলের মধ্যে বিদ্যমান অগণিত বিকৃতির মধ্য থেকে কিছু বিষয় আলোচনা করব।
৫. ১. বিকৃতির প্রাচুর্য ও ওযরখাহি
বাইবেল বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে, বাইবেলের মধ্যে বিদ্যমান সংযোজন, বিয়োজন ও পরিবর্তন জনিত বিকৃতি হাজার হাজার বা অগণিত। যেহেতু এ জাতীয় বিকৃতি অগণিত সেহেতু আমরা এখানে অতি সামান্য কয়েকটা নমুনা উল্লেখ করছি: