হিজরত/ যাত্রাপুস্তক ১২/৪০-৪১: ‘‘বনি-ইসরাইলেরা চার শত ত্রিশ বছর মিসরে বাস করেছিল। সেই চার শত ত্রিশ বছরের শেষে, ঐ দিনে, মাবুদের সমস্ত বাহিনী মিসর দেশ থেকে বের হল।’’ (মো.-১৩)
বাইবেলের এ তথ্যটা সন্দেহাতীতভাবেই ভুল। বাইবেলের অন্যান্য তথ্য অনুসারে বনি-ইসরাইল বা ‘ইস্রায়েল-সন্তানগণ’ ৪৩০ বছর অবস্থান করেননি।
ইসরাইল বা ইস্রায়েল ইয়াকুব (আ.)-এর প্রসিদ্ধতম উপাধি। তাঁর ১২ পুত্র ও তাঁদের বংশধরদের ‘বনি-ইসরাইল’ বা ‘ইস্রায়েল-সন্তান’ বলা হয়। বাইবেলের বর্ণনা অনুসারে মিসরে গমনের পূর্বে ইসরাইল, তাঁর পিতা ইসহাক ও পিতামহ ইবরাহিম (আ.) কেনান (সিরিয়া-ফিলিস্তিন) দেশে ২১৫ বছর অবস্থান করেন। আর ইউসুফের আহবানে ইসরাইলের মিসর আগমন থেকে মূসা (আ.)-এর সাথে তাঁর বংশধরদের মিসর ত্যাগ পর্যন্ত সময়কাল ২১৫ বছর বলে দাবি করেন ইহুদি ও খ্রিষ্টান ঐতিহাসিকরা। এজন্য ইহুদি-খ্রিষ্টান পণ্ডিতরা একবাক্যে স্বীকার করেছেন যে, হিব্রু বাইবেলের এ তথ্যটা ভুল। তারা বলেন: শমরীয় তৌরাতে এখানে কেনান দেশ ও মিসর উভয় দেশে মোট ৪৩০ বছর থাকার কথা বলা হয়েছে এবং এটাকেই তারা সঠিক বলে গণ্য করেন।
বাস্তবে মিসরে বনি-ইসরাইলদের অবস্থান ২১৫ বছর নয়, বরং দেড়শ বছর মত ছিল বলেই প্রতীয়মান। ইয়াকুব বা ইসরাইলের পুত্র লেবি, তার পুত্র কহাৎ, তার পুত্র অম্রম (Amram: ইমরান), তার পুত্র মোশি (মূসা আ.)। মোশির দাদা কহাৎ জন্মের পরে মিসরে আগমন করেন। আমরা মনে করতে পারি যে, কহাৎ ৩০/৪০ বছর বয়সে ইমরানের জন্ম দেন আর ইমরান ৪০/৫০ বছরে মোশিকে জন্ম দেন। মোশি ৬৫/৭০ বছর বয়সে বনি-ইসরাইলদের নিয়ে মিসর ত্যাগ করেন। এতে মনে হয় মিসরে ইস্রায়েলীয়দের অবস্থান ছিল কমবেশি দেড়শ বছর।