প্রথম তিন ইঞ্জিলের লেখকরা এক ব্যক্তির কথা লেখেছেন, যিনি কর গ্রহণ স্থানে বসে ছিলেন। তখন যীশু তাকে তাঁর অনুসরণের জন্য আহবান করেন। লোকটা তাঁর আহবানে সাড়া দিয়ে তাঁকে অনুসরণ করেন এবং তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু এ ব্যক্তির নামের বর্ণনায় তারা পরস্পর বিরোধী কথা বলেছেন। মথি লেখেছেন: ‘‘আর সে স্থান থেকে যেতে যেতে ঈসা দেখলেন, মথি নামক এক ব্যক্তি কর-গ্রহণ স্থানে বসে আছে; তিনি তাকে বললেন, আমাকে অনুসরণ কর। তাতে সে উঠে তাঁর পিছনে পিছনে চলতে লাগল।’’ (মথি ৯/৯, মো.-১৩)
মথির এ বক্তব্য থেকে জানা যায় যে, এ শিষ্যের নাম মথি। এ বক্তব্য থেকে আরো জানা যায় যে, এ শিষ্য মথি এ ইঞ্জিলের লেখক নন। কারণ তিনি নিজে এটা লেখলে এখানে নিজেকে বুঝানোর জন্য উত্তম পুরুষের ব্যবহার করতেন।
মার্ক লেখেছেন, তার নাম ‘আল্ফেয়ের পুত্র লেবি’: ‘‘তিনি যেতে যেতে দেখলেন, আল্ফেয়ের পুত্র লেবি কর-গ্রহণ স্থানে বসে আছেন। তিনি তাঁকে বললেন, আমাকে অনুসরণ কর। তাতে তিনি উঠে তাঁর পিছনে চলতে লাগলেন।’’ (মার্ক ২/১৪, মো.-১৩)
লূকের বর্ণনা মার্কের মত, তবে তিনি লোকটার পিতার নাম লেখেননি: ‘‘তারপর তিনি বাইরে গেলেন, আর দেখলেন, লেবি নামে একজন কর-আদায়কারী করগ্রহণ-স্থানে বসে আছেন; তিনি তাঁকে বললেন, আমাকে অনুসরণ কর। তাতে তিনি সব কিছু পরিত্যাগ করে উঠে তাঁর পিছনে পিছনে চলতে লাগলেন।’’ (লূক ৫/২৭, মো.-১৩)
এখানে পরস্পর বিরোধিতা খুবই স্পষ্ট। খ্রিষ্টান পণ্ডিতরা বুঝানোর চেষ্টা করেন যে, মথিরই আরেক নাম ছিল ‘আলফেয়ের পুত্র লেবি’। কথাটা ভিত্তিহীন ও বাইবেলের বাহ্যিক পাঠের বিপরীত। নিজেদের কল্পনা ছাড়া অন্য কোনো প্রাচীন ঐতিহাসিক বা গ্রন্থীয় তথ্য দিয়ে তারা তা প্রমাণ করতে পারেন না।
উল্লেখ্য যে, তিন সুসমাচার লেখক তাদের এ অধ্যায়গুলোর পরে যখন যীশুর শিষ্যদের নাম লেখেছেন তখন তাঁরা সকলেই যীশুর শিষ্য হিসেবে মথির নাম লেখেছেন। আর আল্ফেয়ের পুত্র হিসাবে উল্লেখ করেছেন ‘যাকোব’- এর নাম।