বাইবেলের বিভিন্ন স্থানে বলা হয়েছে যে, যীশু জীবিত ও মৃতদের বিচারক। যেমন: ‘‘কারণ, পিতা কাহারও বিচার করেন না, কিন্তু সমস্ত বিচার ভার পুত্রকে দিয়াছেন (For the Father judgeth no man, but hath committed all judgment unto the Son)’’ (যোহন ৫/২২)। অন্যত্র যীশু বলেন: ‘‘বিচারের জন্য আমি এ জগতে আসিয়াছি (For judgment I am come into this world)’’ (যোহন ৯/৩৯)।
অন্যত্র পিতর বলেন: ‘‘তাঁহাকেই ঈশ্বর জীবিত ও মৃতদিগের বিচারকর্তা নিযুক্ত করিয়াছেন (ordained of God to be the Judge of quick and dead)’’ (প্রেরিত ১০/৪২)। অন্যত্র তিনি বলেন: ‘‘কেননা তিনি একটি দিন স্থির করিয়াছেন, যে দিনে আপনার নিরূপিত মানুষ (ইংরেজি: man, বঙ্গানুবাদে: ব্যক্তি) দ্বারা ন্যায়ে জগৎ সংসারের বিচার করিবেন (judge the world in righteousness by that man whom he hath ordained)।’’ (প্রেরিত ১৭/৩১। আরো দেখুন যোহন ৫/২৭; ৫/৩০; ৮/১৬; রোমীয় ২/১৬; ২ তিমথিয় ৪/১)
এর বিপরীতে যীশু বারবার বলেছেন যে, তিনি কারো বিচারক হিসেবে প্রেরিত হননি এবং তিনি কারো বিচার করেন না। তিনি বলেন: ‘‘তোমাদের উপরে বিচারকর্তা (who made me a judge) বা বিভাগকর্তা করিয়া কে আমাকে নিযুক্ত করিয়াছে?’’ (লূক ১২/১৪)। তিনি আরো বলেন: ‘‘কেননা ঈশ্বর জগতের বিচার করিতে পুত্রকে জগতে প্রেরণ করেন নাই’’ (যোহন ৩/১৭)। অন্যত্র তিনি বলেন: ‘‘আমি কাহারও বিচার করি না (I judge no man/ no one)’’ ( যোহন ৮/১৫)।
অন্যত্র বলেন: ‘‘আর যদি কেহ আমার কথা শুনিয়া বিশ্বাস (ইংরেজি: KJV: believe: বিশ্বাস, RSV: Keep: রক্ষা, বঙ্গানুবাদে: পালন) না করে, আমি তাহার বিচার করি না, কারণ আমি জগতের বিচার করিতে নয়, কিন্তু জগতের পরিত্রাণ করিতে আসিয়াছি (And if any man hear my words, and believe not, I judge him not: for I came not to judge the world, but to save the world.)।’’ (যোহন ১২/৪৭)
লক্ষণীয় যে, যোহনের ইঞ্জিলের মধ্যে এ বৈপরীত্য ব্যাপক। যোহনই লেখলেন যে, যীশু বিচার করবেন (৫/২২; ৯/৩৯)। আবার যোহনই লেখলেন যে, যীশু কারো বিচার করবেন না (৩/১৭; ৮/১৫; ১২/৪৭)। এজন্য গ্যারি ডাভিন্সি লেখেছেন:
“John, why do your writings conflict and contradict? Granted, my writings have numerous errors, but John, you are a man who supposedly wrote God’s ‘perfect’ words. Your writings have to be correct. But, they prove that they are not”. ‘‘যোহন, আপনার লেখনি কেন সাংঘর্ষিক ও পরস্পরবিরোধী? নিশ্চিতভাবেই আমার লেখনির মধ্যে অনেক ভুল থাকবে। কিন্তু, যোহন, আপনার লেখনি তো সঠিক হতে হবে। কারণ, এ কথাই তো ধরে নেওয়া হয়েছে যে, আপনি ঈশ্বরের ‘নিখুঁত’ কথাগুলো লেখছেন। আপনার লেখনি বিশুদ্ধ হওয়া দরকার ছিল। কিন্তু তা বিশুদ্ধ নয় বলেই প্রমাণ হল।’’[1]