ইউহোন্না ১৪/৬ (মো.-১৩): ‘‘আমিই পথ ও সত্য ও জীবন; আমার মধ্য দিয়ে না আসলে কেউ পিতার কাছে আসতে পারে না।’’ এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, যীশুর মাধ্যম ছাড়া শুধু ঈশ্বরকে বিশ্বাস করে এবং সৎ কর্ম করে মুক্তি মিলবে না।
কিন্তু প্রেরিত ১০/৩৪-৩৫ বলছে: ‘‘তখন পিতর মুখ খুলিয়া কহিলেন, আমি সত্যই বুঝিলাম, ঈশ্বর মুখাপেক্ষা (পক্ষপাতিত্ব, ব্যক্তি বিচার ইংরেজি: RSV: partiality, KJV: respecter of persons) করেন না। কিন্তু প্রত্যেক জাতির মধ্যে যে কেহ তাঁহাকে ভয় করে ও ধর্মাচরণ করে সে তাঁহার গ্রাহ্য হয় (RSV: in every nation anyone who fears him and does what is right is acceptable to him. KJV: in every nation he that feareth him, and worketh righteousness, is accepted with him)।’’
উভয় বক্তব্যের মধ্যে বৈপরীত্য সুস্পষ্ট। প্রথম বক্তব্যে যীশুর প্রতি বিশ্বাসই মুক্তির পথ। এখানে ভাল কর্ম করার কোনো শর্তও আরোপ করা হয়নি। দ্বিতীয় বক্তব্যে ঈশ্বরের প্রতি ভয় ও ধর্মাচারণ (righteousness) মুক্তির পথ। যীশুর প্রতি বিশ্বাস কোনো শর্ত নয়। যীশুর প্রতি বিশ্বাসকে শর্ত করা নিঃসন্দেহে পক্ষপাতিত্ব ও ব্যক্তি বিচার। আর সেক্ষেত্রে ‘সকল জাতির যে কেউ’ বলার কোনোই অর্থ থাকে না।
যোহনের ৫ অধ্যায়ে দীর্ঘ আলোচনায় যীশু বলেছেন যে, মানুষেরা তাঁর প্রতি বিশ্বাস না করলেও তিনি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন না: ‘‘মনে করো না যে,& আমি পিতার কাছে তোমাদের উপর দোষারোপ করব; এক জন আছেন, যিনি তোমাদের উপর দোষারোপ করেন; তিনি মূসা, যাঁর উপরে তোমরা প্রত্যাশা রেখেছ’’ (যোহন/ ইউহোন্না ৫/৪৫, মো.-১৩)। এখানেও তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, তাঁর কথা মানা ও না মানা মানুষদের ইচ্ছা, কোনো অবস্থাতেই তিনি অভিযোগ করবেন না। এ বক্তব্যও প্রথম বক্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক।
১ তীমথিয় ৪/১০: ‘‘এজন্যই আমরা পরিশ্রম ও প্রাণপণ করছি; কেননা আমরা সেই জীবন্ত আল্লাহর উপরেই প্রত্যাশা রেখেছি, যিনি সমস্ত মানুষের, বিশেষত ঈমানদারদের নাজাতদাতা (we trust in the living God, who is the Saviour of all men, specially of those that believe)।’’ (মো.-১৩)
এ বক্তব্য নিশ্চিত করে যে, জীবন্ত ঈশ্বর শুধু ঈমানদারদের নয়; বরং ঈমানদার ও বেঈমান সকল মানুষেরই ত্রাণ করবেন বা নাজাত দিবেন। স্বভাবতই এ বক্তব্যটা ‘যীশুর প্রতি ঈমান ছাড়া নাজাত লাভ হবে না’ বক্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক।