যীশুর কবর থেকে পুনরুত্থানের বর্ণনার শুরুতে মথি লেখেছেন: ‘‘বিশ্রামবারের পরে সপ্তার প্রথম দিনের ভোর বেলায় মগ্দলীনী মরিয়ম ও সেই অন্য মরিয়ম কবরটা দেখতে গেলেন। তখন হঠাৎ ভীষণ ভূমিকম্প হল, কারণ মাবুদের একজন ফেরেশতা বেহেশত থেকে নেমে আসলেন এবং কবরের মুখ থেকে পাথরখানা সরিয়ে তার উপর বসলেন। তাঁর চেহারা বিদ্যুতের মত ছিল আর তাঁর কাপড় চোপড় ছিল ধবধবে সাদা। তাঁর ভয়ে পাহারাদারেরা কাঁপতে লাগল ও মরার মত হয়ে পড়ল। ফেরেশতা স্ত্রীলোকদের বললেন, ‘তোমরা ভয় কোরো না, কারণ আমি জানি, যাঁকে ক্রুশের উপর হত্যা করা হয়েছিল তোমরা সেই ঈসাকে খুঁজছ। তিনি এখানে নেই। তিনি যেমন বলেছিলেন তেমন ভাবেই জীবিত হয়ে উঠেছেন....।’’ (মথি ২৮/১-৬)
মার্ক লেখেছেন: ‘‘বিশ্রামবার পার হয়ে গেলে পর মগ্দলীনী মরিয়ম, ইয়াকুবের মা মরিয়ম এবং শালোমী ঈসার দেহে মাখাবার জন্য খোশবু মলম কিনে আনলেন। সপ্তার প্রথম দিনে খুব সকালে, সূর্য উঠবার সংগে সংগেই তাঁরা কবরের কাছে গেলেন। সেই সময় তাঁরা একে অন্যকে জিজ্ঞাসা করছিলেন, ‘কবরের মুখ থেকে কে ঐ পাথরটা সরিয়ে দেবে? কিন্তু তাঁরা চেয়ে দেখলেন যে, পাথরখানা সরানো হয়েছে। সেই পাথরখানা খুব বড় ছিল। পরে তাহারা কবরের ভিতর গিয়া (ইংরেজি: entering into the sepulchre কি. মো.: কবরের গুহায় ঢুকে) দেখলেন সাদা কাপড়-পরা একজন যুবক ডান দিকে বসে আছেন। এতে তাঁরা খুব অবাক হলেন। সেই যুবকটা বললেন, ‘অবাক হয়ো না। নাসরাত গ্রামের ঈসা, যাঁকে ক্রুশের উপর হত্যা করা হয়েছিল, তাঁকেই তোমরা খুঁজছ তো? তিনি এখানে নেই। তিনি জীবিত হয়ে উঠেছেন।...’’ (মার্ক ১৬/১-৬)
লূক লেখেছেন: ‘‘সপ্তার প্রথম দিনের খুব সকালবেলা সেই স্ত্রীলোকেরা সেই খোশবু মশলা নিয়ে কবরের কাছে গেলেন। তাঁরা দেখলেন, কবরের মুখ থেকে পাথরখানা সরিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু কবরের ভিতরে গিয়ে তাঁরা ঈসার লাশ দেখতে পেলেন না। যখন তাঁরা অবাক হয়ে সেই বিষয়ে ভাবছিলেন তখন বিদ্যুতের মত ঝকঝকে কাপড় পরা দু’জন লোক তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ালেন। এতে স্ত্রীলোকেরা ভয় পেয়ে মাথা নীচু করলেন। লোক দুটো তাঁদের বললেন, যিনি জীবিত তাঁকে মৃতদের মধ্যে তালাশ করছ কেন? তিনি এখানে নেই; তিনি জীবিত হয়ে উঠেছেন।’’ (লূক ২৪/১-৬)
যোহন লেখেছেন: ‘‘সপ্তার প্রথম দিনের ভোর বেলা, অন্ধকার থাকতেই মগ্দলীনী মরিয়ম সেই কবরের কাছে গেলেন। তিনি দেখলেন, কবরের মুখ থেকে পাথরখানা সরানো হয়েছে। সেইজন্য তিনি শিমোন-পিতর আর যে সাহাবীকে ঈসা মহববত করতেন সেই সাহাবীর কাছে দৌড়ে গিয়ে বললেন, ‘লোকেরা হুজুরকে কবর থেকে নিয়ে গেছে। তাঁকে কোথায় রেখেছে আমরা তা জানি না।’ পিতর আর সেই অন্য সাহাবীটি তখন বের হয়ে কবরের দিকে যেতে লাগলেন।’’ (যোহন ২০/১-৩)
উপরে বক্তব্যগুলোর মধ্যে বহুবিধ বৈপরীত্য সুস্পষ্ট। প্রথমেই আমরা দেখছি যে, মার্ক স্পষ্টতই লেখছেন যে, মহিলারা সূর্য উঠার পরে কবরের দিকে গমন করেন। পক্ষান্তরে যোহন লেখছেন যে, মহিলা অন্ধকার থাকতেই কবরের দিকে গমন করেন। বক্তব্যদ্বয় সাংঘর্ষিক। এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে ফিলিস্তিনে সূর্য উঠার পরেও আঁধার থাকে বলে যদি কেউ বিশ্বাস করতে চান তবে তা ভিন্ন কথা।