পবিত্র বাইবেল পরিচিতি ও পর্যালোচনা তৃতীয় অধ্যায় - বৈপরীত্য ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি
৩. ৫. ২৬. যীশুর কার্য বর্ণনার ক্রমবিন্যাসে বৈপরীত্য

মথি ৮ অধ্যায়ে ১৮-২২ শ্লোকে লেখেছেন যে, এক জন অধ্যাপক (আলেম) যীশুর অনুসরণের অনুমতি প্রার্থনা করেন এবং অন্য এক ব্যক্তি তার মৃত পিতাকে কবর দেওয়ার অনুমতি প্রার্থনা করেন। এরপর যীশু কী কী অলৌকিক কার্যাদি সম্পন্ন করেন ও উপদেশ প্রদান করেন তার বিস্তারিত বিবরণ তিনি প্রদান করেছেন। ৮ অধ্যায়ের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে ১৬ অধ্যায়ের শেষ পর্যন্ত এ সকল কাহিনী তিনি লেখেছেন। এরপর ১৭ অধ্যায়ে তিনি যীশুর উজ্জ্বল রূপ গ্রহণ করার ঘটনা উল্লেখ করেছেন।

পক্ষান্তরে লূক ৪র্থ অধ্যায় থেকে ৯ম অধ্যায় পর্যন্ত উপরের সকল অলৌকিক ঘটনা ও উপদেশ প্রদানের ঘটনা বর্ণনা করার পরে ৯ম অধ্যায়ের মাঝামাঝি এসে যীশুর রূপান্তর বা উজ্জ্বল রূপ গ্রহণের ঘটনা উল্লেখ করেছেন। এরপর তিনি উক্ত দু’ ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেছেন।

এখানে ঘটনাগুলোর বর্ণনার ধারাবাহিকতায় আমরা বৈপরিত্য দেখতে পাই। ঐতিহাসিক তথ্য উপস্থাপনায় ঘটনার ধারাবাহিকতা নষ্ট করা এবং পূর্বের কর্মকে পরে ঘটেছে বলে উল্লেখ করা সঠিক নয়। বিশেষত পবিত্র আত্মার প্রেরণায় বা ঐশী প্রেরণায় রচিত কোনো গ্রন্থে এরূপ বৈপরীত্যের কথা চিন্তা করা যায় না।

একই বৈপরীত্য ভুতগ্রস্ত গোঁগার (ভুতে পাওয়া বোবা লোকের) কাহিনী বর্ণনায়।  মথি ৯ অধ্যায়ে (মথি ৯/৩২-৩৪) ভূতগ্রস্ত গোঁগার কাহিনী উল্লেখ করেছেন। এরপর ১০ অধ্যায়ে যীশু কতৃক শিষ্যদেরকে ‘ভূত ছাড়াবার ও সব রকম রোগ ভাল করবার’ ক্ষমতা প্রদান এবং তাদেরকে প্রেরণ করার ঘটনা উল্লেখ করেছেন (মথি ১০/১-১০)। এরপর তিনি পরবর্তী অধ্যায়গুলোতে অনেক কাহিনী উল্লেখ করেছেন। এরপর ১৭ অধ্যায়ে তিনি যীশুর রূপান্তর ও উজ্জ্বল রূপগ্রহণের ঘটনা উল্লেখ করেছেন।

অপর দিকে লূক ৯ম অধ্যায়ে যীশু কর্তৃক শিষ্যদেরকে ক্ষমতা প্রদানের ঘটনা উল্লেখ করেছেন (লূক ৯/১-৬)। এরপর যীশুর রূপান্তরের ঘটনা উল্লেখ করেছেন (লূক ৯/২৮-৩৬)। এরপর এই অধ্যায়ে, পরবর্তী ১০ অধ্যায়ে ও ১১শ অধ্যায়ের শুরুতে অন্য অনেক কাহিনী বর্ণনা করেছেন। এরপর তিনি ভূতগ্রস্ত গোঁগার (ভূতে ধরা বোবার) কাহিনী উল্লেখ করেছেন (লূক ১১/১৪-১৫)।