পবিত্র বাইবেল পরিচিতি ও পর্যালোচনা তৃতীয় অধ্যায় - বৈপরীত্য ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি
৩. ৩. ২. পস্নাবন পরবর্তী মহাপুরুষদের বয়স বর্ণনায় বৈপরীত্য

আদিপুস্তকের ১১ অধ্যায়ের ১০-২৬ শ্লোকে নূহ (আ.)-এর পস্নাবন থেকে ইবরাহিম (আ.) পর্যন্ত সময়কাল বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে নূহ (আ.) থেকে ইবরাহিম (আ.) পর্যন্ত মহাপুরুষদের বয়সকালও উল্লেখ করা হয়েছে। বাইবেলের তিন সংস্করণে এ সময়কাল তিন প্রকার লেখা হয়েছে। নূহের পস্নাবন থেকে ইবরাহিম (আ.)-এর জন্ম পর্যন্ত সময়কাল হিব্রু সংস্করণ অনুসারে দুইশত বিরানববই (২৯২) বছর, শমরীয় সংস্করণ অনুসারে নয়শত বিয়াল্লিশ (৯৪২) বছর এবং গ্রিক সংস্করণ অনুসারে এক হাজার বাহাত্তর (১০৭২) বছর। এখানেও তিন সংস্করণের মধ্যে বিশ্রী রকমের বৈপরীত্য রয়েছে, যার মধ্যে সমন্বয় সম্ভব নয়।

এ প্রসঙ্গে গবেষক রবার্ট বয়ড লেখেছেন: “For example, their are contradictions about the ages of the Patriarchs at the birth of their successors when we compare the Masoretic Text, the Samaritan Pentateuch and the Septuagint.  We find that the Masoretic Text offers 720 years as the length of time from Abraham's birth to the Exodus, while the Septuagint and Samaritan Pentateuch give 505 years.  There are may similar examples, all pointing to the obvious fact that different ancient Bibles don't all give the same text.  And even different translations from a common ancient manuscript will differ in many ways. So if the Bible is to be infallible, then we must begin with the question, 'Which Bible?'  And then we must ask, is that really all there is?”

‘‘উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, যখন আমরা হিব্রু বাইবেল, শমরীয় পঞ্চপুস্তক ও গ্রিক সেপ্টুআজিন্টের মধ্যে তুলনা করি তখন পূর্বপুরুষদের উত্তরাধিকারীদের জন্মের সময়ে তাঁদের বয়সের বর্ণনায় পরস্পর বিরোধিতা দেখি। আমরা দেখি যে, হিব্রু পাঠ অনুসারে ইবরাহিমের জন্ম থেকে মিসর থেকে যাত্রা ৭২০ বছর। পক্ষান্তরে শমরীয় ও গ্রিক পাঠে এ সময় ৫০৫ বছর। এরূপ আরো অনেক উদাহরণ আছে। এগুলো সবই সুস্পষ্ট একটা বিষয় নির্দেশ করে, তা হল, বিভিন্ন প্রাচীন বাইবেল একটা নির্ধারিত পাঠ প্রদান করে না। এমনকি একটা সাধারণ প্রাচীন পাঠের বিভিন্ন অনুবাদ বহুবিধ বৈপরীত্য প্রদর্শন করে। কাজেই, বাইবেলকে যদি অভ্রান্ত বলে গণ্য করতে হয় তবে আমাদেরকে একটা প্রশ্ন দিয়ে শুরু করতে হবে: তা হল: সেটা কোন্ বাইবেল? আর তখন আমাদের অবশ্যই প্রশ্ন করতে হবে: সত্যই কি এত প্রকার বাইবেল বিদ্যমান?’’[1]

[1] http://liberalslikechrist.org/about/biblestats.html