অভ্রান্ততা বিরোধী বাইবেল বিশেষজ্ঞরা এ প্রমাণগুলো অগ্রহণযোগ্য বলে গণ্য করেন। তারা বলেন, এ জাতীয় প্রমাণ মূলতই হাস্যকর। তাদের বক্তব্য নিম্নরূপ:
প্রথমত: কোনো গ্রন্থ থেকে কারো উদ্ধৃতিকে সেই গ্রন্থের সকল বিষয় এবং সেই গ্রন্থের সাথে সংকলিত সকল গ্রন্থের শতভাগ বিশুদ্ধতার পক্ষে সাক্ষ্য বলে গ্রহণ করা একান্তই অবান্তর বিষয়।
দ্বিতীয়ত: যীশু ও প্রেরিতগণের নীরবতা বা সাক্ষ্য কোনোটাই প্রমাণিত নয়। যে সকল পুস্তকের মধ্যে এ সকল ‘সাক্ষ্য’, বক্তব্য বা নীরবতা বিদ্যমান সে পুস্তকগুলোর প্রামাণ্যতাই নিশ্চিত নয়। সেগুলোর লেখকের পরিচয় জানা যায় না ও মূল পাণ্ডুলিপি হারিয়ে গিয়েছে। ২য় শতাব্দী থেকেই জালিয়াতি ও বিকৃতির কথা বলেছেন প্রসিদ্ধ খ্রিষ্টান প্রচারক ও ধর্মগুরুরা এবং ৪র্থ শতাব্দী ও তার পরের যে সকল পাণ্ডুলিপি বর্তমানে বিদ্যমান সেগুলোর মধ্যে লক্ষ লক্ষ বৈপরীত্য রয়েছে। এছাড়া ইঞ্জিল, নতুন নিয়ম ও পুরাতন নিয়মের বিভিন্ন তথ্যের মধ্যে শতশত সাংঘর্ষিক বৈপরীত্য রয়েছে, যা প্রমাণ করে যে এ পুস্তকগুলো ঐশী প্রেরণা তো দূরের কথা কোনো বুদ্ধিমান লেখকের লেখা নয়। কাজেই, এ সকল পুস্তকের নীরবতা বা সাক্ষ্য কোনোটাই নির্ভরযোগ্য নয়।
তৃতীয়ত: বর্তমান বাইবেল প্রমাণ করে যে, যীশু অনেক বিষয়েই নীরব থেকেছেন, কিন্তু তাঁর নীরবতা বিষয়টার যথার্থতা প্রমাণ করে না। যেমন, ইহুদি জাতির উপাসনা বেদির স্থান বিষয়ে হিব্রু সংস্করণ থেকে জানা যায় যে, তা এবল পাহাড়ে স্থাপিত হবে এবং শমরীয় সংস্করণ থেকে জানা যায় যে, তা গরিষীম পাহাড়ে স্থাপিত হবে। প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত ইহুদি ও শমরীয়দের মধ্যে এ বিষয়ে বির্তক খুবই প্রসিদ্ধ। প্রত্যেক সম্প্রদায় দাবি করেন যে, অন্য সম্প্রদায় তোরাহ বিকৃত করেছে। যীশুর সময়ে একজন শমরীয় মহিলা যীশুকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করে বলেন: ‘‘হুজুর, আমি দেখছি যে, আপনি এক জন নবী। আমাদের পূর্বপুরুষেরা এই পর্বতে এবাদত করতেন, আর আপনারা (ইহুদিগণ) বলে থাকেন, যে স্থানে এবাদত করা উচিত, সে স্থানটি জেরুশালেমেই আছে।’’ (যোহন ৪/১৯-২০, কি. মো.-১৩)
যীশু শমরীয় মহিলাকে এ বিষয়ে কিছু না বলে অন্যান্য প্রসঙ্গে উপদেশ প্রদান করেন। অনেকেই দাবি করেন যে, যীশুর নীরবতা শমরীয় বাইবেলের বিশুদ্ধতা ও হিব্রু বাইবেলের বিকৃতি প্রমাণ করে। তবে খ্রিষ্টানরা তা মানেননি, বরং তারা হিব্রু বাইবেলের ভাষ্যই সঠিক হিসেবে গ্রহণ করেন (দ্বিতীয় বিবরণ ২৭/৪)।