২. ১৩. ১. লূক ও প্রেরিতদের কার্য-বিবরণ

নতুন নিয়মের ৫ম পুস্তকটার নাম: ‘The Acts of the Apostles’।  কেরি বাইবেলের অনুবাদ: ‘প্রেরিতদের কার্য্য-বিবরণ’, সংক্ষেপ নাম ‘প্রেরিত’। কিতাবুল মোকাদ্দসে শুধু সংক্ষেপ নাম ‘প্রেরিত’। জুবিলী বাইবেলের অনুবাদ: ‘শিষ্যচরিত’।

পাঠক এ পুস্তকটা পাঠ করলে দেখবেন যে, পুস্তকটা বেনামি। পুস্তকের কোথাও লেখকের নাম নেই। তবে নতুন নিয়মের তৃতীয় পুস্তক ‘সাধু লুকের মতানুসারে যীশু খ্রিষ্টের পবিত্র ইঞ্জিল’ এবং পঞ্চম পুস্তক ‘প্রেরিতদের কার্য-বিবরণ’ উভয় পুস্তকের শুরুতেই অজ্ঞাতনামা লেখক ‘থিয়ফিল’ (Theophilus) নামক অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তিকে সম্বোধন করেছেন এবং প্রেরিত পুস্তকের শুরুতে পূর্ববর্তী পুস্তকের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, উভয় পুস্তকের লেখক একই ব্যক্তি। তবে এ ব্যক্তি কে তা কেউই নিশ্চিতভাবে জানেন না। ২য়-৩য় খ্রিষ্টীয় শতক থেকেই খ্রিষ্টান ধর্মগুরুরা বলেছেন যে, পুস্তক দু’টো লূকের লেখা। লূকের ইঞ্জিল প্রসঙ্গে আমরা পুস্তকটার লেখক বিষয়ক বিভিন্ন মত পর্যালোচনা করেছি।

লূক নামক এ ব্যক্তির জীবন সম্পর্কে কিছুই জানা যায় না। সুনিশ্চিতভাবেই তিনি যীশুর শিষ্য ছিলেন না এবং ফিলিস্তিনের বাসিন্দাও ছিলেন না। এনকার্টা এবং উইকিপিডিয়ার সাধু লূক ও ইঞ্জিলীয় লূক (Saint Luke/ Luke the Evangelist) প্রবন্ধ থেকে জানা যায় যে, সম্ভবত তিনি বর্তমান তুরস্কের এন্টিয়ক (Antioch) অথবা লিবিয়ার সিরেনাইকা (Cyrenaica)-র বাসিন্দা ছিলেন। তিনি পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। তিনি সাধু পলের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন এবং পলের নিহত হওয়া পর্যন্ত তাঁরই সাথে ছিলেন। তিনি অবিবাহিত বা চিরকুমার ছিলেন।

প্রেরিত পুস্তকটার রচনাকাল সম্পর্কে উইকিপিডিয়া ‘Dating the Bible’ বা ‘বাইবেলের রচনাকাল’ প্রবন্ধে লেখেছে: “If Acts uses Josephus as a source, as has been proposed, then it must have been composed after 93 CE; it does not show any knowledge of Paul's letters, which also supports a late date; and the social situation is one in which the faithful need "shepherds" to protect them from heretical "wolves", which again reflects a late date.”

‘‘গবেষকরা বলেন যে, প্রেরিত পুস্তকটা যোসেফাসকে তথ্যসূত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। এ মত অনুসারে নিশ্চিতভাবেই প্রেরিত পুস্তকটা ৯৩ খ্রিষ্টাব্দের পরে লেখা। প্রেরিত পুস্তক থেকে দেখা যায় যে, সাধু পলের পত্রাবলি সম্পর্কে এটা মোটেও অবহিত নয়। এ বিষয়টাও সমর্থন করে যে, পুস্তকটা আরো পরে লেখা। এছাড়া এ পুস্তকটা যে সামাজিক চিত্র তুলে ধরেছে তাতে দেখা যায় যে, বিদআতী-বিভ্রান্ত নেকড়েদের হাত থেকে বিশ্বাসীদের সংরক্ষণের জন্য রাখালদের প্রয়োজন। এ চিত্রটা থেকেও প্রতীয়মান হয় যে, পুস্তকটা আরো পরবর্তী সময়ে লেখা।’’

প্রেরিত পুস্তকটার বর্তমানে বিদ্যমান প্রাচীনতম পাণ্ডুলিপির খণ্ডতে টুকরোটা (earliest known fragment) ২৫০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে লেখা। (উইকিপিডিয়া, Dating the Bible)