ইতোপূর্বে উদ্ধৃত উইকিপিডিয়ার বক্তব্য থেকে আমরা জেনেছি যে, নতুন নিয়মের চতুর্থ পুস্তক ‘সাধু যোহনের মতানুসারে ঈসা মাসীহের পবিত্র ইঞ্জিল’ (The Holy Gospel of Jesus Christ According to St. John/ The Gospel According To St. John) পুস্তকটাও একটা বেনামি পুস্তক। তবে এ পুস্তকের শেষে কয়েকটা বাক্য থেকে খ্রিষ্টান ধর্মগুরুরা মনে করেছেন যে পুস্তকটা যীশুর প্রিয় একজন শিষ্যের লেখা। প্রচলিত ধারণা যে, ‘যোহন’ই এ ছাত্র, যদিও পুস্তকটার মধ্যে তার নাম উল্লেখ করা হয়নি। আমরা উইকিপিডিয়ার বক্তব্য থেকে জেনেছি যে, বর্তমানে অধিকাংশ গবেষক এ বক্তব্যগুলোকে পরবর্তী সংযোজন বলে গণ্য করেন।
এ প্রসঙ্গে এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার নিম্নের বক্তব্য প্রনিধানযোগ্য:
Because both external and internal evidence are doubtful, a working hypothesis is that John and the Johannine letters were written and edited somewhere in the East (perhaps Ephesus) as the product of a “school,” or Johannine circle, at the end of the 1st century. The addressees were Gentile Christians, .... The Jews are equated with the opponents of Jesus, and the separation of church and synagogue is complete, also pointing to a late-1st-century dating. The author of John knows part of the tradition behind the Synoptic Gospels, but it is unlikely that he knew them as literary sources.
‘‘বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয় প্রমাণই সন্দেহজনক। এজন্য একটা কার্যকর মত এই যে, যোহনের সুসমাচার এবং যোহনের পত্রাবলি লিখিত ও সম্পাদিত হয়েছিল পূর্বাঞ্চলের কোথাও (সম্ভবত এফিসাসে)। যোহনীয় সম্প্রদায় বা বিশেষ ধর্মীয় মতবাদের অনুসারীরা প্রথম শতাব্দীর শেষ প্রান্তে এগুলো রচনা করেন। এগুলো রচনা করা হয় ‘অ-ইহুদি’ খ্রিষ্টানদের উদ্দেশ্যে। ... ইহুদিদেরকে যীশুর শত্রুদের মধ্যে গণ্য করা হয়েছে। ইহুদি সিনাগগ থেকে খ্রিষ্টান চার্চ পৃথকীকরণ পূর্ণতা পেয়েছে। এগুলো সবই নিশ্চিত করে যে, এ পুস্তকটা প্রথম শতকের শেষপ্রান্তে লেখা। সমমতীয় (প্রথম তিন) সুসমাচার যে সকল তথ্যের ভিত্তিতে লেখা সেগুলোর আংশিক কিছু বিষয় সম্পর্কে যোহনের সুসমাচারের লেখক অবগত ছিলেন। তবে তিনি লিখিত তথ্যসূত্র হিসেবে এগুলোর বিষয়ে কিছু জানতেন বলে মনে হয় না।’’[1]
মাইক্রোসফট এনকার্টা বিশ্বকোষ এ প্রসঙ্গে লেখেছে:
“Since the 19th century the authorship of the Gospel of John has generated heated controversy. Conservative scholars today generally accept John the Evangelist as the author, but most scholars, who are not prepared to defend the view that the author was an apostle and an eyewitness to the events recorded in the book, have proposed several different hypotheses. Chief among these hypotheses are that the fourth canonical Gospel was written by “the elder” mentioned in the Second and Third Epistles of John...; that it was composed by a disciple of John the Evangelist .. ; that it may have been written by a friend of Jesus Christ, Lazarus of Bethany; or that it was written by an anonymous Christian in Alexandria in the first half of the 2nd century. Most moderate scholars now date John from sometime in the last decade of the 1st century or early in the 2nd century.”
‘‘যোহনের সুসমাচারের লেখক নিয়ে ঊনবিংশ শতক থেকে উত্তপ্ত বিতর্ক শুরু হয়েছে। গোঁড়া গবেষকরা এখনো সাধারণভাবে ইঞ্জিলীয় যোহনকে এ পুস্তকের লেখক হিসেবে মেনে নেন। তবে অধিকাংশ গবেষক তা মানতে রাজি নন। এ পুস্তকের লেখক যীশুর কোনো শিষ্য ছিলেন এবং তিনি যে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন সেগুলো তিনি স্বচক্ষে দেখেছেন বলে মেনে নিতে তারা প্রস্তুত নন। তারা এ বিষয়ে বিভিন্ন মত পেশ করেন। এ সকল মতের অন্যতম এই যে, যোহনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পত্রে যে ‘মুরবিব’-র কথা উল্লেখ করা হয়েছে সে ব্যক্তিই এ চতুর্থ সুসমাচারের লেখক। অথবা যোহনের কোনো শিষ্য এটা লেখেছেন .... অথবা ‘বেথানির লাযারাস’ নামক যীশুর এক বন্ধু এটা লেখেছেন .... অথবা ২য় শতাব্দীর প্রথমার্ধে (১০১-১৫০ খ্রি.) একজন অজ্ঞাত পরিচয় আলেকজান্দ্রীয় খ্রিষ্টান এটা লেখেছেন। অধিকাংশ উদার গবেষকের মতে এ পুস্তকটা প্রথম শতকের শেষ দশক থেকে দ্বিতীয় শতকের প্রথম দিকে কোনো সময়ে লিখিত।’’[2]
এ প্রসঙ্গে উইকিপিডিয়া Authorship of the Bible প্রবন্ধে লেখেছে:
“John 21:24 identifies the author of the Gospel of John as ‘the beloved disciple,’ and from the late 2nd century this figure, unnamed in the Gospel itself, was identified with John the son of Zebedee. Today, however, most scholars agree that John 21 is an appendix to the Gospel, which originally ended at John 20:30–31. The majority of scholars date the Gospel of John to c. 80–95.”
‘‘যোহনের ২১ অধ্যায়ের ২৪ শ্লোকে এ সুসমাচারটার লেখক সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তিনি যীশুর প্রিয়ভাজন একজন শিষ্য। যদিও সুসমাচারের মধ্যে শিষ্যটার নাম উল্লেখ করা হয়নি, তবে দ্বিতীয় শতাব্দীর শেষ প্রান্ত থেকে মনে করা হয় যে, সিবিদিয়র পুত্র যোহনই এ শিষ্য। কিন্তু অধিকাংশ গবেষক একমত যে, যোহন লিখিত সুসমাচারের ২১ অধ্যায় মূল সুসমাচারের সাথে পরবর্তীতে সংযোজিত। মূলত সুসমাচারটা যোহনের ২০ অধ্যায়ের ৩০-৩১ শ্লোকেই শেষ হয়েছে। অধিকাংশ গবেষক মনে করেন যে, এ পুস্তকটা ৮০ থেকে ৯৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে রচিত।’’[3]
উইকিপিডিয়া Gospel of John প্রবন্ধে লেখেছে:
“The Gospel of John was written in Greek by an anonymous author. ... The gospel identifies its author as "the disciple whom Jesus loved." Although the text does not name this disciple, by the beginning of the 2nd century, a tradition had begun to form which identified him with John the Apostle, one of the Twelve .... Although some notable New Testament scholars affirm traditional Johannine scholarship, the majority do not believe that John or one of the Apostles wrote it, and trace it instead to a "Johannine community" which traced its traditions to John; the gospel itself shows signs of having been composed in three "layers", reaching its final form about 90–100 AD.”
‘‘যোহনের ইঞ্জিলটা একজন নাম-পরিচয়হীন লেখক কর্তৃক গ্রিক ভাষায় রচিত। ... ইঞ্জিলটাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, লেখক ‘যীশুর প্রিয়ভাজন একজন শিষ্য।’ যদিও ইঞ্জিলের বক্তব্যে শিষ্যটার নাম উল্লেখ করা হয়নি, তবে ২য় শতাব্দীর শুরু থেকেই এ শিষ্যকে যীশুর দ্বাদশ প্রেরিত শিষ্যের একজন যোহন হিসেবে শনাক্ত করার একটা মত প্রচলিত হয়। যদিও কতিপয় উল্লেখযোগ্য নতুন নিয়ম বিশেষজ্ঞ যোহনের বিদ্যাবত্তা স্বীকার করেন, তবে অধিকাংশ গবেষক বিশ্বাস করেন না যে, যোহন বা অন্য কোনো প্রেরিত শিষ্য পুস্তকটা লেখেছেন। বরং তারা একে এক ‘যোহনীয় সম্প্রদায়ের’ রচিত বলে গণ্য করেন। এ সম্প্রদায় নিজেদের মত ও ঐতিহ্যকে যোহনের প্রতি সম্পৃক্ত করতেন। এ সুসমাচারটার মধ্যেই প্রমাণ রয়েছে যে, এটা তিনটা পৃথক পর্যায়ে সংকলিত হওয়ার পরে চূড়ান্ত রূপ পেয়েছে ৯০ থেকে ১০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে।’’[4]
[2] "Gospel According to John." Microsoft® Student 2008 [DVD]. Redmond, WA: Microsoft Corporation, 2007.
[3] উইকিপিডিয়া: Authorship of the Bible/John
[4] উইকিপিডিয়া: Gospel of John/ Authorship.