অনুবাদক যত আন্তরিক, সৎ ও ভাষাবিদই হোন না কেন, মূল বক্তব্য আর অনুবাদ কখনোই এক হতে পারে না। শ্রোতার বুঝের ভুল বা অনুবাদকের ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ভুলের কথা বাদ দিলেও মূল বক্তব্যের শব্দাবলি ও বাক্য একাধিক অর্থ ও ভাব প্রকাশ করতে পারে। অনুবাদক শুধু একটা অর্থ সঠিক মনে করে অনুবাদ করেন। মূল বক্তব্য হুবহু সংরক্ষিত হলে তা থেকে শ্রোতা বা সংকলক যা বুঝেছেন, পাঠক বা পরবর্তী গবেষক অন্য অর্থ বুঝতে পারেন। আর এজন্যই মুসলিম উম্মাহ কুরআনের ক্ষেত্রে মূল পাঠ বাদ দিয়ে শুধু অনুবাদ প্রকাশ করা অবৈধ মনে করেন। মুল আরবি পাঠের পাশাপাশি অনুবাদ থাকলে যে কোনো আগ্রহী পাঠক যে কোনো আয়াতের অর্থ মূলের সাথে মিলিয়ে দেখতে পারেন বা ভিন্ন অর্থ ও নির্দেশনা বুঝতে পারেন। কুরআনের অনেক আয়াতের ক্ষেত্রে মুসলিম উম্মাহর মুফাস্সিরগণ নির্দিষ্ট অর্থ করেন। তা সত্ত্বেও প্রাচ্যবিদগণ বা খ্রিষ্টান পাদরিগণ আরবি শব্দের একটা নির্দিষ্ট অর্থ গ্রহণ করে এ সকল আয়াতের ভিন্ন অর্থ দাবি করে থাকেন। মূল পাঠ সংরক্ষিত থাকার ফলেই তা সম্ভব হয়। ইঞ্জিলগুলোর মূল হিব্রু বা আরামীয় পাঠ বিলুপ্ত হওয়ার কারণে বর্তমান প্রচলিত পুস্তকগুলোকে ‘অনুবাদ’ ধরলেও কখনোই মূলের স্থলাভিষিক্ত বলে গণ্য করা যায় না।