পবিত্র বাইবেলে অধিকাংশ স্থানে একমাত্র ঈশ্বরকে ‘ওয়র্শিপ’ করতে বলা হয়েছে। অন্য কোনো দেবতা, প্রতিমা বা বস্ত্তকে ‘ওয়র্শিপ’ করতে নিষেধ করা হয়েছে। (যাত্রাপুস্তক ২০/৫; ৩৪/১৪; দ্বিতীয় বিবরণ ৫/৯; ৩০/১৭; ২ রাজাবলি ১৭/৩৬; মথি ৪/১০...) কিন্তু এর বিপরীতে বাইবেলে অনেক স্থানে নবীরা বা বশ্বাসীরা ঈশ্বর ছাড়া অন্য ব্যক্তিকে ওয়র্শিপ (worship) এবং বাউ ডাউন (bow down/ fell on his face) করেছেন। আমরা দেখেছি যে, বাইবেলীয় পরিভাষায় ওয়র্শিপ অর্থ সাজদা বা ইবাদত করা এবং বাউ ডাউন, উপুড় হওয়া বা মুখের উপর পড়ার অর্থও সাজদা করা। অর্থাৎ তাঁরা ঈশ্বর ছাড়া অন্যদের সাজদা করতেন। এছাড়া তাঁরা অন্যদের সাজদা ও ইবাদত গ্রহণ করেছেন। উপুড় হওয়া এবং মুখের উপর পড়ে যাওয়ার কথা- অর্থাৎ সাজদা করার কথা তো অনেক স্থানেই বিদ্যমান। এছাড়া ঈশ্বর ছাড়া অন্যকে ‘ওয়র্শিপ’ অর্থাৎ ইবাদত করার কথাও বিভিন্ন স্থানে বলা হয়েছে। ইংরেজি বাইবেলে এ সকল বিষয় খুবই সুস্পষ্ট। উইলিয়াম কেরির অনুবাদ অনেকটাই মূলাশ্রয়ী। সকল ক্ষেত্রেই ওয়র্শিপ শব্দটার অর্থ লেখা হয়েছে ‘প্রণিপাত করা’, অর্থাৎ সাজদা করা। কিন্তু ‘কিতাবুল মোকাদ্দস’ নামক বাংলা বাইবেলে এক্ষেত্রে অনেক হেরফের করা হয়েছে। একই শব্দ কখনো পূজা, কখনো সালাম, কখনো ‘সেজদা’ ইত্যাদি রকমারি অনুবাদ করা হয়েছে। এতে ইহুদি ও খ্রিষ্টান নবীরা ও ধার্মিকরা যে আল্লাহ ছাড়া অন্যদের সাজদা করতেন তা পাঠক জানতে পারছেন না। বরং তারা জানছেন যে, তারা আল্লাহর সাজদা বা পূজা করতেন আর ফেরেশতা, নবী ও অন্যদেরকে ‘উবুড় হয়ে’ সালাম করতেন বা সম্মান দেখাতেন। অন্য সকল ফেরেশতা, নবী, বাদশাহ ও ধার্মিকের মতই যীশু খ্রিষ্টকেও সে যুগের ধার্মিক বা ভক্তরা এভাবে ‘সাজদা’ করে ‘সম্মান’ করতেন। কিন্তু কিতাবুল মোকাদ্দসে নবী, বাদশাহ, ধার্মিক বা ফেরেশতাদের ক্ষেত্রে ‘ওয়র্শিপ’, ‘বাউ ডাউন’ বা ‘ফেল অন হিজ ফেস’ বলতে সালাম, সম্মান প্রদর্শন বা কদমবুছি শব্দ ব্যবহার করছেন। পক্ষান্তরে যীশু খ্রিষ্টের ক্ষেত্রে একই শব্দের অনুবাদে ‘সেজদা’ শব্দ ব্যবহার করছেন। বাহ্যত এ দ্বারা তারা বুঝাচ্ছেন যে, যীশুকেও ঈশ্বরের মত ইবাদত করা হত এবং যীশু তা গ্রহণ করতেন। এখানে সামান্য কয়েকটা নমুনা উল্লেখ করছি: