মূসা (আ.) বা মোশি থেকে ঈসা (আ.) বা যীশু পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার বছর যে ধর্মগ্রন্থটা প্রচলিত ছিল তার নিশ্চয় একটা নাম ছিল। কী নাম ছিল তার? বাইবেল থেকে জানা যায় যে, যীশু ও তাঁর শিষ্যরা ‘বাইবেল’ বা ‘কিতাবুল মোকাদ্দস’ নাম জানতেন না। ‘বাইবেল’ নামক গ্রন্থটা বুঝাতে তাঁরা নিম্নের পরিভাষা ব্যবহার করতেন:
(১) the scripture/scriptures। এ শব্দটার মূল অর্থ: লিখিত বিষয় (what is written) বা লিখিত পুস্তক। ব্যবহারিকভাবে এর অর্থ ধর্মগ্রন্থ বা লিখিত শাস্ত্র।[1]
(২) The Law and the Prophets। অর্থাৎ ‘তৌরাত ও নবীগণ’। কেরির অনুবাদে ‘ব্যবস্থা ও ভাববাদীগণ’। (দেখুন: মথি ৫/১৭; ৭/১২; ১১/১৩; ২২/৪০; লূক ১৬/১৬; ২৪/৪৪; যোহন ১/৪৫; প্রেরিত ১৩/১৫; ২৪/১৪; ২৮/২৩; রোমীয় ৩/২১)
(৩) the law of Moses, and in the prophets, and in the psalms। ‘মূসার তৌরাত এবং নবীগণ ও গীতসংহিতা অথবা দাউদের গীতসংহিতা। (দেখুন: লূক ২৪/৪৪। আরো দেখুন: লূক ২০/৪২; প্রেরিত ১/২০)
পরবর্তীতে আমরা দেখব যে, ইহুদি বাইবেল তিন অংশে বিভক্ত: (১) তৌরাত (The Law), (২) নাবিয়্যীম: নবীগণের পুস্তক (the Prophets) এবং (৩) কিতুবীম: লিখনিসমূহ (the Writings)। গীতসংহিতা পুস্তকটা তৃতীয় অংশের মধ্যে বিদ্যমান। ‘তৌরাত-এর ‘তা’, ‘নাবিয়্যীম’-এর ‘না’ ও ‘কিতুবীম’-এর ‘ক’ নিয়ে একত্রে বাইবেলের পুরাতন নিয়মের ইহুদি সংস্করণকে ইহুদিরা ‘তানাক’ বলেন।
এভাবে আমরা দেখছি যে, প্রথম খ্রিষ্টীয় শতকে বাইবেল নামক ধর্মগ্রন্থের কোনো একক নাম ছিল না। এ গ্রন্থসমষ্টিকে একত্রে ‘ধর্মগ্রন্থ’ বলা হত। অথবা এ গ্রন্থের দুটো অংশকে পৃথকভাবে নাম উল্লেখ করে বলা হত: ‘তৌরাত ও নবীগণ’। ইহুদি বাইবেল বা পুরাতন নিয়মের তৃতীয় অংশ ‘কিতুবীম’-এর মধ্য থেকে গীতসংহিতা পুস্তকটা সে সময়ে প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল। বাহ্যত ‘কিতুবীম’ নামক এ অংশটা তখনও পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি এবং ‘ধর্মগ্রন্থ’-এর অংশ হিসেবে গণ্য হয়নি।