কোথাও কোথাও মানবীয় যুক্তিতেই তাদের দাবির অসারতা ফুটিয়ে তুলা হয়েছে। মুশরিকগণও স্বীকার করে এবং করত যে, যাদের তারা ডাকে তারা আল্লাহর বান্দা ও আল্লাহর মালিকানাধীন, তবে আল্লাহ তাদের ভালবাসেন, ফলে তারা আল্লাহর মাহবূব, প্রিয় বা ওলী। কাজেই মহান আল্লাহ তাঁর অলৌকিক বিশ্বপরিচালনা শক্তি তাদেরকে দান করেছেন।
মহান আল্লাহ জানিয়েছেন, তাদের এ চিন্তাটিই মূলত অসার, অলীক ও অযৌক্তিক। আল্লাহর প্রিয়গণ বা মাহবূবগণ তার চাকর। একজন মানুষ বন্ধুর সাথে অন্য মানুষ বন্ধুর যে সম্পর্ক এখানে সেরূপ সম্পর্ক নয়। বরং একজন ভাল চাকরের সাথে একজন মালিকের যে সম্পর্ক এখানে সেরূপ সম্পর্ক। মালিক চাকরকে ভালবাসতে পারে, কিন্তু নিজের সম্পদের মালিকানা বা অধিকার দিবে কেন?
وَاللَّهُ فَضَّلَ بَعْضَكُمْ عَلَى بَعْضٍ فِي الرِّزْقِ فَمَا الَّذِينَ فُضِّلُوا بِرَادِّي رِزْقِهِمْ عَلَى مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَهُمْ فِيهِ سَوَاءٌ أَفَبِنِعْمَةِ اللَّهِ يَجْحَدُونَ
‘‘আল্লাহ রিযকের ক্ষেত্রে তোমাদের কাউকে কারো উপরে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। যাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দেওয়া হয়েছে তারা তাদের অধীনস্থ দাস-দাসীদেরকে নিজেদের রিয্ক বণ্টন করে দেয় না যে তারা তাতে সমান হয়ে যাবে। তবে কি তারা আল্লাহর অনুগ্রহ অস্বীকার করে?’’[1]
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন:
ضَرَبَ لَكُمْ مَثَلا مِنْ أَنْفُسِكُمْ هَلْ لَكُمْ مِنْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ مِنْ شُرَكَاءَ فِي مَا رَزَقْنَاكُمْ فَأَنْتُمْ فِيهِ سَوَاءٌ تَخَافُونَهُمْ كَخِيفَتِكُمْ أَنْفُسَكُمْ كَذَلِكَ نُفَصِّلُ الآَيَاتِ لِقَوْمٍ يَعْقِلُونَ
‘‘আল্লাহ তোমাদের জন্য তোমাদের নিজেদের মধ্য থেকে একটি দৃষ্টান্ত প্রদান করছেন: তোমাদের আমি যে রিয্ক দিয়েছি তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের কেউ কি তাতে অংশীদার? ফলে তোমরা কি এ ব্যাপারে সমান? তোমরা কি তাদেরকে সেরূপ ভয় কর যেরূপ তোমরা নিজেদেরকে ভয় কর? এভাবেই আমি বোধশক্তিসম্পন্ন সম্প্রদায়ের নিকট নিদর্শনাবলি বিবৃত করি।’’[2]
মানুষ নিজেই যখন নিজের কোনো ক্রীতদাসকে নিজের সম্পত্তির বা ক্ষমতার শরীক করে না, তখন কেন আল্লাহ সর্বশক্তিমান তার কোনো সৃষ্ট দাসকে তার শরীক বানাবেন? যাদেরকে আল্লাহর বদলে ডাকা হয় তাদের ক্ষমতা ও অধিকার যদি আল্লাহর ইচ্ছাধীনই হয় তবে আর আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদের ডাকার দরকার কি?
[2] সূরা (৩০) রূম: ২৮ আয়াত।