ইতোপূর্বে আমরা দেখেছি যে, যুগে যুগে মুশরিকগণ মূলত ইবাদতের শিরকেরই বেশি লিপ্ত হয়েছে। বিভিন্ন ধারণার বশবর্তী হয়ে তারা মহান আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করেছে। বস্ত্তত মানুষের মুর্খতা ও মানবীয় দুর্বলতা তাকে প্ররোচিত করে বিপদে আপদে ‘মূর্ত’, ‘দৃশ্যমান’ বা হাতের নাগালে পাওয়া কারো কাছে নিজের অসহায়ত্ব পেশ করে বিপদ থেকে উদ্ধারের আবেদন করা। মানুষ বিপদে-আপদে, দুঃখে-কষ্টে মহান আল্লাহর কাছে নিজের বিপদের কথা বলে আকুতি জানায়। কিন্তু অনেক সময় মানুষের দুর্বলতা ও অস্থিরচিত্ততা এভাবে অদৃশ্য প্রতিপালককে ডেকে তৃপ্ত হয় না। কি জানি তিনি শুনলেন তো! আমার সমস্যাটা দূর হবে তো! শয়তান এরূপ অস্থিরচিত্ততা ও দুর্বলতার সুযোগে মানুষকে প্ররেচিত করে মহান আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত ‘দৃশ্যমান’, বা ‘হাতের নাগালে পাওয়া যায়’ এমন কোনো ব্যক্তি বা বস্ত্তর কাছে নিজের চূড়ান্ত ভক্তি ও অসহায়ত্ব প্রকাশ করতে। বান্দা ভাবে এতে হয়ত দ্রুত তার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে সে তার এরূপ কর্মকে বৈধ বলে প্রমাণ করতে চায়।
এরূপ ব্যক্তি কখনোই এ সকল ব্যক্তি বা বস্ত্তকে স্রষ্টা, প্রতিপালক বা ঈশ্বর বলে বিশ্বাস করে না, বরং মহান স্রষ্টার সাথে সম্পর্কিত হওয়ার কারণেই এ সকল ব্যক্তি বা বস্ত্তর কাছে ভক্তির অর্ঘ্য, বিনয় ও অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন। এভাবেই ইবাদতের শিরক যুগে যুগে বিভিন্ন আসমানী ধর্মের অনুসারী এবং অন্যান্যদের মধ্যে প্রসার লাভ করেছে।
আমরা ইতোপূর্বে ইবাদতের সংজ্ঞা এবং প্রকৃতি জেনেছি। কুরআন ও হাদীসে বিভিন্ন ইবাদতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যেগুলি মুশরিকগণ আল্লাহ ছাড়া অন্যদের জন্য পালন করত। কুরআন ও হাদীসে এগুলি একমাত্র মহান আল্লাহর জন্য পালন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা এখানে এ সকল ইবাদতের বিষয়ে আলোচনা করব, ইনশা আল্লাহ।