কুরআন ও হাদীসে বারংবার উল্লেখ করা হয়েছে যে, গাইবের বা অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কারো নেই। মহান আল্লাহ ছাড়া কারো ভবিষ্যতের জ্ঞান বা গাইবী জ্ঞান আছে বলে বিশ্বাস করলে মহান আল্লাহর ইলমের বিশেষণে অন্যকে শরীক করা হয়। এজন্য ইসলামে গণক, ঠাকুর, জ্যোতিষী, রাশিবিদ, হস্তরেখাবিদ বা অনুরূপ যে কোনো প্রকারের গোপন জ্ঞানের দাবিদার বা ভবিষ্যতের জ্ঞানের দাবিদারের নিকট গমন করতে কঠিন ভাবে নিষেধ করা হয়েছে। এরূপ ব্যক্তির কথাকে সত্য বলে মনে করলে তা শিরক হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। উপরের হাদীসে আমরা তা দেখেছি। অন্য হাদীসে আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন:
مَنْ أَتَى كَاهِنًا أَوْ عَرَّافًا فَصَدَّقَهُ بِمَا يَقُولُ فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ (ﷺ)
‘‘যদি কেউ কোনো গণক বা ভবিষ্যদ্বক্তার নিকট গমন করে তার কথা বিশ্বাস করে তবে সে মুহাম্মাদের (ﷺ) উপর অবতীর্ণ দীনের প্রতি কুফরী করল।’’[1]
অন্য হাদীসে সাফিয়্যাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন:
مَنْ أَتَى عَرَّافًا فَسَأَلَهُ عَنْ شَيْءٍ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلاةٌ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً
‘‘যদি কেউ কোনো গণক, গাইবী বিষয়ের সংবাদদাতা বা ভবিষ্যদ্বক্তার নিকট গমন করে তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করে তবে ৪০ দিবস পর্যন্ত তার সালাত কবুল করা হবে না।’’[2]
যদি কেউ এরূপ জ্যোতিষী, গণক, রাশিবিদ, ফকীর ইত্যাদি গোপন জ্ঞানের দাবিদারকে সত্যই ‘গাইবী’ বা গোপন জ্ঞানের অধিকারী বলে বিশ্বাস করে তবে তা শিরক আকবার বলে গণ্য। আর যদি বিশ্বাস করে যে, গোপন বা গাইবী জ্ঞান ও ভাগ্য বা ভবিষ্যতের জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর জন্য, অন্য কেউ তা জানে না বা জানতে পারে না, কিন্তু কৌতুহল বশত প্রশ্ন করে তবে তা কঠিন পাপ ও শিরক আসগর।
এখানে উল্লেখ্য যে, ‘ইলম দ্বারা চোর ধরা’ বা অনুরূপভাবে কুরআন, বা দু‘আর মাধ্যমে গাইবের কথা জানার চেষ্টা করাও ‘কাহানাত’ বলে গণ্য। কারো কিছু চুরি হলে তিনি চুরিকৃত দ্রব্য ফেরত পাওয়ার জন্য দু‘আ-তদবীর করতে পারেন। কিন্ত কে চুরি করেছে বা চুরি কৃত দ্রব্য কোথায় আছে তা জানার জন্য জাগতিক উপকরণ ছাড়া ‘গাইব’ জানার চেষ্টা করার কোনো সুযোগ নেই।
[2] মুসলিম, আস-সহীহ ৪/১৭৫১।