কোনো প্রকার কুফ্রে সন্তুষ্ট থাকা কুফর। অনুরূপভাবে ইসলামের প্রতি অসন্তুষ্ট থাকাও কুফর। এ প্রকারের কুফরের মধ্যে রয়েছে:
(ক) আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অপছন্দ করা বা আল্লাহর যিক্র, কুরআন, ইসলাম বা ইসলামের বিধান বলে সুনিশ্চিতভাবে প্রমাণিত কোনো কিছু প্রতি বিরক্তি বা ঘৃণা পোষণ করা, ইসলামের কোনো নির্দেশ বা শিক্ষা অচল, সেকেলে বা অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করা। মহান আল্লাহ বলেন:
وَالَّذِينَ كَفَرُوا فَتَعْسًا لَهُمْ وَأَضَلَّ أَعْمَالَهُمْ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُوا مَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ
‘‘যারা কুফরী করেছে তাদের জন্য রয়েছে দুর্ভোগ এবং তিনি তাদের কর্ম ব্যর্থ করে দিবেন। তা এজন্য যে, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তারা তা অপছন্দ করে। সুতরাং আল্লাহ তাদের কর্ম নিষ্ফল করে দিবেন।’’[1]
(খ) ইসলামের কোনো প্রমাণিত বিষয় নিয়ে হাসি-তামাশা, মস্করা বা উপহাস করা অথবা যার এরূপ করে তাদের সাথে অবস্থান করা বা তাদের সাথে আন্তরিক সম্পর্ক রাখা। মহান আল্লাহ বলেন:
وَإِذَا رَأَيْتَ الَّذِينَ يَخُوضُونَ فِي آَيَاتِنَا فَأَعْرِضْ عَنْهُمْ حَتَّى يَخُوضُوا فِي حَدِيثٍ غَيْرِهِ وَإِمَّا يُنْسِيَنَّكَ الشَّيْطَانُ فَلا تَقْعُدْ بَعْدَ الذِّكْرَى مَعَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ
‘‘তুমি যখন দেখ, তারা আমার আয়াত সম্বন্ধে উপহাসমূলক আলোচনায় মগ্ন হয় তখন তুমি দূরে সরে পড়বে, যে পর্যন্ত না তারা অন্য প্রসংগে প্রবৃত্ত হয়। এবং শয়তান যদি তোমাকে ভ্রমে ফেলে তবে স্মরণ হওয়ার পরে জালিম সম্প্রদায়ের সাথে বসবে না।’’[2]
(খ) মুশরিক, নাস্তিক, মুরতাদ বা ধর্মত্যাগীদের, যারা সুস্পষ্টভাবে ঈমানের কোনো রূকন বা কুরআন-হাদীসের কোনো সুস্পষ্ট বিষয় অস্বীকার করেছে, আপত্তিকর বলে বিশ্বাস করেছে বা উপহাস করেছে, যাদের কুফর সন্দেহাতীতভাবে কুরআন ও হাদীসের আলোকে প্রমাণিত এবং যাদের কুফর-এর বিষয়ে মুসলিম উম্মাহর সকল আলিম একমত পোষণ করেছেন তাদেরকে কাফির বলতে অস্বীকার করা, কাফির বলে গণ্য না করা, তাদেরকে কাফির বলতে সন্দেহ বা দ্বিধা করা। অথবা এরূপ কাফিরগণকে আন্তরিক বন্ধু, সহযোগী ও অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করা। তবে তাদের সাথে সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক রাখা ও মানবীয় সহযোগিতা নিষিদ্ধ নয়।
কুরআনে এ বিষয়ে বারংবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন:
لا يَتَّخِذِ الْمُؤْمِنُونَ الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاءَ مِنْ دُونِ الْمُؤْمِنِينَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ فَلَيْسَ مِنَ اللَّهِ فِي شَيْءٍ إِلا أَنْ تَتَّقُوا مِنْهُمْ تُقَاةً
‘‘মুমিনগণ যেন মুমিনগণ ব্যতীত কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যে কেউ এরূপ করবে তার সাথে আল্লাহর কোনো সম্পর্ক থাকবে না। তবে ব্যতিক্রম, যদি তোমরা তাদের নিকট হতে আত্মরক্ষার জন্য সতর্কতা অবলম্বন কর।’’[3]
অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا لا تَتَّخِذُوا الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاءَ مِنْ دُونِ الْمُؤْمِنِينَ أَتُرِيدُونَ أَنْ تَجْعَلُوا لِلَّهِ عَلَيْكُمْ سُلْطَانًا مُبِينًا
‘‘হে মুমিনগণ, মুমিনগণের পরিবর্তে কাফিরগণকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা কি আল্লাহকে তোমাদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট প্রমাণ দিতে চাও?’’[4]
অন্যত্র তিনি বলেন:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا لا تَتَّخِذُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى أَوْلِيَاءَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ إِنَّ اللَّهَ لا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ
‘‘হে মুমিনগণ, ইয়াহূদী ও খৃস্টানদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেউ তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে সে তাদেরই একজন হয়ে যাবে। আল্লাহ জালিম সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।’’[5]
তিনি আরো বলেন:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا لا تَتَّخِذُوا الَّذِينَ اتَّخَذُوا دِينَكُمْ هُزُوًا وَلَعِبًا مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِنْ قَبْلِكُمْ وَالْكُفَّارَ أَوْلِيَاءَ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ
‘‘হে মুমিনগণ, তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছে যারা তোমাদের দীনকে হাসি-তামাশা ও ক্রীড়ার বস্ত্তরূপে গ্রহণ করে তাদেরকে এবং কাফিরদেরকে তোমারা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না এবং তোমরা যদি মুমিন হও তবে আল্লাহকে ভয় কর।’’[6]
তিনি আরো বলেন:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا لا تَتَّخِذُوا آَبَاءَكُمْ وَإِخْوَانَكُمْ أَوْلِيَاءَ إِنِ اسْتَحَبُّوا الْكُفْرَ عَلَى الإِيمَانِ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ
‘‘হে মুমিনগণ, তোমাদের পিতাগণ ও ভ্রাতাগণ যদি ঈমান অপেক্ষা কুফ্রীকে শ্রেয় জ্ঞান করে, তবে তাদেরকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না। তোমাদের মধ্যে যারা তাদেরকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করে তারাই জালিম।’’[7]
অন্যত্র ইরশাদ করা হয়েছে:
بَشِّرِ الْمُنَافِقِينَ بِأَنَّ لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا الَّذِينَ يَتَّخِذُونَ الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاءَ مِنْ دُونِ الْمُؤْمِنِينَ أَيَبْتَغُونَ عِنْدَهُمُ الْعِزَّةَ فَإِنَّ الْعِزَّةَ لِلَّهِ جَمِيعًا وَقَدْ نَزَّلَ عَلَيْكُمْ فِي الْكِتَابِ أَنْ إِذَا سَمِعْتُمْ آَيَاتِ اللَّهِ يُكْفَرُ بِهَا وَيُسْتَهْزَأُ بِهَا فَلا تَقْعُدُوا مَعَهُمْ حَتَّى يَخُوضُوا فِي حَدِيثٍ غَيْرِهِ إِنَّكُمْ إِذًا مِثْلُهُمْ إِنَّ اللَّهَ جَامِعُ الْمُنَافِقِينَ وَالْكَافِرِينَ فِي جَهَنَّمَ جَمِيعًا
‘‘মুনাফিকগণকে শুভ সংবাদ দাও যে, তাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে! মুমিনগণের পরিবর্তে যারা কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তারা কি তাদের নিকট ইয্যত-ক্ষমতা চায়? সমস্ত ইয্যত-ক্ষমতা তো আল্লাহরই। কিতাবে তোমাদের প্রতি তিনি অবতীর্ণ করেছেন যে, যখন তোমরা শুনবে আল্লাহর আয়াত প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে এবং তার প্রতি বিদ্রূপ করা হচ্ছে, তখন, যে পর্যন্ত তারা অন্য প্রসংগে লিপ্ত না হয় তোমরা তাদের সাথে বসবে না। অন্যথায় তোমরাও তাদের মতই হবে। মুনাফিক ও কাফির সকলকেই আল্লাহ জাহান্নামে একত্রিত করবেন।’’[8]
অন্যত্র বলা হয়েছে:
لا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآَخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُوا آَبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ
‘‘তুমি পাবে না আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাসী এমন কোনো সম্প্রদায়, যারা ভালবাসে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধচারিগণকে, হোক না কেন এ সকল বিরুদ্ধচারী তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা তাদের জ্ঞাতি-গোত্র।’’[9]
অন্যত্র আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা‘আলা বলেন:
لا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَلَمْ يُخْرِجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ أَنْ تَبَرُّوهُمْ وَتُقْسِطُوا إِلَيْهِمْ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ
‘‘দীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নি এবং তোমারেদকে স্বদেশ হতে বহিষ্কৃত করে নি তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। আল্লাহ তো ন্যায়পরায়ণদিগকে ভালবাসেন।’’[10]
(গ) ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম বা বিশ্বাসের অনুসরণ করে কেউ মুক্তিলাভ করতে, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে বা আখেরাতে জান্নাত লাভ করতে পারে বলে মনে করা। মহান আল্লাহ বলেন:
إِنَّ الدِّينَ عِنْدَ اللَّهِ الإِسْلامُ
‘‘ইসলাম আল্লাহর নিকট একমাত্র দীন।’’[11]
وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الإِسْلامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الأخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ
‘‘কেউ ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো দীন গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনো কবুল করা হবে না এবং সে হবে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।’’[12]
৫. ১. ৪. কুফর আকবার-এর বিভিন্ন প্রকাশ
কুরআনের আলোকে কুফর আকবার-এর নিম্নরূপ প্রকাশ রয়েছে:
৫. ১. ৪. ১. কুফর তাকযীব বা মিথ্যা মনে করার কুফর
অর্থাৎ ওহীর নির্দেশনাকে মিথ্যা বলে মনে করা করা। এ হলো যুগে যুগে কুফর বা অবিশ্বাসের প্রধান প্রকার। নবী-রাসূলগণের দাও‘আতের মাধ্যমে, অথবা অন্যান্য প্রচারকদের মাধ্যমে, অথবা আসমানী কিতাব পাঠের মাধ্যমে যখন মানুষের কাছে ওহীর শিক্ষা উপস্থিত হয় তখন এরূপ অবিশ্বাসী ওহীর শিক্ষাকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেয়। মহান আল্লাহ বলেন:
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَى عَلَى اللَّهِ كَذِبًا أَوْ كَذَّبَ بِالْحَقِّ لَمَّا جَاءَهُ أَلَيْسَ فِي جَهَنَّمَ مَثْوًى لِلْكَافِرِينَ
‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে অথবা তাঁর নিকট থেকে আগত সত্যকে অস্বীকার করে তার চেয়ে অধিক জালিম আর কে? জাহান্নামই কি কাফিরদের আবাস নয়?’’[13]
৫. ১. ৪. ২. কুফর ইসতিকবার বা অহঙ্কারের অবিশ্বাস
অর্থাৎ অহঙ্কার বশত ঈমানের কোনো বিষয়ের সত্যতা অনুভব করার পরেও তা অস্বীকার করা। অনেক অবিশ্বাসীই এরূপ কুফরে লিপ্ত হয়। এরূপ অহঙ্কারের কুফরে সর্বপ্রথম লিপ্ত হয় ইবলীস। মহান আল্লাহ বলেন:
وَإِذْ قُلْنَا لِلْمَلائِكَةِ اسْجُدُوا لآدَمَ فَسَجَدُوا إِلا إِبْلِيسَ أَبَى وَاسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنَ الْكَافِرِينَ
‘‘যখন ফিরিশতাদের বললাম ‘আদমকে সাজদা কর’, তখন ইবলীস ব্যতীত সকলেই সাজদা করল; সে অমান্য করল এবং অহংকার করল, সুতরাং সে কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হলো।’’[14]
অন্যত্র মহান আল্লাহ ফিরাউন ও অন্যান্য কাফিরদের বিষয়ে বলেন:
وَجَحَدُوا بِهَا وَاسْتَيْقَنَتْهَا أَنْفُسُهُمْ ظُلْمًا وَعُلُوًّا فَانْظُرْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُفْسِدِينَ
‘‘তারা অন্যায় ও উদ্ধতভাবে নিদর্শনগুলি প্রত্যাখ্যান করল, যদিও তাদের অন্তর এগুলিকে সত্য বলে গ্রহণ করেছিল। দেখ, বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের পরিণাম কী হয়েছিল!’’[15]
৫. ১. ৪. ৩. কুফ্রু শাক্ক বা সন্দেহের অবিশ্বাস
ঈমানের কোনো বিষয়ে হৃদয়ে দ্বিধা বা সন্দেহ থাকাকে সন্দেহের কুফর বলা হয়। ঈমানের অর্থ সন্দেহাতীত প্রত্যয়ের সাথে বিশ্বাস করা। কাজেই কোনো বিষয়ে যদি মনে কিছু বিশ্বাস ও কিছু সন্দেহ থাকে বা দৃঢ় প্রত্যয়ের বদলে অস্পষ্ট ধারণা থাকে তবে তাকে কুফর বলে গণ্য করা হয়।
একজন কাফির ও একজন মুমিনের কথোপকথন সম্পর্কে আল্লাহ বলেন:
وَدَخَلَ جَنَّتَهُ وَهُوَ ظَالِمٌ لِنَفْسِهِ قَالَ مَا أَظُنُّ أَنْ تَبِيدَ هَذِهِ أَبَدًا وَمَا أَظُنُّ السَّاعَةَ قَائِمَةً وَلَئِنْ رُدِدْتُ إِلَى رَبِّي لأَجِدَنَّ خَيْرًا مِنْهَا مُنْقَلَبًا قَالَ لَهُ صَاحِبُهُ وَهُوَ يُحَاوِرُهُ أَكَفَرْتَ بِالَّذِي خَلَقَكَ مِنْ تُرَابٍ ثُمَّ مِنْ نُطْفَةٍ ثُمَّ سَوَّاكَ رَجُلا
‘‘এভাবে নিজের প্রতি জুলুম করে সে তার উদ্যানে প্রবেশ করল। সে বলল, আমি মনে করি না যে, এ কখনো ধ্বংস হয়ে যাবে। আমি মনে করি না যে, কিয়ামত হবে, আর যদি আমি আমার প্রতিপালকের নিকট প্রত্যাবৃত্ত হই-ই (কিয়ামত যদি হয়-ই) তবে আমি নিশ্চয় এর চেয়ে উৎকৃষ্ট স্থান লাভ করব।’ তদুত্তরে তার বন্ধু তাকে বলল, ‘তুমি কি কুফরী করছ তাঁর সাথে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন মৃত্তিকা ও পরে শুক্র হতে এবং তার পর পূর্ণাংগ করেছেন তোমাকে মনুষ্য আকৃতিতে?’’[16]
৫. ১. ৪. ৪. কুফর ই’রায বা অবজ্ঞার কুফর
দীন ও ঈমানের বিষয়ে গুরুত্বারোপ না করে নির্লিপ্ত থাকা, বা ঈমানের বিষয়কে অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করাকে কুফরু ই’রায বা অবজ্ঞার কুফর বলা হয়। মহান আল্লাহ বলেন:
وَالَّذِينَ كَفَرُوا عَمَّا أُنْذِرُوا مُعْرِضُونَ
‘‘যারা কাফির তারা তাদেরকে যে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে তা থেকে বে-খেয়াল বা মুখ ফিরিয়ে থাকে।’’[17]
৫. ১. ৪. ৫. কুফ্রু নিফাক বা মুনফিকীর কুফর
অন্তরে অবিশ্বাস লুকিয়ে রেখে মুখে ঈমানের দাবি করাকে কুফরু নিফাক বলে। নিফাক বা মুনাফিকী কুফর এর একটি বিশেষ দিক যা কুরআন ও হাদীসে বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে। এছাড়া বিশ্বাসের নিফাক ছাড়াও কর্মের নিফাকের একটি পর্যায় রয়েছে।
[2] সূরা (৬) আন‘আম: ৬৮ আয়াত।
[3] সূরা (৩) আল-ইমরান: ২৮ আয়াত।
[4] সূরা (৪) নিসা: ১৪৪ আয়াত।
[5] সূরা (৫) মায়িদা: ৫১ আয়াত।
[6] সূরা (৫) মায়িদা: ৫৭ আয়াত।
[7] সূরা (৯) তাওবা: ২৩ আয়াত।
[8] সূরা (৪) নিসা: ১৩৮-১৪০ আয়াত।
[9] সূরা (৫৮) মুজাদালা: ২২ আয়াত।
[10] সূরা (৬০) মুমতাহিনা: ৮ আয়াত।
[11] সূরা (৩) আল-ইমরান: ১৯ আয়াত।
[12] সূরা (৩) আল-ইমরান: ৮৫ আয়াত।
[13] সূরা (২৯) আনকাবূত: ৬৮ আয়াত।
[14] সূরা (২) বাকারা: ৩৪ আয়াত।
[15] সূরা (২৭) নামল: ১৪ আয়াত।
[16] সূরা (১৮) কাহফ: ৩৫-৩৮ আয়াত।
[17] সূরা (৪৬) আহকাফ: ৩ আয়াত।