ইবাদতের তাওহীদের উপর গুরুত্ব দেয়ার দ্বিতীয় কারণ হলো, এ পর্যায়ের তাওহীদেই বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীর মধ্যে পার্থক্য নির্ধারিত হয়। যুগে যুগে ঈমান ও কুফ্রের মধ্যে মূলত এ ব্যাপারেই বিরোধ। প্রথম পর্যায়ের তাওহীদ বা আল্লাহর সৃষ্টি এবং প্রতিপালনের একত্বে অধিকাংশ মানুষই বিশ্বাস করেন। এই বিশ্বের একাধিক স্রষ্টা আছেন অথবা এই বিশ্বের কোনো স্রষ্টা নেই- এ ধরণের বিশ্বাস খুবই কম মানুষেই করেছে বা করে। সকল যুগে সকল দেশের প্রায় সব মানুষই মূলত বিশ্বাস করেছেন এবং করেন যে, এই বিশ্বের একজনই স্রষ্টা ও প্রতিপালক রয়েছেন। কিন্তু তারা উপাসনা বা ইবাদতের ক্ষেত্রে তাঁর সাথে ফিরিশতা, নবীগণ, নেককারগণ, জিন্নগণ, অন্যান্য দেবদেবী, পাথর, গাছপালা, মানুষ, মানুষের মুর্তি, স্মৃতিবিজড়িত স্থান, দ্রব্য বা স্মৃতিচিহ্নের পূজা, উপাসনা বা ‘ভক্তি’ করেছেন। আমরা যে কোনো শিরকে লিপ্ত অমুসলিম সমাজের দিকে তাকালেই বিষয়টি খুব সহজে উপলব্ধি করতে পারি। বিভিন্ন যুগের ও জাতির ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে যারা গবেষণা করেছেন তাঁরা সবাই এ বিষয়টি লক্ষ্য করেছেন।[1]
কুরআন ও হাদীসে এ বিষয়ে বিশদভাবে বলা হয়েছে। পবিত্র কুরআনে আমরা দেখতে পাই যে, যুগে যুগে আল্লাহ যে সকল নবী ও রাসুল প্রেরণ করেছেন তাঁদের উম্মতেরা কখনই বলে নি যে, আল্লাহ ছাড়া এই বিশ্বের কোনো স্রষ্টা বা পালনকর্তা আছেন। বরং তারা সবাই আল্লাহকে একমাত্র স্রষ্টা, প্রতিপালক, সংহারক বলে বিশ্বাস করতেন। তবে তারা মনে করতেন যে, অনেক দেব-দেবী, গাছ-পাথর, ফিরিশতা, জিন্ন বা মানুষের ঐশ্বরিক শক্তি আছে বা তারা আল্লাহর প্রিয়, কাজেই তাদেরকে উপসনা করলে, তাদের নামে মানত, জবাই বা প্রার্থনা করলে মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়, তাই তারা আল্লাহর ইবাদতের সাথে সাথে তাদেরও ইবাদত করতেন। নবী রাসূলগণ তাদেরকে সকল দেবদেবী পাথর মূর্তি ও মানুষের উপাসনা ত্যাগ করে একমাত্র আল্লাহর উপাসনার জন্য আহবান জানান। কাফিরেরা তা মানতে অস্বীকার করে।
আমরা পূর্ববর্তী আলোচনায় মক্কার কাফিরদের বিষয়ে কুরআনের বর্ণনা থেকে বিষয়টি ভালভাবে বুঝতে পেরেছি। আমরা দেখেছি যে, তারা প্রথম পর্যায়ের তাওহীদ বিশ্বাস করতো। কিন্তু তারা দ্বিতীয় পর্যায়ের তাওহীদ, অর্থাৎ ইবাদতের তাওহীদে বিশ্বাস করতো না।
তারা আল্লাহর ইবাদত করতে অস্বীকার করত না, কিন্তু একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করতে অস্বীকার করত। কুরআনে কাফিরদের ‘দু‘আ’, মানত, উৎসর্গ ইত্যাদি ইবাদতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যেগুলি তারা আল্লাহর জন্য করত। তারা আল্লাহর নামে মানত-কুরবানি করত এবং সাথে সাথে আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য উপাস্যদের জন্যও মানত-কুরবানি করত। ইরশাদ করা হয়েছে:
وَجَعَلُوا لِلَّهِ مِمَّا ذَرَأَ مِنَ الْحَرْثِ وَالأَنْعَامِ نَصِيبًا فَقَالُوا هَذَا لِلَّهِ بِزَعْمِهِمْ وَهَذَا لِشُرَكَائِنَا
‘‘আল্লাহ যে শস্য ও গবাদি পশু সৃষ্টি করেছেন তন্মধ্যে থেকে তারা আল্লাহর জন্য এক অংশ নির্দিষ্ট করে এবং নিজেদের ধারণা অনুযায়ী বলে, ‘এটি আল্লাহর জন্য এবং এটি আমাদের উপাস্যদের জন্য’।’’[2]
কুরআন কারীমের বর্ণনা থেকে আমরা জানতে পারি যে, মুশরিকদের প্রধান ইবাদত ছিল ‘দু‘আ’ অর্থাৎ ডাকা বা ত্রাণ বা উদ্ধারের জন্য আবেদন বা প্রার্থনা করা। এজন্য কুরআন করীমে এদের শিরককে অধিকাংশ স্থানে ‘দু‘আ’ নামে অভিহিত করা হয়েছে। প্রায় ৭০ এরও অধিক স্থানে মুশরিকদের শিরককে ‘দু‘আ’ বলে অভিহিত করা হয়েছে।
কুরআনে বিভিন্ন স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মুশরিকগণ মহান আল্লাহর কাছে দু‘আ করত, তাঁকে ডাকত এবং তার কাছে সাহায্য, বিজয় ইত্যাদি প্রার্থনা করত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন তাদেরকে একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করতে আহবান করলেন তখন কাফিরগণ আল্লাহর কাছে দু্‘আ করে বলত,
اللَّهُمَّ إِنْ كَانَ هَذَا هُوَ الْحَقَّ مِنْ عِنْدِكَ فَأَمْطِرْ عَلَيْنَا حِجَارَةً مِنَ السَّمَاءِ أَوِ ائْتِنَا بِعَذَابٍ أَلِيمٍ
‘‘হে আল্লাহ, যদি (মুহম্মদ (ﷺ) যা প্রচার করছে) তা আপনার পাঠান সঠিক ও সত্য ধর্ম হয়, তবে আপনি আমাদের উপর আসমান থেকে পাথর বর্ষণ করুন অথবা আমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দান করুন।’’[3]
বদরের যুদ্ধে যাত্রার আগে মক্কার কাফিরগণ পবিত্র কা’বা গৃহের গিলাফ বা বহিরাবরণী ধরে আল্লাহর কাছে দু‘আ করেন এবং বলেন, ‘‘হে আল্লাহ আপনি আমাদের এবং মুহাম্মাদের (ﷺ) দলের মধ্যে যে দল বেশি সম্মানিত ও বেশি ভাল তাদেরকে বিজয়ী করে দেন।’’ কাফিরদের নেতা আবু জাহল আল্লাহর কাছে দু‘আ করে বলে, ‘‘হে আল্লাহ আমাদের (কাফির ও মুসলিমদের) মধ্য থেকে যারা বেশি পাপী, যারা বেশী আত্মীয়তার সম্পর্ক বিনষ্টকারী তাদেরকে আপনি এই যুদ্ধে পরাজিত করুন।’’[4]
এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন:
إِنْ تَسْتَفْتِحُوا فَقَدْ جَاءَكُمُ الْفَتْحُ
‘‘তোমরা যদি বিজয় প্রার্থনা করে থাক, তবে বিজয় এসে গিয়েছে’’[5]।
অর্থাৎ তোমরা ভাল দলের বিজয় প্রার্থনা করেছিলে, আল্লাহ ভাল দলকে বিজয়ী করেছেন।
আল্লাহর কাছে দু‘আ করার পাশাপাশি তারা তাদের অন্যান্য উপাস্যের কাছেও দু‘আ করত। সাধারণত দু‘আ কুবুল হওয়ার আশায় তারা দু‘আর পূর্বে মানত, উৎসর্গ, কুরবানী ইত্যাদি পেশ করত। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাফিরগণ সাধারণ ও ছোটখাট বিপদ-আপদে আল্লাহকে ডাকত না, বরং এ সকল ক্ষেত্রে তারা তাদের অন্যান্য উপাস্যকে ডাকত এবং তার সাহায্য প্রার্থনা করত। আর কঠিন বিপদে পড়লে তারা আল্লাহকে ডাকত। কুরআন কারীমে বিভিন্ন স্থানে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন:
قُلْ أَرَأَيْتَكُمْ إِنْ أَتَاكُمْ عَذَابُ اللَّهِ أَوْ أَتَتْكُمُ السَّاعَةُ أَغَيْرَ اللَّهِ تَدْعُونَ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ بَلْ إِيَّاهُ تَدْعُونَ فَيَكْشِفُ مَا تَدْعُونَ إِلَيْهِ إِنْ شَاءَ وَتَنْسَوْنَ مَا تُشْرِكُونَ
‘‘বলুন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে তোমরা বলতো, আল্লাহর শাস্তি তোমাদের উপর আপতিত হলে, অথবা তোমাদের নিকট কিয়ামত উপস্থিত হলে তোমরা কি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে ডাকবে? বরং তোমরা শুধু তাকেই ডাকবে। তিনি ইচ্ছা করলে যে বিপদের জন্য তাকে ডাকবে তোমাদের সে বিপদ তিনি দূর করবেন এবং যাদেরকে তোমরা শরীক করতে তাদেরকে তোমরা ভুলে যাবে।’’[6]
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
فَإِذَا رَكِبُوا فِي الْفُلْكِ دَعَوُا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ فَلَمَّا نَجَّاهُمْ إِلَى الْبَرِّ إِذَا هُمْ يُشْرِكُونَ
‘‘তারা যখন নৌযানে আরোহণ করে তখন তারা বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে। অতঃপর তিনি যখন স্থলে ভিড়িয়ে তাদেরকে উদ্ধার করেন, তখন তারা শির্কে লিপ্ত হয়।’’[7]
অন্যত্র আল্লাহ বলেছেন:
وَإِذَا غَشِيَهُمْ مَوْجٌ كَالظُّلَلِ دَعَوُا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ فَلَمَّا نَجَّاهُمْ إِلَى الْبَرِّ فَمِنْهُمْ مُقْتَصِدٌ وَمَا يَجْحَدُ بِآَيَاتِنَا إِلاَّ كُلُّ خَتَّارٍ كَفُورٍ
‘‘যখন তরঙ্গ তাদেরকে আচ্ছন্ন করে মেঘচ্ছায়ার মত তখন তারা আল্লাহকে ডাকে তাঁর আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে। কিন্তু যখন তিনি তাদেরকে উদ্দার করে স্থলে পৌঁছান তখন তাদের কেউ কেউ সরল পথে থাকে; কেবল বিশ্বাসঘাতক, অকৃতজ্ঞ ব্যক্তিই তার নিদর্শনাবলি অস্বীকার করে।’’[8]
কুরআন কারীমে বিভিন্ন স্থানে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।[9] কুরআনের বিবরণ থেকে বুঝা যায় যে, অধিকাংশ মুশরিকই এইভাবে চলত। সূরা হজ্বের একটি বর্ণনা থেকে দেখা যায় যে, কিছু মানুষ সাধারণভাবে আল্লাহর ইবাদত করত। কিন্তু আল্লাহর প্রতি তাদের আস্থা ও ঈমানের দৃঢ়তা খুবই কম। এজন্য কঠিন বিপদে পড়লে তারা ঈমান হারিয়ে ফেলত এবং শিরকে লিপ্ত হয়ে পড়ত। তখন আল্লাহ ছাড়া অন্য উপাস্যর কাছে চাওয়া শুরু করত।[10]
এভাবে তারা আল্লাহর ইবাদত করলেও, একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করতে ভয়ঙ্করভাবে অস্বীকার করত। মহান আল্লাহ বলেন:
إِنَّهُمْ كَانُوا إِذَا قِيلَ لَهُمْ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ يَسْتَكْبِرُونَ. وَيَقُولُونَ أَئِنَّا لَتَارِكُوا آَلِهَتِنَا لِشَاعِرٍ مَجْنُونٍ
‘‘তাদের নিকট যখন বলা হয় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ: আল্লাহ ব্যতীত কোনো মাবূদ নেই’ তখন তারা অহঙ্কার করে। এবং বলে, আমরা কি এক উন্মাদ কবির জন্য আমাদের ইলাহগণকে বর্জন করব?’’[11]
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন:
وَعَجِبُوا أَنْ جَاءَهُمْ مُنْذِرٌ مِنْهُمْ وَقَالَ الْكَافِرُونَ هَذَا سَاحِرٌ كَذَّابٌ. أَجَعَلَ الآَلِهَةَ إِلَهًا وَاحِدًا إِنَّ هَذَا لَشَيْءٌ عُجَابٌ. وَانْطَلَقَ الْمَلأُ مِنْهُمْ أَنِ امْشُوا وَاصْبِرُوا عَلَى آَلِهَتِكُمْ إِنَّ هَذَا لَشَيْءٌ يُرَادُ. مَا سَمِعْنَا بِهَذَا فِي الْمِلَّةِ الآَخِرَةِ إِنْ هَذَا إِلا اخْتِلاقٌ.
‘‘এবং তারা বিস্ময় বোধ করছে যে, তাদের কাছে তাদের মধ্য থেকে একজন সতর্ককারী (রাসূল) এসেছেন এবং কাফিররা বলে: এতো এক যাদুকর, মিথ্যাবাদী। সে কি বহু উপাস্যের (ইলাহের) স্থানে এক উপাস্য বানিয়ে নিয়েছে? এ তো এক অত্যাশ্চর্য ব্যাপার। তাদের প্রধানেরা সরে পড়ে এই বলে যে, তোমরা চলে যাও এবং তোমাদের উপাস্যদের বিষয়ে অবিচল-স্থিরচিত্ত থাক। নিশ্চয় এ ব্যাপারটি উদ্দেশ্যমূলক। আমরা তো অন্য ধর্মাদর্শে এরূপ কথা শুনি নি; নিশ্চয় এ এক মনগড়া কথা।’’[12]
তারা তাদের মাবূদদের পাশাপাশি আল্লাহর ইবাদত করলেও, মূলত এককভাবে আল্লাহর কথা আলোচনা করা বা আল্লাহর একত্বের ও মহত্বের আলোচনা করায় তারা বিরক্ত হতো। মহান আল্লাহ বলেন:
وَإِذَا ذَكَرْتَ رَبَّكَ فِي الْقُرْآَنِ وَحْدَهُ وَلَّوْا عَلَى أَدْبَارِهِمْ نُفُورًا
‘‘যখন তুমি তোমার প্রতিপালককে উল্লেখ কর কুরআনের মধ্যে এককভাবে তখন পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে তারা সরে পড়ে।’’[13]
মহান আল্লাহ বলেন:
وَإِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَحْدَهُ اشْمَأَزَّتْ قُلُوبُ الَّذِينَ لا يُؤْمِنُونَ بِالآَخِرَةِ وَإِذَا ذُكِرَ الَّذِينَ مِنْ دُونِهِ إِذَا هُمْ يَسْتَبْشِرُونَ
‘‘একমাত্র আল্লাহর কথা বলা হলে যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না তাদের অন্তর বিতৃষ্ণায় সংকুচিত হয় এবং আল্লাহর পরিবর্তে যারা তাদের উল্লেখ করা হয়ে তারা আনন্দে উল্লসিত হয়।’’[14]
ইসলাম ও মুসলিমদের সাথে তাদের চরম শত্রুতা এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর চরম বিরোধিতার কারণ ছিল এই তাওহীদুল ইবাদাতের বিশ্বাস।
[2] সূরা (৬) আনয়াম: ১৩৬ আয়াত।
[3] সূরা (৮) আনফাল: ৩২ আয়াত।
[4] বুখারী, আস-সহীহ ৪/১৭০৪-১৭০৫; তাবারী, জামিউল বায়ান ৯/২০৭-২০৮; ইবনু হাজার, ফাতহুল বারী ৮/৩০৮।
[5] সূরা (৮) আনফাল: ১৯ আয়াত।
[6] সূরা (৬) আনআম: ৪০-৪১ আয়াত।
[7] সূরা (২৯) আনকাবূত: ৬৫ আয়াত।
[8] সূরা (৩১) লুকমান: ৩২ আয়াত।
[9] দেখুন: আন’আম: ৬৩; আ’রাফ: ১৮৯; ইউনূস: ১২, ২২; নাহল: ৫৩-৫৪; ইসরা: ৬৭; আনকাবূত: ৬৫; রূম: ৩৩; লুকমান: ২৩; সূরা যুমার: ৮ ইত্যাদি।
[10] সূরা হাজ্ব : ১১-১৩।
[11] সূরা (৩৭) সাফ্ফাত: ৩৫-৩৬ আয়াত।
[12] সূরা (৩৮) সাদ ৪-৭ আয়াত।
[13] সূরা (১৭) ইসরা/বানী ইসরাঈল: ৪৬ আয়াত।
[14] সূরা (৩৯) যুমার: ৪৫ আয়াত।