আল্লাহ তা‘আলা মিরাজের ঘটনায় বলেন,
﴿سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَىٰ بِعَبْدِهِ لَيْلًا مِّنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الْأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ آيَاتِنَا إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ﴾
‘‘পবিত্র তিনি যিনি নিয়ে গেছেন এক রাতের কিয়দাংশে নিজের বান্দাকে মাসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার পরিবেশকে আমি করেছি বরকতময়। যাতে আমি তাকে নিজের কিছু নিদর্শন দেখাই। তিনিই সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা’’। (সূরা বানী ইসরাঈল: ১)
হাফেয ইমাম ইবনে কাছীর রাহিমাহুল্লাহ এ আয়াতে কারীমার তাফসীরে বলেন, আল্লাহ তা‘আলা এখানে নিজের বড়ত্ব ও শান বর্ণনা করেছেন। কারণ তিনি এমন সব বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান, যার উপর তিনি ছাড়া অন্য কেউ ক্ষমতাবান নন। তিনি ছাড়া অন্য কোনো সত্য ইলাহ নেই এবং তিনি ছাড়া আমাদের কোনো রব নেই। তিনি তার বান্দা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রাতের অন্ধকারে ভ্রমণ করিয়েছেন মাসজিদুল হারাম তথা মক্কার মাসজিদ থেকে মাসজিদুল আকসা পর্যন্ত এটি জেরুযালেম শহরে অবস্থিত। ইবরাহীম খলীল আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে এ শহরটি নবীদের কেন্দ্রস্থল। এ জন্যই মুহম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য সমস্ত নবীকে মিরাজের রাতে সেখানে একত্রিত করা হয়েছে। তিনি তাদের শহরে এবং তাদের বাড়িতে গিয়ে সালাতে তাদের ইমামতি করেছেন। এতে বুঝা গেলো তিনিই হলেন ইমামে আযাম এবং তিনিই অগ্রনায়ক। আল্লাহ তা‘আলা সমস্ত নবী-রসূলের উপর রহম করুন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, باركناحوله ‘‘আমি তার আশপাশকে বরকতময় করেছি’’। অর্থাৎ সেখানকার ফল ও ফসলে বরকত দান করেছি। যাতে তাকে আমার বড় বড় নিদর্শন দেখাতে পারি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿لَقَدْ رَأَىٰ مِنْ آيَاتِ رَبِّهِ الْكُبْرَىٰ﴾
‘‘তিনি তার রবের বড় বড় নিদর্শনসমূহ দেখেছেন’’ (সূরা নাযম:১৮)।
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
﴿إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ﴾
‘‘তিনিই সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা’’ (সূরা মু‘মিন:৫৬)।
অর্থাৎ তিনি তার বান্দাদের সমস্ত কথা শুনেন। মুমিন, কাফের, সত্যবাদী ও মিথ্যাবাদী সকলের কথাই শুনেন এবং তাদের সকলের অবস্থাই দেখেন। সুতরাং দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের উপযুক্ত বিনিময় প্রদান করবেন।
المعراج শব্দটি مفعال এর ওজনে ব্যবহৃত হয়েছে। উপরে উঠার যন্ত্রকে المعراج বলা হয়। এটি সিড়ির মতোই। কিন্তু সেটা কেমন, তা জানা সম্ভব নয়। এর হুকুম অন্যান্য গায়েবী বিষয়ের হুকুম একই রকম। আমরা এগুলোর উপর ঈমান আনয়ন করি। কিন্তু এগুলোর কাইফিয়্যাত জানার চেষ্টা করি না।
হাদীছের হাফেযগণ বলেন, নবুওয়াতের পর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কাতে থাকা কালে হিজরতের একবছর পূর্বে একবার মিরাজ হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, মিরাজ হয়েছিল হিজরতের একবছর দুই মাস পূর্বে। ইমাম ইবনে আব্দিল বার এরকমই উল্লেখ করেছেন।