ثانيا: تعليق التمائم - দ্বিতীয়ত: তাবিজ-কবজ ঝুলানো

ছিদ্রবিশিষ্ট এক শ্রেণীর পুঁতি বা দানাকে التميمة বা তাবীজ বলা হয়। বদনযর থেকে বাঁচার জন্য প্রাচীন আরবরা শিশুদের গলায় তাবীজ ঝুলাতো এবং تميمة নামের মাধ্যমে তারা এভাবে বরকতের আশা করতো যে, আল্লাহ তা‘আলা যেন তাদের উদ্দেশ্য পূরণ করেন। তাবীজ কখনো হাড্ডী দিয়ে, কখনো পুঁতি বা দানা দিয়ে, কখনো কাগজে লিখে এবং অন্যান্য জিনিস দিয়েও তৈরী হয়। কোনো অবস্থাতেই এগুলো পরিধান করা বৈধ নয়।

কখনো কুরআন দিয়ে তাবীজ তৈরী করেও ঝুলানো হয়ে থাকে। সুতরাং কুরআন দিয়ে তাবীজ লেখা হলে তা জায়েয হওয়া বা না হওয়ার ব্যাপারে আলেমদের কিছু মতভেদ রয়েছে। তবে শিরকের দরজা বন্ধ করার জন্য আলেমদের দুই মতের মধ্যে প্রাধান্যযোগ্য মতে কুরআন দিয়ে তাবীজ লিখে ঝুলানো বৈধ নয়। কেননা কুরআন দিয়ে ঝুলানো জায়েয বলা হলে লোকেরা কুরআন ছাড়া অন্যান্য জিনিস দিয়ে তাবীজ বানিয়ে ঝুলানোর সুযোগ পেয়ে যাবে। আর সকল প্রকার তাবীজ ঝুলানো থেকে নিষেধ করা হয়েছে। তাবীজ ঝুলানোর এই নিষেধাজ্ঞা থেকে কোনো কিছুকেই আলাদা বা খাস করা হয়নি। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন, ‘‘আমি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,

إِنَّ الرُّقَى وَالتَّمَائِمَ وَالتِّوَلَةَ شِرْكٌ

‘‘ঝাড়-ফুঁক ও তাবিজ-কবজ ঝুলানো শিরক’’।[1] ইমাম আহমাদ ইবনে হান্বাল ও আবু দাউদ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন।

উকবা ইবনে আমের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে মারফু হিসাবে বর্ণিত হয়েছে যে, من علق تميمة فقد أشرك ‘‘যে ব্যক্তি তাবীজ ঝুলালো সে শিরক করলো’’। তাবীজ লাগানো নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে এ দলীলগুলো ব্যাপক অর্থবোধক। তা থেকে কোনো কিছুকেই খাস করা হয়নি। অর্থাৎ এগুলো কুরআন দিয়ে তৈরী কিংবা কুরআন ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে তৈরী সকল প্রকার তাবীজকেই হারাম করেছে।


[1]. মুসনাদে আহমাদ ও সুনানে আবু দাউদ। ইমাম আলবানী (রহি.) হাদীছটিকে সহীহ বলেছেন, দেখুন: সিলসিলা ছহীহা, হাদীছ নং- ৩৩১।