প্রশ্ন-৩০ : ‘মানহাজুল আম্বিয়া’ নামক পূর্বোক্ত কিতাবের ব্যাপারে অবস্থান কী হওয়া দরকার?

উত্তর : কিতাবে থাকা সমস্যাবলির সমাধান করতে হবে। উক্ত বই লাইব্রেরি থেকে বাজেয়াপ্ত করতে হবে এবং আল-মামলাকাতুল আরাবিয়্যাহ আস-সাঊদিয়্যাহ তে উক্ত বইয়ের অনুপ্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।[1]


[1]. সম্মানিত শায়খ আব্দুল আযীয ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে বায (রহ.) কে ২৯/১২/১৪১৩ হিজরীতে তায়েফ শহরে ‘‘আফাতুল লিসান’’ নামক শিরোনামের বক্তৃতানুষ্ঠানে মুহাম্মাদ সুরুর ইবনে যায়নুল আবিদীনের কথা ও আকীদার কিতাবের ক্ষেত্রে তার অবস্থান কী বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। শায়খ (রহ.) উত্তরে বলেন, ‘তার কথা মারাত্মক ভুল। বিশুদ্ধ কথা হলো আকীদার কিতাবগুলো অমত্মঃসারশূন্য নয়, নয় শুধু আল্লাহ বলেন ও তার রসূল বলেন। আল কুরআন ও সুন্নাহকে অমত্মঃসারশূন্য বলা তো ইসলাম পরিত্যাগ করে মুরতাদ হওয়ার নামান্তর। এটা খুবই দুর্বল ও শয়তানী কথা। বই বিক্রির হুকুম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘যদি বইয়ে এ কথা থাকে তাহলে উক্ত বই বিক্রি করা বৈধ নয়। বরং তা বিনষ্ট করে ফেলতে হবে। (উল্লেখিত ক্যাসেট থেকে সংগৃহিত)

মুহাম্মাদ সুরুরের মত হাসান আত-তুরাবী বলেন, ‘‘বর্তমান যুগের ফিকহুল ‘‘আকীদার জন্য প্রাচীন কালের ‘আকীদা শাস্ত্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে নতুনভাবে সমাধান পেশ করতে হবে। সালাফদের প্রথাগত রীতি পরিত্যাগ করতে হবে।’’

তিনি আরো বলেন, আমাদের উচিত উসূলুল ফিকহ (ফিকহ শাস্ত্রের মূলনীতি) এর প্রতি দৃষ্টি দেওয়া। আমার মতে উসূলুল ফিকহের প্রতি বিশুদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গি হলো যে, তা শুরু হয় কুরআন দ্বারা। এর থেকে প্রকাশ পায় যে, আমাদের জন্য নতুনভাবে কুরআনের তাফসীর করা খুবই প্রয়োজন। যদি আপনারা তাফসীর গ্রন্থসমূহ পড়েন তাহলে দেখতে পাবেন যে, সেগুলো তৎকালীন যুগে সংঘটিত ঘটনার সাথে যুক্ত। প্রত্যেক তাফসীরেই যে যুগে রচিত হয়েছে সে যুগের চিন্তা-চেতনার বর্ণনা বিদ্যমান। তবে শুধুমাত্র এ যুগেই আমরা বর্তমান যুগের বর্ণনা সম্বলিত কোন পূর্ণ তাফসীর পাই না। (আত-তুরাবী, তাজদীদুল ফিকরিল ইসলামী পৃ. ২৪-২৫ আদ-দার আস-সা‘উদিয়্যাহ দ্বিতীয় সংস্করণ ১৪০৭ হি.।

আমি বলব, (তার এই কথার দ্বারা সে বলতে চাচ্ছে যে, সে যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের পরিবর্তিত প্রবৃত্তির দ্বারা তাফসীর করতে হবে। বা তাফসীরে রদবদল করতে চায়। সে জানে না যে, তাফসীর নির্দিষ্ট উৎসের সাথে সীমাবদ্ধ। তাফসীরের উৎস সমূহ হলো:

১. কুরআন দ্বারা কুরআনের তাফসীর করা।

২. সুন্নাহ দ্বারা কুরআনের তাফসীর করা।

৩. ছাহাবীদের কওল বা মত দ্বারা কুরআনের তাফসীর করা।

৪. কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার ভাষা দ্বারা কুরআনের তাফসীর করা।

ধারাবাহিকভাবে উল্লেখিত চারটি উৎসই শুধুমাত্র কুরআনুল কারীমের তাফসীরের উৎস হতে পারে। যুগ, মতবাদ ও মানুষের পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও জ্ঞান গরীমাগত দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতার কারণে উল্লেখিত চারটি উৎসের কোন পরিবর্তন সাধিত হবে না।