সাধারণভাবে পানির অভাবে, এর ব্যবহার বা সংগ্রহে কোন ক্ষতি বা বিপদসংকুল অবস্থা সৃষ্টি হলেই পানির পরিবর্তে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করা জায়েয । আর সেগুলো হলো:
১. পানি পাওয়া না গেলে
ইমরান ইবনে হোসাইন (রা) বর্ণিত হাদীসে এসেছে- একবার এক সফরে এক লোক পানির অভাবে ওযূ করতে না পারায় সালাতে শরীক না হয়ে অন্যত্র দাঁড়িয়ে থাকে। বিষয়টি জানতে পেরে রাসূলুল্লাহ (স) তাকে বললেন, “পাক মাটি ব্যবহার করো, তোমার জন্য এটাই যথেষ্ট।” (বুখারী: ৩৪৪) তবে পানি না পেলে আশপাশে কারো কাছে পানি আছে কি না তা খোঁজাখুজি করে দেখবে।
২. পানির ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হলে
ওযুর অঙ্গে কোন ঘা বা ক্ষত স্থান থাকলে, আর এ অবস্থায় পানি ব্যবহার করলে রোগ বৃদ্ধি বা রোগমুক্তি বিলম্বিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে ওযূর বদলে তায়াম্মুম জায়েয, এ বিষয়ে জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা)-এর একটি স্পষ্ট হাদীস রয়েছে। (দেখুন আবু দাউদ: ৩৩৬ নং হাদীসের মর্ম)।
৩. ঠাণ্ডার তীব্রতার কারণে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা থাকলে
ঠাণ্ডার তীব্রতার কারণে তা ব্যবহারে যদি কোন রোগ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, আর পানি গরম করার কোন সহজলভ্য পথও না থাকে তবে সে মুহূর্তে তায়াম্মুম করা বৈধ হবে। এমনকি গোসল ফরয হলেও তায়াম্মুমই যথেষ্ট। সাহাবী আমর ইবন আস (রা) একবার এক শীতের রাতে তার স্বপ্নদোষ হলে পানি খুব ঠাণ্ডা হওয়ার কারণে ওযূ না করে তিনি তায়াম্মুম করে নামাযের ইমামতী করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ (স) বিষয়টি জেনে শুধু একটু হাসলেন, আর কিছুই বললেন না । (আবু দাউদ: ৩৩৪)
৪. পানি সংগ্রহ কষ্টকর হলে
যেমন শত্রুর আক্রমণ, মাল চুরি হয়ে যাওয়া বা জীবনের ঝুঁকি বা ইজ্জতহানী হওয়ার ভয় অথবা এমন অসুস্থ হওয়া যে নিজে গিয়ে পানি আনতে পারছে না বা সহায়তা করবে এমন কেউ নেই, এমন অবস্থা যেন পানি না থাকা বা না পাওয়ার মতোই। তাই এ অবস্থায় তায়াম্মুম জায়েয। (মুগনী- ১/৩১৫) ৫. পরিমাণ স্বল্পতা পানি সাথে আছে, কিন্তু পরিমাণে কম। আর এ দ্বারা ওযূ করলে খাবার পানি ফুরিয়ে যাবে অথবা রান্নার পানির অভাব পড়বে বা সফররত অবস্থায় অন্য কোথাও পানি পাওয়া যাবে কি না তা অনিশ্চিত। এমন আশঙ্কা থাকলে উক্ত অবস্থায় তায়াম্মুম করা যাবে। (মুগনী- ১/৩৪৩) ৬. সময় সংকীর্ণতা পানি খোঁজাখুজি করতে গেলে নামাযের সময় চলে যেতে পারে, সালাত কাযা হয়ে যেতে পারে, এমন ঝুঁকিপূর্ণ মুহূর্তে তায়াম্মুম করে সালাত আদায় জায়েয আছে।