আব্বাস, তাঁর পুত্র আবদুল্লাহ ও ‘আকিল ইবন আবি তালিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমকে অপমান করা:

আল্লামা মুহাম্মদ বাকের আল-মাজলিসী ফারসি ভাষায় উল্লেখ করেন, যার অনুবাদ হল:

“আল-কুলাইনী হাসান সনদে বর্ণনা করেন, তিনি ইমাম মুহাম্মদ বাকেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তিকালের পর বনু হাশিমের আত্মমর্যাদা, শান-শওকত ও সংখ্যাধিক্য কোথায় ছিল, যখন আলী আবূ বকর, ওমর ও সকল মুনাফিকের কাছে পরাজিত হলেন? তখন ইমাম মুহাম্মদ বাকের জওয়াব দিলেন, বনু হাশিমের মধ্যে কে-ই বা অবশিষ্ট ছিলেন? জাফর ও হামযা ছিলেন প্রথম সারির ও পরিপূর্ণ মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত, যারা মারা গেছেন; আর দুইজন, যারা ছিলেন বিশ্বাসে দুর্বল, হীন মানসিকতার এবং নও মুসলিম, তারা অবশিষ্ট আছে- আব্বাস ও ‘আকিল।”[1]

মুহাম্মদ বাকের আল-মাজলিসী আব্বাস থেকে ফারসি ভাষায় বর্ণনা করেন, যার অনুবাদ হল:

“নিঃসন্দেহে আমাদের হাদিসসমূহ থেকে প্রমাণিত হয় যে, আব্বাস পরিপূর্ণ মুমিন ছিলেন না; আর ‘আকিলও ঈমানের অপূর্ণতার দিক থেকে তার মতই ছিলেন।”[2]

আল-মাজলিসী ফারসি ভাষায় আরও বর্ণনা করেন, যার অনুবাদ হল:

“ইমাম মুহাম্মদ বাকের ইমাম যাইনুল আবেদীন আ. থেকে নির্ভরযোগ্য সূত্রে বর্ণনা করেন যে, এই আয়াতটি আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস ও তার পিতা আব্বাসের শানে অবতীর্ণ হয়েছে; আয়াতটি হল:

﴿ وَمَن كَانَ فِي هَٰذِهِۦٓ أَعۡمَىٰ فَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ أَعۡمَىٰ وَأَضَلُّ سَبِيلٗا ٧٢ ﴾ [سورة الإسراء: 72]

“আর যে ব্যক্তি এখানে অন্ধ, সে আখিরাতেও অন্ধ এবং অধিকতর পথভ্রষ্ট।”— (সূরা আল-ইসরা: ৭২)।”[3]এই বর্ণনাসমূহ থেকে মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চাচা সাইয়্যেদুনা আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এবং অনুরূপভাবে সাইয়্যেদুনা ‘আকিল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে তাদের পক্ষ থেকে অপমান করার এবং তাদের উভয়কে ব্যর্থতা, দুর্বল বিশ্বাস ও ঈমানের অপূর্ণতার অপবাদ দেয়ার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ পাচ্ছে। আরও অপমান করা হয়েছে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ও তাঁর ছেলে উম্মতের (জাতির) পণ্ডিত ব্যক্তিত্ব সাইয়্যেদুনা আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে এই বলে যে, তারা নাকি উপরিউক্ত আয়াতে কারিমার হুকুমের আওতাধীন (নাউযুবিল্লাহ), অর্থাৎ তাদের শানে উপরিউক্ত আয়াতটি নাযিল হয়েছে; অথচ এই আয়াতটি নাযিল হয়েছে কাফিরদেরকে উপলক্ষ করে। আমরা আল্লাহ তা‘আলার কাছে সকল প্রকার বক্রতা, ভ্রষ্টতা ও নাস্তিকতা থেকে আশ্রয় চাই।

>
[1] হায়াতুল কুলুব (حيات القلوب), ২য় খণ্ড, পৃ. ৮৪৬; আবার এই বর্ণনাটি ফুরু‘উল কাফী (فروع الكافي), ২য় খণ্ড, রওযা অধ্যায় বিদ্যমান আছে।

[2] হায়াতুল কুলুব (حيات القلوب), ২য় খণ্ড, পৃ. ৮৬৬

[3] হায়াতুল কুলুব (حيات القلوب), ২য় খণ্ড, পৃ. ৮৬৫
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে