শির্ক কী ও কেন? প্রথম অধ্যায় ড. মুহাম্মদ মুয্‌যাম্মিল আলী ১ টি

পাপ মূলত দু’প্রকারঃ একটি বড় আর অপরটি ছোট। আবার বড় পাপের রয়েছে অনেক প্রকার। তবে আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দৃষ্টিতে তন্মধ্যে তিনটি পাপ হচ্ছে সবচেয়ে গুরুতর। আবু বকরাঃ নুফাই‘ ইবন হারিছ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :

«أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِأَكْبَرِ الكَبَائِرِ؟» ثَلاَثًا، قَالُوا: بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَالَ: «الإِشْرَاكُ بِاللَّهِ، وَعُقُوقُ الوَالِدَيْنِ - وَجَلَسَ وَكَانَ مُتَّكِئًا فَقَالَ - أَلاَ وَقَوْلُ الزُّورِ»، قَالَ: فَمَا زَالَ يُكَرِّرُهَا حَتَّى قُلْنَا: لَيْتَهُ سَكَت

‘‘হে আমার সহচরগণ! আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় অপরাধ সম্পর্কে সংবাদ দেব’’? ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথাটি তিনবার বলেন। আমরা বললাম : হে আল্লাহর রাসূল আপনি বলুন।‘‘তিনি বললেন : সবচেয়ে বড় ও মারাত্মক পাপের কাজ হচ্ছে আল্লাহ তা‘আলার সাথে কাউকে শরীক করা এবং পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া’’। এ কথা বলার পর তিনি পিঠ হেলান দেয়া থেকে সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেন : ‘‘মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করা’’। ‘‘তিনি এ কথাটি বারবার বলতে থাকলে আমরা মনে মনে ভাবলাম, হায় যদি তিনি নীরব হতেন।’’[1]

এ-হাদীসে যে তিনটি অপরাধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তন্মধ্যে পরিণতির দিক থেকে আল্লাহ তা‘আলার সাথে শির্ক করা হচ্ছে সর্বাধিক মারাত্মক অপরাধ। যারা এ অপরাধ করে তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলার পরিষ্কার কথা হচ্ছে- তিনি কস্মিনকালেও তাদের প্রতি করুণার দৃষ্টিতে দেখবেন না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন :

﴿ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَغۡفِرُ أَن يُشۡرَكَ بِهِۦ وَيَغۡفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَآءُ﴾ [النساء: ٤٨]

‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সাথে শরীক করা হলে তিনি কখনও তা ক্ষমা করেন না, (তবে) এর চেয়ে নিম্নমানের অপরাধ হলে তিনি যাকে ইচ্ছা (তা) ক্ষমা করেন।’’[2] উপর্যুক্ত আয়াতের মর্মের প্রতি লক্ষ্য করলে প্রতীয়মান হয় যে, মানুষ যে সব অপরাধ করে আল্লাহ তা‘আলার দৃষ্টিতে পরিণতির দিক থেকে তন্মধ্যে শির্কই হচ্ছে সবচেয়ে মারাত্মক অপরাধ। একটি শির্কমূলক অপরাধ একজন মুসলিমের জন্য পরিণতির দিক থেকে অত্যন্ত ভয়াবহ হওয়ায় দেশের মুসলিম জনগণকে এ জঘন্য অপরাধ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে অবগত করানো একান্ত প্রয়োজন। আর এ- প্রয়োজনীয়তাকে সামনে রেখেই আলোচ্য অধ্যায়কে মোট পাঁচটি পরিচ্ছেদে বিভক্ত করা হয়েছে।

وما توفيقي إلا بالله

>
[1]. আল-বুখারী, ‘আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবন ঈসমাঈল, আস-সহীহ; সম্পাদনা : ড. মুস্তফা আদীব আল-বাগা, (বৈরুত : দ্বার ইবনে কাছীর আল-ইয়ামামা : ৩য় সংস্করণ, ১৯৮৭ খ্রি.), কিতাবুস শাহাদাত, বাব নং ১০, হাদীস নং- ২৫১০, ২/৯৩৯ ; আল-ক্বুশাইরী, মুসলিম ইবন হাজ্জাজ, আস-সহীহ; সম্পাদনা : মুহাম্মদ ফুআদ ‘আব্দুল বাক্বী, (বৈরুত : দ্বার এহইয়াউত তুরাছিল ‘আরাবী, সংস্করণ বিহীন, সন বিহীন), কিতাবুল ঈমান, বাবু বয়ানিল কাবাইর , ১/৯৩।

[2] . আল-কুরআন, সূরা আন-নিসা : ৪৮।
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে