জীবিত মানুষের দো‘আর ওসীলা দু’ভাবে গ্রহণ করা যেতে পারে :
এক, কোনো জীবিত মানুষের কাছে গিয়ে এ কথা বলা যেতে পারে যে, আমি অমুক সমস্যায় পতিত হয়েছি, আপনি আমার জন্য এ মুহূর্তে আল্লাহর কাছে একটু দো‘আ করুন। এ ধরনের দো‘আ কামনা করার বিষয়টি হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। যা আমরা একটু পরে বর্ণনা করবো।
দুই, কোনো জীবিত মানুষের নিকট গিয়ে এ মর্মে দো‘আ কামনা করা যেতে পারে যে, আপনি আমার জন্য দো‘আ করবেন। দো‘আকারী যদি অসাক্ষাতে দো‘আ করেন, তা হলে তার দো‘আ আল্লাহ তা‘আলার নিকট মঞ্জুর হওয়ার অধিক সম্ভাবনার কথা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। উম্মুদ দরদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
«دَعْوَةُ الْمَرْءِ الْمُسْلِمِ لاَخِيْهِ بِظَهْرِ الْغَيْبِ مُسْتَجَابَةٌ...»
‘‘একজন মুসলিম ভাইয়ের জন্য তার অসাক্ষাতে মুসলিম ব্যক্তির দো‘আ মকবূল হয়ে থাকে।’’[1]তবে এ ধরনের দো‘আ কামনা যে শুধু সাধারণ লোকেরাই কেবল সৎ লোকজনের নিকটেই চাইবে তা নয়, বরং একজন মর্যাদাবান ব্যক্তিও তাঁর চেয়ে কম মর্যাদাবান ব্যক্তির নিকটে তা চাইতে পারেন। এমন দো‘আ চাওয়ার প্রচলন স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেই প্রমাণিত। একদা ‘উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু ‘উমরা পালন উপলক্ষে মক্কায় যাওয়ার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট অনুমতি চাইলে তিনি তাঁকে অনুমতি দানপূর্বক বলেন : ‘‘ভাই! (সফরের অবস্থায় যখন তুমি দো‘আ করবে তখন) তোমার নেক দো‘আ থেকে আমাদের ভুলে যেও না।’’[2] এটি হচ্ছে জীবিত মানুষের দো‘আর ওসীলা গ্রহণের একটি সঠিক পদ্ধতি। এতে প্রমাণিত হয় যে, একজন সাধারণ মানুষ যেমন একজন ওলি ও পীর সাহেবের নিকট দো‘আ কামনা করতে পারে, তেমনি একজন পীর সাহেবও একজন সাধারণ মানুষের নিকট দো‘আ চাইতে পারেন। কোনো পীর সাহেব যে মানুষের জন্য দো‘আ করার এজেন্সী নিয়ে বসে থাকবেন বিষয়টি এমন নয়।
>[2] . আবু দাউদ, প্রাগুক্ত; সালাত অধ্যায়, বাবুদ দু‘আ; ২/১৬৯; হাদীসটি ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহ থেকে বর্ণিত। কুরতুবী, প্রাগুক্ত; ১২/৩২১। (তবে হাদীসটির সনদ দুর্বল, [সম্পাদক])