জিন-পরী ও দেও-দানবসহ যাবতীয় অনিষ্টকারীদের অনিষ্টের হাত থেকে বাঁচার জন্য একজন মু’মিনের করণীয় হচ্ছে পারতপক্ষে সর্বদা পবিত্র থাকার চেষ্টা করা এবং জিনের আশ্রয় কামনা করার বদলে বিভিন্ন দো‘আ-কালাম পাঠ করে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া; কেননা যে কোনো বিপদ থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা হচ্ছে তাঁর একটি বিশেষ ধরনের উপাসনা। কিন্তু দেশের গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মুসলিমদের দেখা যায়, মাছ ধরার জন্য কোনো পুকুর বা বিল সেচ করলে তারা সেচ কাজ আরম্ভ করার পূর্বে দুষ্ট জিন যাতে মাছ অন্যত্র সরিয়ে না নেয়, সে জন্য পুকুর বা বিলের পারে শিরনী তৈরী করে নিকটস্থ কোনো গাছের নিচে এর কিছু অংশ রেখে দেন এবং এর মাধ্যমে পুকুর বা বিলের পার্শ্ববর্তী জিনের সন্তুষ্টি কামনা করেন ও তার অনিষ্ট হতে বাঁচার জন্য তার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করেন।
এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে মুকাম নামে পরিচিত এমন কিছু পুরাতন গাছপালাবিশিষ্ট স্থানও রয়েছে যেখানে জিনের অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য লোকেরা সেখানকার কোনো বড় গাছের নিচে হালুয়া ও শিরনী দিয়ে থাকে। এ জাতীয় কর্মের প্রচলন সিলেট জেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে অধিকহারে রয়েছে। লোকেরা যেন এ কর্মের দ্বারা জিনের অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়ার বদলে জিনের কাছেই আশ্রয় কামনা করে থাকে। এ জাতীয় কর্মকে হিন্দু ধর্মের অনুসারীদের মনসা পূজার সাথে তুলনা করা যায়, যা তারা মনসা দেবী নামে এক কাল্পনিক দেবীর সন্তুষ্টির জন্য উপাসনালয়ের গাছতলায় খাবার রাখার মাধ্যমে করে থাকে।