যারা ওলীদেরকে সাধারণ মানুষের ইহ-পরকালীন কল্যাণের ক্ষেত্রে অনেক কিছু করতে পারেন বলে মনে করে, তাঁদেরকে নিকট ও দূর থেকে আহ্বান করে এবং মনে করে যে, তাঁরা তাদের এ সব আহ্বান শ্রবণ করতে পারেন। কিন্তু মহান আল্লাহ তাদের এ ভ্রান্ত ধারণা খণ্ডন পূর্বক বলেন :
﴿ وَٱلَّذِينَ يَدۡعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ لَا يَخۡلُقُونَ شَيۡٔٗا وَهُمۡ يُخۡلَقُونَ ٢٠ أَمۡوَٰتٌ غَيۡرُ أَحۡيَآءٖۖ وَمَا يَشۡعُرُونَ أَيَّانَ يُبۡعَثُونَ ٢١ ﴾ [النحل: ٢٠، ٢١]
‘‘আল্লাহকে ব্যতীত তারা যাদেরকে আহ্বান করে তারা কিছুই সৃষ্টি করে না অথচ তাদের সৃষ্টি করা হয়। তারা মৃত, জীবিত নয়, আর তারা কবে পুনরুজ্জীবিত হবে তা অনুধাবন করতে পারে না।’’[1]আরবের মুশরিকরা উপর্যুক্ত ধারণার ভিত্তিতে ওয়াদ, সুয়া‘, ইয়াগুস, উয়া‘উক, নসর ও অন্যান্য যে সব ওলিদেরকে সাহায্যের জন্য আহ্বান জানাতো, সে সব অলিগণের বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে এ আয়াতে আলোকপাত করা হয়েছে এবং তাদেরকে এ কথা বলা হচ্ছে যে, তোমরা যাদেরকে উক্ত ধারণার ভিত্তিতে আহ্বান করছো, তারাতো তোমাদের সাহায্য করতে পারে না; কেননা, তারাতো মৃত। আর মৃতরা কিছুই শ্রবণ করতে পারে না। পৃথিবীতে কে কী করছে, এখানে কখন কী ঘটছে, কখন মহাপ্রলয় ঘটার পর তাঁরা পুনরুজ্জীবিত হবে, এ সব ব্যাপারে তাঁদের কোনই অনুভূতি নেই।
এই যদি হয় মুশরিকদের আহ্বানকৃত অলিগণের অবস্থা, তা হলে সাধারণ মুসলিমরা যে সব ওলিগণ কে উক্ত ধারণার ভিত্তিতে আহ্বান করে থাকে, তাঁদের অবস্থা যে এর ব্যতিক্রম হবে না, তা বলা-ই বাহুল্য। বস্তুত মরে যাবার পর তাঁদের রূহের দ্বারা তাঁরা নিজেরা এবং অপর কেউ উপকৃত হতে পারবে না কেননা, রূহের দ্বারা রূহ নিজের বা অপর কারো উপকার করার জন্য রূহের সাথে জীবন্ত দেহের সহঅবস্থান একান্ত প্রয়োজন। দেহ যখন মরে যায় তখন রূহের জীবিত থাকা আর না থাকা উভয়ই সমান হয়ে যায়। দেহ মরে যাওয়ার ফলে রূহকে হাজারো আহ্বান করলেও তা স্বাভাবিক নিয়মানুযায়ী কিছুই শ্রবণ করতে পারে না। তখন তা কারো কোনো উপকারও করতে পারে না।
والله أعلم