উপর্যুক্ত উভয় প্রকার দু‘আ আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত কোনো মানুষের নিকট চাওয়া যায় না। কেননা, তা আল্লাহর ইবাদাত-উপাসনার অন্তর্গত বিষয়। সে জন্য তিনি তা কেবল তাঁর কাছেই চাওয়ার নির্দেশ করে বলেন,
﴿وَقَالَ رَبُّكُمُ ٱدۡعُونِيٓ أَسۡتَجِبۡ لَكُمۡۚ ﴾ [غافر: ٦٠]
“আর তোমাদের প্রতিপালক বলেছেন: তোমরা আমাকে আহ্বান কর, আমি তোমাদের আহ্বানে সাড়া দেব।’’[1]
আবার দু‘আ যে বিনয়ের সাথে করতে হবে, সে সম্পর্কে বলেছেন,
﴿ ٱدۡعُواْ رَبَّكُمۡ تَضَرُّعٗا وَخُفۡيَةًۚ إِنَّهُۥ لَا يُحِبُّ ٱلۡمُعۡتَدِينَ ٥٥ ﴾ [الاعراف: ٥٥]
“তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে বিনয় ও চুপিসারে আহ্বান কর, নিশ্চয় তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না’’।[2]
উক্ত আয়াত দু’টি দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, আমাদের জীবনের যে সব কল্যাণ দান বা অকল্যাণ দূরীকরণ কোনো মানুষ করতে পারে না তা বিনয়ের সাথে কেবল আল্লাহ তা‘আলার নিকটেই চাইতে হবে। এ জন্য কর্মের প্রয়োজন হলে কর্মের তৌফিকও তাঁর নিকটেই কামনা করতে হবে। তা না করে আমরা যদি জীবিত বা মৃত কোনো পীর বা অলির নিকটে তা কামনা করি, অথবা মৃত কোনো অলিকে এ জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করতে বলি, তা হলে এতে আল্লাহর রুবূবিয়্যাত ও উলূহিয়্যাতে শির্ক হবে। রুবূবিয়্যাতে শির্ক হবে এ জন্যে যে, আমরা আল্লাহর রুবূবিয়্যাতের আওতাধীন বিষয়কে তাঁদের নিকটে আছে বলে বিশ্বাস করছি। আর উলূহিয়্যাতে শির্ক হবে এ জন্যে যে, আমরা শুধু আল্লাহ তা‘আলাকে আহ্বান করার স্থানে অন্যকে আহ্বান করছি।
যারা আল্লাহ তা‘আলাকে ব্যতীত অপর কাউকে আহ্বান করে, অপরের নিকট অনুশোচনা ও বিনয় প্রকাশ করে, তারা আল্লাহকে ব্যতীত অপরকেই তাদের ইলাহ বানিয়ে নেয়। এমন লোকদের পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,
﴿ وَمَن يَدۡعُ مَعَ ٱللَّهِ إِلَٰهًا ءَاخَرَ لَا بُرۡهَٰنَ لَهُۥ بِهِۦ فَإِنَّمَا حِسَابُهُۥ عِندَ رَبِّهِۦٓۚ إِنَّهُۥ لَا يُفۡلِحُ ٱلۡكَٰفِرُونَ ١١٧ ﴾ [المؤمنون: ١١٧]
“যে আল্লাহর সাথে অপর কোনো ইলাহকে আহ্বান করে যে আহ্বানের বৈধতার পিছনে তার নিকট কোন দলীল প্রমাণ নেই, তার এ-আহ্বানের হিসাব রয়েছে তার প্রতিপালকের নিকট, বস্তুত কাফিরগণ কোন অবস্থাতেই কৃতকার্য হতে পারে না।’’[3]
>[2].আল-কুরআন, সূরা আ‘রাফ : ৫৫।
[3]. আল-কুরআন, সূরা গাফির : ৪০।