যৌবনের জ্বালা মিটাবার জন্য এক শ্রেণীর যুবক তারই মত একজন যুবক অথবা কিশোরকে ব্যবহার করে থাকে, যেমন যুবতী করে থাকে তারই মত কোন যুবতী অথবা কিশোরীকে ব্যবহার! এ কাজও বড় অশ্লীল এবং রুচিবিরুদ্ধ নোংরা। যৌবনের উন্মাদনায় অথবা নিছক খেয়াল-খুশী ও কুপ্রবৃত্তির বশবর্তী হয়ে নীচরা এমন নীচতা অবলম্বন করে থাকে। অথচ তা হল ব্যভিচারের মত একটি কাবীরা গোনাহ।
এই পাপের জন্য হযরত লুত (আঃ) এর সম্প্রদায়কে চার প্রকার আযাব ও শাস্তি দিয়ে ধংস করে দেওয়া হয়েছিল।
প্রথমতঃ তাদেরকে কানা করে দেওয়া হয়েছিল। (সূরা ক্বামার ৩৭ আয়াত)
দ্বিতীয়তঃ তাদের মাঝে ভীষণ এক শব্দ প্রেরণ করা হয়েছিল। (সূরা হিজর ৭৩ আয়াত)
তৃতীয়তঃ তাদের গ্রাম-শহরকে উল্টে দিয়ে উধৃভাগকে নিয়ে করে দেওয়া হয়েছিল।
চতুর্থতঃ তাদের উপর ক্রমাগত কাকর-পাথর বর্ষণ করে তাদেরকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। “যার প্রতিটি তোমার প্রতিপালকের নিকট চিহ্নিত ছিল। আর তা সীমালংঘনকারীদের থেকে দুরেও নয়।” (সূরা হুদ ৮২-৮৩ আয়াত)
আল্লাহ তাআলা উক্ত নোংরা জাতিকে ফাসেক ও সীমালংঘনকারী বলে অভিহিত করেছেন। তিনি নবী লুত (আঃ) এর উক্তি উল্লেখ করে বলেন, “তোমরা সারা জাহানের মানুষের মধ্যে কেবল পুরুষদের সাথে যৌন-মিলন কর এবং তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের জন্য যে স্ত্রীগণকে সৃষ্টি করেছেন- তা বর্জন কর? বরং তোমরা হলে সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়।” (সূরা শুআরা ১৬৫-১৬৬ আয়াত) তিনি আরো বলেন, “লুতকে আমি প্রজ্ঞা ও জ্ঞান দান করেছিলাম এবং তাকে এমন এক জনপদ থেকে উদ্ধার করেছিলাম, যার অধিবাসীরা অশ্লীল কাজে লিপ্ত ছিল। ওরা ছিল মন্দ ও ফাসেক সম্প্রদায়।” (সূরা আম্বিয়া ৭৪ আয়াত)
আর মহানবী (সা.) বলেন, “সে ব্যক্তি অভিশপ্ত, যে ব্যক্তি লুত (আঃ) এর সম্প্রদায়ের মত সমকাম করে।” (আহমাদ, সহীহুল জামে ৫৮৯১ নং) তিনি আরো বলেন, “তোমরা যে ব্যক্তিকে লুত নবীর উম্মতের মত সমকামে লিপ্ত পাবে সে ব্যক্তি ও তার সহকর্মীকে হত্যা করে ফেলো।” (আহমদ, আবু দাউদ ৪৪৬২, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ ২৫৬১, বাইহাকীর শুআবুল ঈমান, সহীহুল জামে ৬৫৮৯নং)।
তিনি আরো বলেন, “আল্লাহ আয্যা অজাল্ল (কিয়ামতের দিন) সেই ব্যক্তির দিকে চেয়েও দেখবেন না, যে ব্যক্তি কোন পুরুষের মলদ্বারে অথবা কোন স্ত্রীর পায়খানা-দ্বারে সঙ্গম করে।” (তিরমিযী, ইবনে হিব্বান, নাসাঈ, সহীহুল জামে ৭৮০ ১নং)
পায়ু-মৈথুন বা সমকামগ্রস্ত যুবক এমন নিকৃষ্ট ও বিকৃত-চরিত্রের যে, সে হালাল যৌনমিলনে তৃপ্তি পায় না, হারাম ছাড়া তার আশা মিটে না, নোংরামি না করে তার মনে শান্তি আসে না, স্বস্তি আসে না। এই জন্য এর অভ্যাসী বিয়ের পরেও স্ত্রীর পায়ুমৈথুন ছাড়া সাধারণ সহবাসে ততটা তৃপ্তি পায় না। অথচ স্ত্রীর পায়ুমৈথুন হল এক প্রকার কুফরী কাজ।
বাস্তবপক্ষে এমন অতৃপ্তিবোধ হল তার জন্য এক প্রকার শাস্তি। এ ছাড়া এডস প্রভৃতি যৌনরোগ তো আছেই। সুতরাং জ্ঞানী যুবককে সতর্ক হওয়া উচিত, যাতে সে অনুরূপ কোন হতভাগ্যদের দলভুক্ত হয়ে পড়ে।