নবীদের কাহিনী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) - মাদানী জীবন ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব ১ টি
ইয়ামামার খ্রিষ্টান শাসক হাওযাহ বিন আলীর নিকটে পত্র(الكتاب إلى هَوْذَة بن على صاحب اليمامة)

পত্রবাহক সালীত্ব বিন ‘আমর আল-‘আমেরী (রাঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর মোহরাংকিত পত্র নিয়ে সরাসরি প্রাপকের হাতে সমর্পণ করেন। পত্রটি ছিল নিম্নরূপ:

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْمِ، مِنْ مُحَمّدٍ رَسُولِ اللهِ إلَى هَوْذَةَ بْنِ عَلِيِّ سَلاَمٌ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى وَاعْلَمْ أَنَّ دِينِي سَيَظْهَرُ إلَى مُنْتَهَى الْخُفِّ وَالْحَافِرِ فَأَسْلِمْ تَسْلَمْ وَأَجْعَلْ لَكَ مَا تَحْتَ يَدَيْكَ-

‘... আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদের পক্ষ হ’তে হাওযাহ বিন আলীর প্রতি। শান্তি বর্ষিত হৌক ঐ ব্যক্তির উপরে যিনি হেদায়াতের অনুসরণ করেন। আপনি জানুন যে, আমার দ্বীন বিজয়ী হবে যতদূর উট ও ঘোড়া যেতে পারে। অতএব আপনি ইসলাম কবুল করুন, নিরাপদ থাকুন। আপনার অধীনস্থ এলাকা আপনাকে প্রদান করব’।

ওয়াক্বেদী বর্ণনা করেন, এই সময় দামেষ্কের খ্রিষ্টান নেতা উরকূন (أُرْكُون) হাওযাহর নিকটে বসে ছিলেন। তিনি তাকে শেষনবী (ছাঃ) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে হাওযাহ বলেন, তাঁর চিঠি আমার কাছে এসেছে। তিনি আমাকে ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন। কিন্তু আমি আমার ধর্মে দৃঢ় থাকতে চাই। তাছাড়া আমি আমার জাতির নেতা। যদি আমি তাঁর অনুসারী হই, তাহ’লে নেতৃত্ব হারাবো’। উরকূন বললেন, হ্যাঁ। তবে আল্লাহর কসম! যদি আপনি তাঁর অনুসারী হন, তাহ’লে অবশ্যই তিনি আপনাকে শাসন ক্ষমতায় রাখবেন। অতএব আপনার জন্য কল্যাণ রয়েছে তাঁর আনুগত্যের মধ্যে। নিশ্চয়ই তিনি সেই আরবী নবী, যার সুসংবাদ দিয়ে গেছেন ঈসা ইবনে মারিয়াম। আর আমাদের ইনজীলেও লিখিত আছে, মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ’।

অতঃপর হাওযাহ পত্রবাহককে যথাযোগ্য আতিথ্য ও সম্মান প্রদর্শন করেন এবং পত্রের জওয়াবে তিনি লেখেন-

مَا أَحْسَنَ مَا تَدْعُو إلَيْهِ وَأَجْمَلَهُ وَالْعَرَبُ تَهَابُ مَكَانِي فَاجْعَلْ إلَيَّ بَعْضَ الْأَمْرِ أَتْبَعُكَ-

‘কতই না সুন্দর ও উত্তম বিষয়ের দিকে আপনি আমাকে আহবান জানিয়েছেন। আরব জাতি আমার উঁচু স্থানকে ভীতির চোখে দেখে। অতএব আপনার রাজত্বের কিছু অংশ আমাকে দান করুন, তাহ’লে আপনার আনুগত্য করব’। রাসূল (ছাঃ) তাতে অস্বীকার করেন। ফলে সে নিজে ধ্বংস হ’ল এবং যেটুকু তার অধীনে ছিল তাও হারালো’ (যাদুল মা‘আদ পৃঃ ৩/৬০৭-৬০৮)। অর্থাৎ নেতৃত্ব চেয়ে নেওয়াটাই ছিল তার ধ্বংসের কারণ ।