রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মাদানী জীবনকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা যেতে পারে।-
এক. ১ম হিজরী সনের ১২ই রবীউল আউয়াল মোতাবেক ৬২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৩শে সেপ্টেম্বর সোমবার হ’তে ৬ষ্ঠ হিজরীর যুলক্বা‘দাহ মাসে অনুষ্ঠিত হোদায়বিয়ার সন্ধি পর্যন্ত প্রায় ছয় বছর। এই সময় কাফের ও মুনাফিকদের মাধ্যমে ভিতরে ও বাইরের চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ও সশস্ত্র হামলা সমূহ সংঘটিত হয়। ইসলামকে সমূলে উৎপাটিত করার জন্য এ সময়ের মধ্যে সর্বমোট ৫০টি ছোট-বড় যুদ্ধ ও অভিযান সমূহ পরিচালিত হয়।
দুই. মক্কার মুশরিকদের সাথে সন্ধি চলাকালীন সময়। যার মেয়াদকাল ৬ষ্ঠ হিজরীর যুলক্বা‘দাহ হ’তে ৮ম হিজরীর রামাযান মাসে মক্কা বিজয় পর্যন্ত প্রায় দু’বছর। এই সময়ে প্রধানতঃ ইহূদী ও তাদের মিত্রদের সাথে বড়-ছোট ২২টি যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
তিন. ৮ম হিজরীতে মক্কা বিজয়ের পর হ’তে ১১ হিজরীতে রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যু পর্যন্ত প্রায় তিন বছর। এই সময়ে দলে দলে লোকেরা ইসলামে প্রবেশ করতে থাকে। চারদিক থেকে গোত্রনেতারা প্রতিনিধিদল নিয়ে মদীনায় এসে ইসলাম গ্রহণ করেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বিদেশী রাজন্যবর্গের নিকটে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে দূত মারফত পত্র প্রেরণ করেন। এ সময় হোবল, লাত, মানাত, ‘উযযা, সুওয়া‘ প্রভৃতি প্রসিদ্ধ মূর্তিগুলি ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এই সময়ে হোনায়েন যুদ্ধ এবং রোম সম্রাট হেরাক্লিয়াসের বিরুদ্ধে তাবূক যুদ্ধে গমন ও সর্বশেষ সারিইয়া উসামা প্রেরণ সহ মোট ১৮টি মিলে মাদানী জীবনের ১০ বছরে ছোট-বড় প্রায় ৯০টি যুদ্ধ ও অভিযানসমূহ পরিচালিত হয়। অবশেষে সব বাধা অতিক্রম করে ইসলাম রাষ্ট্রীয় রূপ পরিগ্রহ করে এবং তৎকালীন বিশ্বের পরাশক্তি সমূহকে চ্যালেঞ্জ করে টিকে থাকার মত শক্তিশালী অবস্থানে উপনীত হয়।
এক্ষণে আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর হিজরত কালীন সময়ে মদীনার সামাজিক অবস্থা ও সে প্রেক্ষিতে রাসূল (ছাঃ)-এর গৃহীত কার্যক্রমসমূহ একে একে আলোচনা করব।