কাফির মুশরিকদের সাথে বন্ধুত্ব না করাটাও ঈমানের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলা বলেছেন,
لَّا يَتَّخِذِ الْمُؤْمِنُونَ الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاءَ مِن دُونِ الْمُؤْمِنِينَ ۖ وَمَن يَفْعَلْ ذَٰلِكَ فَلَيْسَ مِنَ اللَّهِ فِي شَيْءٍ إِلَّا أَن تَتَّقُوا مِنْهُمْ تُقَاةً
মুমিনগণ যেন ঈমানদারদের পরিবর্তে কাফিরদেরকে নিজেদের বন্ধু ও পৃষ্ঠপোষক রূপে গ্রহণ না করে। যে এরূপ করবে তার সাথে আল্লাহর কোনও সম্পর্ক থাকবে না। অবশ্য তাদের নির্যাতন থেকে বাচার জন্য এরূপ করলে আল্লাহ্ মাফ করবেন।[১]
অন্য জায়গায় কাফিরদের সাথে সম্পর্ক রাখা তো দূরের কথা তাদের সাথে সংগ্রাম চালিয়ে যাবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে,
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ وَالْمُنَافِقِينَ وَاغْلُظْ عَلَيْهِمْ
‘হে নবী! কাফির এবং মুনাফিকদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যান, আর তাদের সম্পর্কে কঠোর নীতি অবলম্বন করুন।[২]
আরও বলা হয়েছে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قَاتِلُوا الَّذِينَ يَلُونَكُم مِّنَ الْكُفَّارِ وَلْيَجِدُوا فِيكُمْ غِلْظَةً
“হে ঈমানদার লোকেরা! লড়াই করো সেইসব কাফিরদের বিরুদ্ধে যারা তোমাদের কাছাকাছি রয়েছে। তারা যেন তোমাদের মধ্যে দৃঢ়তা ও কঠোরতা দেখতে পায়।[৩]
সূরা আল মুমতাহিনা-এ বলা হয়েছে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا عَدُوِّي وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَاءَ تُلْقُونَ إِلَيْهِم بِالْمَوَدَّةِ وَقَدْ كَفَرُوا بِمَا جَاءَكُم مِّنَ الْحَقِّ يُخْرِجُونَ الرَّسُولَ وَإِيَّاكُمْ ۙ أَن تُؤْمِنُوا بِاللَّهِ رَبِّكُمْ إِن كُنتُمْ خَرَجْتُمْ جِهَادًا فِي سَبِيلِي وَابْتِغَاءَ مَرْضَاتِي
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা যদি সংগ্রাম করার জন্য এবং আমার সন্তোষ লাভের আশায় বের হয়ে থাকো তাহলে আমার ও তোমাদের যারা শত্রু তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা তো তাদের সাথে বন্ধুত্ব করো কিন্তু যে সত্য তোমাদের কাছে এসেছে তা মেনে নিতে তারা অস্বীকার করেছে। রাসূল ও তোমাদের নির্বাসিত করার যে আচরণ তারা শুরু করেছে তা এজন্য যে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে।[৪]
এতো গেল দূর সম্পর্কীয় কাফিরদের কথা। এবার বলা হয়েছে যাদের সাথে রক্তের বাঁধন রয়েছে তারাও যদি কুফরী করে, তাদের সাথে বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ক না রাখার জন্য। ইরশাদ হচ্ছে-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا آبَاءَكُمْ وَإِخْوَانَكُمْ أَوْلِيَاءَ إِنِ اسْتَحَبُّوا الْكُفْرَ عَلَى الْإِيمَانِ ۚ وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمْ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ
‘হে ঈমানদারেরা! নিজের পিতা এবং ভাইও যদি ঈমানের চেয়ে কুফরীকে বেশী ভালোবাসে তাদেরকেও বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। যে ব্যক্তিই এ ধরনের লোকদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে সেই যালিম হিসেবে গণ্য হবে।[৫]
আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে, রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বলেছেন,
اذا لقيم المشركين في الطريق فلا تبدءوهم بالسلام واضطروهم الى اضيقها
‘তোমরা যদি রাস্তা চলার সময় কোনো মুশরিককে দেখ তাহলে প্রথমে তাদের সালাম দেবে না। বরং তাদেরকে রাস্তার এক পাশ দিয়ে চলতে বাধ্য করবে।[৬]
আবু সাঈদ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে, আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন,
لاَ يَأْكُلْ طعَامَكَ إِلَّا تَقِيٌّ وَلاَ تُصَاحِبْ إِلَّا مُؤْمِنًا
মুত্তাকী ছাড়া কেউ যেন তোমার খাদ্য না খায় এবং ঈমানদার ছাড়া কেউ যেন তোমার সাথী না হয়।[৭]
[২]. সূরা আত তাওবা, আয়াত : ৭৩।
[৩]. সূরা আত তাওবা, আয়াত : ১২৩।
[৪]. সূরা আল মুমতাহিনা, আয়াত : ১।
[৫]. সূরা আত তাওবা, আয়াত : ২৩।
[৬]. সহীহ মুসলিম।
[৭]. হাফিয সুয়ূতী এ হাদীসটি জামিউস সগীর নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া ইমাম আহমদ, আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে হিব্বান এবং হাকিম স্ব স্ব গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন।