আল্লাহ্র প্রতি সু-ধারণা রাখা এবং তাঁর রহমতের প্রত্যাশী হওয়াও ঈমানের অন্যতম অংশ। মহান আল্লাহ বলেন,
يَرْجُونَ رَحْمَتَهُ وَيَخَافُونَ عَذَابَهُ
তারা আল্লাহর করুণা প্রত্যাশী আবার তার শাস্তির ভয়ে ভীত।[১]
আরও বলা হয়েছে,
إِنَّ رَحْمَتَ اللَّهِ قَرِيبٌ مِّنَ الْمُحْسِنِينَ
অবশ্যই আল্লাহর রহমত সচ্চরিত্র লোকদের কাছাকাছি রয়েছে।[২]
সূরা আয-যুমারে বলা হয়েছে
قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَىٰ أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا ۚ إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
‘আপনি বলে দিন, (মহান আল্লাহ্ বলেন) হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের সাথে বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে তারা আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহ থেকে নিরাশ হয়ো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেবেন। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল, দয়াবান।”[৩]
তবে শর্ত হচ্ছে আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলীর মত আর কাউকে যেন অনুরূপ সত্তা ও গুণাবলীর অধিকারী মনে না করা হয়। ইরশাদ হচ্ছে-
إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَاءُ
“আল্লাহ্ কেবল শিরকের গুনাহ মাফ করেন না, তাছাড়া যত গুনাহ্ আছে, চাইলে। তিনি মাফ করে দেবেন।[৪]
সহীহ আল বুখারী ও সহীহ মুসলিমে আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, নবী করীম (সা.) বলেছেনঃ
لَوْ يَعْلَمُ الْمُؤْمِنُ مَا عِنْدَ اللَّهِ مِنَ الْعُقُوبَةِ مَا طَمِعَ بِجَنَّتِهِ أَحَدٌ وَلَوْ يُعْلَمُ الْكَافِرُ مَا عِنْدَ اللَّهِ مِنَ الرَّحْمَةِ مَا قَنَطَ مِنْ جَنَّتِهِ أَحَدٌ
‘আল্লাহর কাছে কী ভয়াবহ শাস্তি রয়েছে তা যদি ঈমানদারগণ জানতো তাহলে কেউ আল্লাহর কাছে জান্নাতের প্রত্যাশা করতে সাহস পেতো না। আর আল্লাহ্ যে কী পরিমাণ দয়ার সাগর তা যদি কাফিররা জানতো, তাহলে কেউ তাঁর জান্নাতের ব্যাপারে নিরাশ হতো না।[৫]
সহীহ মুসলিমে জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত আরেক হাদীসে বলা হয়েছে, নবী করীম (সা.)-এর মৃত্যুর তিন দিন আগে আমি তাকে বলতে শুনেছি,
لاَ يَمُوتَنّ أَحَدُكُم إِلاَّ وَهُوَ يُحْسِنُ الظَّنَّ باللَّه
‘তোমাদের প্রত্যেকেই যেন মৃত্যুর সময় আল্লাহর প্রতি ভালো ধারণা রেখে মৃত্যু বরণ করে।'[৬]
সহীহ্ আল বুখারী ও সহীহ্ মুসলিমে বর্ণিত আবু হুরাইরা (রাঃ)-এর আরেক হাদীসে বলা হয়েছে, রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বলেছেন,
يقول الله عز وجل أنا عند ظن عبدي بي وأنا معه حين يذكرني
আল্লাহ্ আয্যা ওয়া জাল্লা ইরশাদ করেন, বান্দা আমাকে যে রকম মনে করে, আমাকে সে সেইভাবেই পায়। আর যেখানেই সে আমাকে স্মরণ করে আমি তার সাথেই থাকি।[৭]
[২]. সূরা আল আ'রাফ, আয়াত : ৫৬।
[৩]. সূরা আয যুমার, আয়াত : ৫৩।
[৪]. সূরা আন নিসা, আয়াত : ৪৮।
[৫]. সহীহ আল বুখারী; সহীহ মুসলিম, তাওবা অধ্যায় (হাদীস-৬৭২৬)।
[৬]. সহীহ মুসলিম, হাদীস-৬৯৬০, অধ্যায় : জান্নাত, জান্নাতের নি'আমত ও অধিবাসীদের বর্ণনা।
[৭]. সহীহ আল বুখারী, তাওহীদ অধ্যায়; সহীহ মুসলিম, তাওবা অধ্যায় (হাদীস-৬৭০০)।