আযাবের কঠিনতায় জাহান্নামীরা ভীষণ চীৎকার ও আর্তনাদ করতে থাকবে। (আল-কুরআন ১১/১০৬) কিন্তু ওরা তো স্থায়ীভাবে জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করবে। ওদের শাস্তি লাঘব করা হবে না এবং ওরা শাস্তি ভোগ করতে করতে হতাশ হয়ে পড়বে। (আল-কুরআন ৪৩/৭৪-৭৫)

ওদের মৃত্যুরও আদেশ দেওয়া হবে না, যে ওরা মরবে। ওরা আর্তনাদ করে বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে নিষ্কৃতি দাও, আমরা সৎকাজ করব পুর্বে যা করতাম, তা আর করব না। আল্লাহ বলবেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে এত দীর্ঘ জীবন দান করিনি যে, তখন কেউ সতর্ক হতে চাইলে সতর্ক হতে পারত? তোমাদের নিকটে তো সতর্ককারীও এসেছিল। সুতরাং শাস্তি আস্বাদন কর; যালেমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই।” (আল-কুরআন ৩৫/৩৬-৩৭)।

ওরা আরো বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক! দুর্ভাগ্য আমাদেরকে ঘিরে ছিল এবং আমরা পথভ্রষ্ট হয়েছিলাম। হে আমাদের প্রতিপালক! এ অগ্নি হতে আমাদেরকে উদ্ধার কর, অতঃপর আমরা যদি পুনরায় কুফরী (অবিশ্বাস) করি, তবে তো আমরা অবশ্যই সীমা লংঘনকারী (যালেম) হব। আল্লাহ বলবেন, তোরা হীন অবস্থায় এখানেই থাক এবং আমার সঙ্গে কোন কথা বলিস না। আমার বান্দাদের মধ্যে একদল ছিল যারা বলত, হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা ঈমান এনেছি (বিশ্বাস স্থাপন করেছি) তুমি আমাদের ক্ষমা কর ও দয়া কর, তুমি সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। কিন্তু তাদেরকে (মুমিন দলকে) নিয়ে তোমরা উপহাস (ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ) করতে এত বিভোর ছিলে যে, তা তোমাদেরকে আমার কথা ভুলিয়ে দিয়েছিল। তোমরা তো তাদের (ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের)কে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করতে। আমি আজ তাদের ধৈর্যের কারণে তাদেরকে এমনভাবে পুরস্কৃত করলাম যে, তারাই হল সফলকাম।” (আল-কুরআন ২৩/১০৬-১১০)

“যখন হস্তপদ শৃঙ্খলিত অবস্থায় ওদেরকে তার কোন সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, তখন ওরা সেখানে ধ্বংস কামনা করবে। (ওদেরকে বলা হবে,) আজ তোমরা একবারের জন্য ধ্বংস কামনা করো না; বরং বহুবার ধ্বংস কামনা করতে থাক।” (সূরা ফুরক্বানঃ ১৩-১৪ আয়াত)।

“যখন ওরা জাহান্নামে পরস্পর বিতর্কে লিপ্ত হবে, তখন দুর্বলেরা প্রবলদেরকে বলবে, আমরা তো তোমাদেরই অনুসারী ছিলাম, এখন কি তোমরা আমাদের থেকে জাহান্নামের আগুনের কিয়দংশ নিবারণ করবে?’

প্রবলেরা বলবে, আমরা সকলেই তো জাহান্নামে আছি, নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর দাসদের মাঝে ফায়সালা করে দিয়েছেন। জাহান্নামীরা জাহান্নামের প্রহরীদেরকে বলবে, 'তোমাদের প্রতিপালককে বল, তিনি যেন আমাদের নিকট থেকে একদিনের শাস্তি লাঘব করেন। তারা বলবে, তোমাদের নিকট কি স্পষ্ট নিদর্শনাবলী সহ তোমাদের রসুলগণ আসেনি?” (জাহান্নামীরা) বলবে, 'অবশ্যই এসেছিল। (প্রহরীরা) বলবে, তবে তোমরা প্রার্থনা করতে থাক। আর সত্যপ্রত্যাখ্যানকারীদের প্রার্থনা ব্যর্থই হয়। (সুরা মু'মিনঃ ৪৭-৫০ আয়াত)।

“সবাই আল্লাহর নিকট উপস্থিত হবে; যারা অহংকার করত দুর্বলেরা তাদেরকে বলবে, 'আমরা তো তোমাদের অনুসারী ছিলাম; এখন তোমরা কি আল্লাহর শাস্তি হতে আমাদেরকে কিছুমাত্র রক্ষা করতে পারবে? তারা বলবে, আল্লাহ আমাদেরকে সৎপথে পরিচালিত করলে আমরাও তোমাদেরকে সৎপথে পরিচালিত করতাম; এখন আমাদের ধৈর্যচ্যুত হওয়া অথবা ধৈর্যশীল হওয়া একই কথা; আমাদের কোন নিস্কৃতি নেই। যখন সব কিছুর ফায়সালা হয়ে যাবে, তখন শয়তান বলবে, আল্লাহ তোমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সত্য প্রতিশ্রুতি। আর আমিও তোমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, কিন্তু আমি তোমাদেরকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি রক্ষা করিনি; আমার তো তোমাদের উপর কোন আধিপত্য ছিল না, আমি শুধু তোমাদেরকে আহবান করেছিলাম এবং তোমরা আমার আহবানে সাড়া দিয়েছিলে। সুতরাং তোমরা আমার প্রতি দোষারোপ করো, তোমরা তোমাদের নিজেদের প্রতিই দোষারোপ কর। আমি তোমাদের উদ্ধারে সাহায্য করতে সক্ষম নই এবং তোমরাও আমার উদ্ধারে সাহায্য করতে সক্ষম নও; তোমরা যে পূর্বে আমাকে (আল্লাহর) শরীক করেছিলে সে কথা তো আমি মানিই না।’ অত্যাচারীদের জন্য তো বেদনাদায়ক শাস্তি আছে।” (সূরা ইব্রাহীমঃ ২১-২২ আয়াত)

“ওরা অসহ্য যন্ত্রণায় মৃত্যু কামনা করবে এবং চীৎকার করে বলবে, ‘হে মালেক (দোযখের অধিকর্তা)! তোমার প্রতিপালক আমাদেরকে নিঃশেষ করে দিন।” সে বলবে, 'তোমরা তো এভাবেই অবস্থান করবে। আল্লাহ বলবেন, আমি তো তোমাদের নিকট সত্য পৌছায়ে ছিলাম, কিন্তু তোমাদের অধিকাংশই তো সত্য-বিমুখ ছিল।” (আল-কুরআন ৪৩/৭৭-৭৮)।

জাহান্নামীরা কেঁদে এত অশ্রু ঝরাবে যে, তাতে নদী প্রবাহিত হবে এবং তার উপর নৌকা চলাও সম্ভব হবে। তারা রক্তের অশ্রুও ঝরাবে। (সঃ জামে’ ২০৩২নং)

দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে