এ বিশ্ব চরাচরে মহান আল্লাহর জায়গার অভাব নেই। যে সূর্যকে আমরা দূর থেকে ভাতের থালার মত মনে করি, সেই সূর্য এই পৃথিবী থেকে প্রায় ১৩ লক্ষ গুণ বড়। আর তার সবটাই অগ্নিকুণ্ড। এই রকম আরো কত এবং আরো বড় বড় সূর্য রয়েছে মহাশূন্যে। জান্নাত-জাহান্নামও কোথাও আছে। জান্নাত যেমন বিশাল, জাহান্নামও তেমনই।
জাহান্নাম যে অতি বিশাল, তা বুঝতে পারা যায় নিম্নভাবেঃ
১। জিন-ইনসান মিলে অগণিত কোটি সংখ্যক ব্যক্তি জাহান্নামে স্থান পাবে। আবার কোন কোন জাহান্নামীর দেহ এত বিরাট হবে যে, তার দাঁতটাই হবে উহুদ পাহাড়ের সমান! দুই কাঁধের ব্যবধান হবে তিন দিনের পথ!
প্রকাশ থাকে যে, উহুদ পাহাড়ের দৈর্ঘ্য প্রায় ৭ কিমি. প্রস্থ প্রায় ২-৩ কিমি. এবং উচ্চতা ৩৫০ মিটার।
জানি না, এই শ্রেণীর জাহান্নামীর সংখ্যাই বা কত। তা সত্ত্বেও জাহান্নাম পরিপূর্ণ হবে না। মহান আল্লাহ বলেন,
يَوْمَ نَقُولُ لِجَهَنَّمَ هَلِ امْتَلَأْتِ وَتَقُولُ هَلْ مِن مَّزِيدٍ
অর্থাৎ, সেদিন আমি জাহান্নামকে জিজ্ঞেস করব, তুমি কি পূর্ণ হয়ে গেছ?’ জাহান্নাম বলবে, আরো আছে কি?” (সূরা ক্বাফ ৩০ আয়াত)
মহানবী (ﷺ) বলেন, “জাহান্নাম "আরো আছে কি" বলতেই থাকবে। পরিশেষে রব্বুল ইয্যত তাবারাকা অতাআলা তাতে নিজ পায়ের পাতা (পা) রেখে দেবেন। তখন সে বলবে, যথেষ্ট, যথেষ্ট, তোমার ইযযতের কসম! আর তার পরস্পর অংশগুলি সংকীর্ণ হয়ে যাবে।” (বুখারী ৭৩৮৪, মুসলিম ২৮ ৪৮নং, আবূ আওয়ানাহ)।
২। জাহান্নামের গভীরতা সম্বন্ধে হাদীস বর্ণিত হয়েছে। আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে ছিলাম৷ অকস্মাৎ তিনি। কোন জিনিস পড়ার আওয়াজ শুনলেন। অতঃপর তিনি বললেন, “তোমরা জান এটা কী?” আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসূল বেশী জানেন। তিনি বললেন, “এটা ঐ পাথর যেটিকে সত্তর বছর পূর্বে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, এখনই তা জাহান্নামের গভীরতায় (তলায়) পৌঁছল। ফলে। তারই পড়ার আওয়াজ তোমরা শুনতে পেলে।”
আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, সেই সত্তার কসম যার হাতে আবু হুরাইরার প্রাণ আছে। নিশ্চয় জাহান্নামের গভীরতা সত্তর বছরের (দুরত্বের পথ)। (মুসলিম)
৩। জাহান্নামকে টেনে আনবেন ৪৯০ কোটি ফিরিশ্তা! তাতেও তার বিশালতা অনুমান করা যায়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “কিয়ামতের দিন জাহান্নামকে এ অবস্থায় নিয়ে আসা হবে যে, তার সত্তর হাজার লাগাম থাকবে। আর প্রত্যেক লাগামের সাথে সত্তর হাজার ফিরিশ্তা থাকবেন। তাঁরা তা টানতে থাকবেন।” (মুসলিম)।
৪। জাহান্নাম এত বিশাল যে, চাঁদ-সূর্যকে একত্রিত করে তার গর্ভে নিক্ষিপ্ত করা হবে! (সিঃ সহীহাহ ১২৪নং)