তাওহীদ পন্থীদের নয়নমণি ৫৭তম অধ্যায় - বাতাসকে গালি দেয়া নিষেধ (باب النهي عن سب الريح) শাইখ আব্দুর রাহমান বিন হাসান বিন মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহাব (রহঃ) ১ টি

উবাই বিন কা’ব রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম বলেছেনঃ

«لاَ تَسُبُّوا الرِّيحَ فَإِذَا رَأَيْتُمْ مَا تَكْرَهُونَ فَقُولُوا اللَّهُمَّ إِنَّا نَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِ هَذِهِ الرِّيحِ وَخَيْرِ مَا فِيهَا وَخَيْرِ مَا أُمِرَتْ بِهِ وَنَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ هَذِهِ الرِّيحِ وَشَرِّ مَا فِيهَا وَشَرِّ مَا أُمِرَتْ بِهِ»

‘‘তোমরা বাতাসকে গালি দিও না। তোমরা যখন বাতাসের মধ্যে অপছন্দনীয় কিছু দেখবে, তখন তোমরা বলবেঃ

«اللَّهُمَّ إِنَّا نَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِ هَذِهِ الرِّيحِ وَخَيْرِ مَا فِيهَا وَخَيْرِ مَا أُمِرَتْ بِهِ وَنَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ هَذِهِ الرِّيحِ وَشَرِّ مَا فِيهَا وَشَرِّ مَا أُمِرَتْ بِهِ»

‘‘হে আল্লাহ! এ বাতাসের যা কল্যাণকর, এতে যে মঙ্গল নিহিত আছে এবং যতটুকু কল্যাণ করার জন্য সে আদিষ্ট হয়েছে ততটুকু কল্যাণ ও মঙ্গল আমরা তোমার কাছে প্রার্থনা করছি।

আর এ বাতাসের যা অনিষ্টকর, তাতে যে অমঙ্গল লুকায়িত আছে এবং যতটুকু অনিষ্ট সাধনের ব্যাপারে সে আদিষ্ট হয়েছে তা থেকে আমরা তোমার কাছে আশ্রয় চাই’’। ইমাম তিরমিযী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন এবং সহীহ বলেছেন।[1]

ব্যাখ্যাঃ বাতাসকে গালি দেয়া নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ হচ্ছে, বাতাস আল্লাহর সৃষ্টি। আল্লাহর পরিচালনার কারণেই বাতাস চলাচল করে। আল্লাহর কুদরত ও ইচ্ছাতেই বাতাস প্রবাহিত হয়। সুতরাং বাতাসকে গালি দেয়া হলে বাতাসের স্রষ্টা ও তার মালিকের দিকেই গালি প্রত্যাবর্তন করে। তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাতাসকে গালি না দিয়ে হাদীছে বর্ণিত দুআটি পাঠ করার নির্দেশ দিয়েছেন। অর্থাৎ আল্লাহর কাছে বাতাস ও বাতাসের মধ্যে যে কল্যাণ নিহিত আছে তা প্রার্থনা করার এবং বাতাস ও তার মাঝে যে অকল্যাণ লুকায়িত আছে, তা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করার আদেশ দিয়েছেন।

আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদেরকে ঐসব বস্ত্ত চাওয়ার আদেশ দিয়েছেন, যা তাদের জন্য উপকারী এবং প্রত্যেক এমন অকল্যাণকর বস্ত্ত হতে আশ্রয় চাইতে বলেছেন, যা তাদের জন্য ক্ষতিকর। বান্দাদের পক্ষ হতে এটি যেন একমাত্র আল্লাহর এবাদত, তাঁর আনুগত্য এবং তাঁর প্রতি ঈমানের কারণেই হয়। তাওহীদপন্থী মুমিনদের অবস্থা এ রকমই হয়ে থাকে। শির্কপন্থী ও বিদআতীদের অবস্থা সম্পূর্ণ এর বিপরীত। অর্থাৎ তাদের মধ্যে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ঈমান ও তাওহীদ না থাকার কারণে তারা আল্লাহর কাছে বাতাসের কল্যাণ চায়না এবং বাতাসের অকল্যাণ থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর আশ্রয় কামনা করেনা। বরং মুর্খতা বশতঃ তারা বাতাসকেই গালি দেয়। এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায়ঃ

১) বাতাসকে গালি দেয়া নিষেধ।

২) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলিমদেরকে এই আদেশ দিয়েছেন যে, অপছন্দনীয় জিনিষ দেখে তারা যেন উপকারী কথা বলে তথা উত্তম দুআ করে।

৩) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন যে, বাতাস আল্লাহর পক্ষ থেকে আদিষ্ট এবং আল্লাহর হুকুমেই তা প্রবাহিত হয়।

৪) এ কথাও সুস্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, বাতাস কখনো কল্যাণ সাধনের জন্য আবার কখনো অকল্যাণ করার জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে আদিষ্ট হয়।

[1] - তিরমিজী, অধ্যায়ঃ বাতাসকে গালি দেয়া নিষেধ। হাদীছ নং-২২৫২।
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে