উত্তরঃ সুন্নাত হতে সিফাতে যাতিয়ার কতিপয় উদাহরণ বর্ণনা করা হল। আবু মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
(حِجَابُهُ النُّورُ لَوْ كَشَفَهُ لَأَحْرَقَتْ سُبُحَاتُ وَجْهِهِ مَا انْتَهَى إِلَيْهِ بَصَرُهُ مِنْ خَلْقِهِ)
‘‘তাঁর পর্দা হচ্ছে নূর। তিনি যদি তা উন্মুক্ত করেন, তবে তাঁর চোখের দৃষ্টি যতদূর যাবে, ততদূর পর্যন্ত সকল মাখলুক তাঁর চেহারার আলোতে জ্বলে যাবে’’।[1] অন্য হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
(إِنَّ يَمِينَ اللَّهِ مَلأَى لاَ يَغِيضُهَا نَفَقَةٌ سَحَّاءُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ أَرَأَيْتُمْ مَا أَنْفَقَ مُنْذُ خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ فَإِنَّهُ لَمْ يَنْقُصْ مَا فِي يَمِينِهِ وَعَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ وَبِيَدِهِ الأُخْرَى الْفَيْضُ أَوِ الْقَبْضُ يَرْفَعُ وَيَخْفِضُ)
‘‘আল্লাহর ডান হাত পরিপূর্ণ। রাত দিন খরচ করার পরও তাতে কোন কমতি হয় না। তোমরা কি বলতে পারবে আসমান-যমীন সৃষ্টি করার সময় হতে এ পর্যন্ত কত খরচ করেছেন? অথচ তাঁর ডান হাতে যা আছে, তা হতে কিছুই কমেনি। তাঁর আরশ পানির উপর। তাঁর অপর হাতে রয়েছে দাড়িপাল্লা। তিনি উহা উঠান এবং নামান’’। দাজ্জালের হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
(إِنَّ اللَّهَ لاَ يَخْفَى عَلَيْكُمْ إِنَّ اللَّهَ لَيْسَ بِأَعْوَرَ)
‘‘সে সময় আল্লাহর পরিচয় তোমাদের নিকট অস্পষ্ট থাকবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অন্ধ নন’’।[2] এ কথা বলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর চোখের দিকে ইঙ্গিত করলেন। ইস্তেখারার হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দু’আর মধ্যে আল্লাহর সিফাতে যাতিয়া তথা সত্বাগত গুণাবালীর বিবরণ এসেছে। তিনি বলতেনঃ
(اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيمِ فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ وَأَنْتَ عَلاَّمُ الْغُيُوبِ)
‘‘হে আল্লাহ্! আমি আপনার জ্ঞানের দোহাই দিয়ে আপনার কাছে ভালটা এবং আপনার শক্তির বদৌলতে আপনার কাছে শক্তি কামনা করছি। আর আপনার কাছেই আপনার মহা কল্যাণ কামনা করছি। নিশ্চয় আপনি শক্তির অধিকারী কিন্তু আমি মোটেও শক্তি রাখিনা, আর আপনি সবই জানেন অথচ আমি কিছুই জানিনা, আর আপনি তো অদৃশ্যেরও জ্ঞানী’’।[3] কোন এক সফরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেখলেন, তাঁর সাহাবীগণ উচ্চস্বরে দু’আ করছে। তখন তিনি বললেনঃ
(فَإِنَّكُمْ لاَ تَدْعُونَ أَصَمَّ وَلاَ غَائِبًا تَدْعُونَ سَمِيعًا بَصِيرًا قَرِيبًا)
‘‘তোমরা বধির ও অনুপস্থিত কাউকে ডাকছ না। তোমরা এমন এক সত্বাকে ডাকছ, যিনি শ্রবণকারী, সর্বদ্রষ্টা ও তোমাদের অতি নিকটে’’।[4] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
(إذا أراد الله أن يوحي بالأمر تكلم بالوحي)
‘‘আল্লাহ্ তা’আলা যখন কোন বিষয় অবতীর্ণ করতে চান, তখন অহীর মাধ্যমে কথা বলেন’’।[5] পুনরুত্থানের হাদীছে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
(يَقُولُ اللَّهُ: يَا آدَمُ فَيَقُولُ: لَبَّيْكَ)
‘‘কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা বলবেনঃ হে আদম! আদম বলবেনঃ আমি উপস্থিত আছি’’।[6] এমনিভাবে কিয়ামতের দিন হাশরের মাঠে বানদাদের সাথে এবং জান্নাতবাসীদের সাথে আল্লাহ তা’আলা কথা বলবেন। এ মর্মে অসংখ্য হাদীছ রয়েছে।
[2] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুত্ তাওহীদ, মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান।
[3] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুদ দাওয়াত।
[4] - মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুয্ যিক্র।
[5] - ইবনে খুজায়মা, অধ্যায়ঃ কিতাবুত্ তাওহীদ। তবে হাদীছটি যঈফ। দেখুনঃ ইমাম আলবানী রচিত কিতাবুস্ সুন্নাত, (১/২৭৭) হাদীছ নং- ৫১৫)
[6] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুর্ রিকাক।