খতমে তাহলীল বা " لا اله الا الله " (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্) এর খতম। খতমে শিফার সাথেই তা পড়ার নিয়ম ও এর ফযিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ সবকিছুই মনগড়া, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
এই কালিমাটি হচ্ছে ইসলামে মূল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ২৩ বছরের পুরো জীবনটাই এই কালেমার তাৎপর্য বুঝানো এবং এর তাৎপর্যের উপর সাহাবিদেরকে উঠানোর পিছনে ব্যয় করেছেন। সাহাবায়ে কেরাম থেকে বর্ণিত, তারা প্রথমে ঈমান অতঃপর কুরআন শিক্ষা করেছেন।[1] হাদীসে এই কালেমার যিকরকে সর্বোত্তম যিকর বলা হয়েছে। জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত :
‘‘আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: সর্বশ্রেষ্ট যিকর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এবং সর্বশ্রেষ্ট দো‘আ ‘আলহামদুলিল্লাহ’’।[2]পক্ষান্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি তাঁর জীবনে কখনো সাহাবিদেরকে খতম নামের এসব কোনো কথা বলেননি বা শিক্ষা দেন নি। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষার ভিত্তিতে সাহাবায়ে কেরাম তাদের জীবনে ঈমানের পিছনে অনেক মেহনত করে এই কালেমার তাৎপর্য তাদের অন্তরে বসালেও কখনোই তাদের থেকে এমন ধরণের কোনো শিক্ষা বা কথাবার্তা পাওয়া যায় না, এমনকি কল্যাণের সাক্ষ্যপ্রাপ্ত বা খাইরুল ক্বুরুনের কোনো যুগেই এসবের কোনো অস্তিত্ব বিদ্যমান নেই। অন্য মানুষ এই কালেমার খতম করে মৃত ব্যক্তিকে জান্নাতে বা স্বর্গে পাঠিয়ে দেওয়ার ধারণা মূলত বিধর্মী, ব্রাহ্মণী, পুরোহিতবাদি শিক্ষা। ইসলামের শিক্ষা যার সম্পূর্ণ বিপরীত। হিন্দুত্ববাদের হাওয়ায় কোনো অজ্ঞ সুফি সাধক থেকে এই খতমের সুচনা হওয়া অসম্ভবের কিছু নয়। আমাদের দেশের হিন্দু সমাজে এর বাস্তবতা পাওয়া যায়। আল্লাহই ভাল জানেন। তিনি আমাদেরকে এসব বুঝে এগুলোর খপ্পর থেকে নিরাপদ রাখুন। কালিমার সঠিক মর্ম বুঝে আমল করা এবং এর দা‘ওয়াত দেওয়ার তওফিক দান করুন। আমীন।
>[2] তিরমিযী, সুনান, হাদীস হাসান, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দো‘আ অধ্যায়, মুসলিমের দো‘আ গৃহীত অনুচ্ছেদ, নং: ৩৩৮৩, সহীহ ইবনে হিব্বান, আযকার অধ্যায়, নং:৮৪৬, সহীহু কুনুযিস্-সুন্নাতিন্-নাবাবিয়্যাহ, আল্লাহর যিকর অনুচ্ছেদ, ১/৯।