‘খতমে নারী’ বা ‘দুরুদে নারীয়াহ’। মানুষের বানানো দুরুদের নামে নির্দিষ্ট কিছু বাক্য। এই বাক্যগুলো ৪৪৪৪ বার পড়লে এই খতম হয়। কথিত আছে এই খতম পড়লে নাকি আগুন যেমন কোনো বস্তুকে ভস্মীভূত করে দেয় ঠিক তদ্রূপ এই খতমও বিপদ আপদকে ভস্মীভূত করে দূরে সরিয়ে দেয়। তাই এই খতমের নাম আরবী শব্দ ‘‘نار’’ যার অর্থ আগুন, এই অর্থের দিকে সম্পৃক্ত করে এর নাম ‘খতমে নারী’ বা ‘দুরুদে নারী’ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই খতমের উৎপত্তি কোথা থেকে? এর প্রথম আবিষ্কারক কে? এতে যে দো‘আ পড়া হয় তার মর্ম কী? অনেকে একে দুরুদে নারী নাম দেন, একে দুরূদ নামে নামকরণ করা অদৌ বৈধ কি না? তা জানা না থাকলেও কারো কারো কথায় আমরা এমন কাজের পিছে দৌড়াই। এতে যেমন কান্না পায় আবার হাসিও পায়। অথচ দুনিয়ার সাধারণ একটি বিষয় হলেও আমরা অনেক যাচাই বাছাই করে অগ্রসর হই। ডাক্তারের কথা শুনলেই দৌড়াই না, বরং পূর্বে তার সম্পর্কে অবগত হওয়ার চেষ্টা করি।
অথচ ধর্মীয় বিশ্বাসে বিশ্বাসী হয়ে একটি আমল করছি বা করাচ্ছি আর একবারও ভেবে দেখছি না। এসব হচ্ছে ঈমান আক্বীদার বিষয়ে আমাদের শৈথিল্য আচরণের বহিঃপ্রকাশ। প্রশ্ন হলো, যিনি আমাকে এই খতম পড়ানোর জন্য উৎসাহিত করলেন তিনি তার কতটি রোগ বালাই এই দুরূদ দ্বারা সমাধান করেছেন? নাকি হাসপাতাল আর ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়েছেন? এই দুরুদের এত অ্যাক্শন হলে তিনি নিজে বিভিন্ন সময়ে বিপদে জর্জরিত হয়ে তা দূর করার জন্য অন্য পথ খোঁজেন কেন? জানা দো‘আটি পড়ে ফেললেই তো হয়। আফসোস, যার নিজের আস্থা এই দুরূদের উপর নেই, থাকার কথাও নয়, তিনি কীভাবে মানুষকে এটি পড়ানোর উপদেশ দেন? অপরদিকে আমাদের পাগলামী দেখে আফসোস হয় যে, আমরা কী-ভাবে এমন কথা গ্রহণ করি? ঔষধ মনে করলেও খাবে একজন আর ভাল হবে আরেকজন? এইটুকু বোঝার কি বিবেক আমাদের নেই?
যাই হোক এবার আমরা মূল বিষয়ে আসি এবং জানার চেষ্টা করি খতমে না-রী কী? এবং তা পড়া বা পড়ানো কতটুকু সমীচীন?
প্রথমেই মানুষের বানানো দো‘আটি ও তার অর্থ উল্লেখ করছি। সত্যসন্ধানী ব্যক্তি অর্থের দিকে একটু মনোনিবেশ করলেই দো‘আটির তাৎপর্য এবং এমন দো‘আ পড়া কতটুকু সিদ্ধ তা বুঝে নিতে পারবেন। দুরুদের নামে আরবী যে বাক্যগুলো পড়া হয় তা নিম্নরূপ:
"اللهم صَلِّ صَلاةً كامِلَةً وسَلِّمْ سَلامًا تامًّا على سَيِّدنا محمدٍ الذي تَنْحَلُّ به العُقَدُ، وتَنْفَرِجُ به الكُرَبُ وتُقضى به الحوائجُ وتُنالُ به الرغائبُ وحُسْنُ الخواتِمِ ويُسْتسقى الغمامُ بوجهه الكريم، وعلى آله وصحبه في كل لمحة ونفس بعددِ كل معلوم لك".
‘‘হে আল্লাহ পরিপূর্ণ রহমত ও পূর্ণ শান্তি বর্ষিত কর আমাদের সরদার মুহাম্মদের উপর যার মাধ্যমে সমস্যাসমূহ সমাধান হয়, দুঃখ দুর্দশা তিরোহিত হয়, প্রয়োজনাদি মিটিয়ে দেওয়া হয়, পূণ্যাবলী ও সুন্দর শেষ পরিণাম অর্জিত হয়, তার পবিত্র চেহারা/সত্তার মাধ্যমে বৃষ্টি কামনা করা হয়। আর রহমত বর্ষণ কর তার পরিবার ও তার সাহাবায়ে কেরামের উপর তোমার জানা সংখ্যানূযায়ী, প্রতিটি মুহুর্তে ও নিঃশ্বাসে ’’
সচেতন ও সত্যসন্ধানী আলেমকে এ দুরুদের সমস্যা ব্যাখ্যা করে বুঝাবার প্রয়োজন নেই। জ্ঞানী ব্যক্তি মাত্র দুরূদটির শব্দ বা অর্থের প্রতি একটু খেয়াল দিলেই এর সমস্যা বুঝতে পারবেন। খতমটিতে যেহেতু অনেক আপত্তিকর শব্দ বা বাক্য রয়েছে তাই এর আপত্তিগুলো কোনো পর্যায়ের নিজ বিবেক দিয়ে একটু গভীরভাবে চিন্তা করলেই বুঝা যাবে। সবাই সহজে বোঝার জন্য প্রথমে প্রাসাঙ্গিক কিছু কথা বলার প্রয়োজন বোধ করছি, যাতে করে এর তাৎপর্য বুঝা আমাদের জন্য সহজ হয়।
আল্লাহতে বিশ্বাসী মানুষ বলতেই একথা বিশ্বাস করেন যে, সবকিছুর মূল সমাধানকারী বা পরিচালনাকারী একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। আল্লাহতে বিশ্বাসী মুসলিম অমুসলিম সকলেই এ বিশ্বাস পোষণ করেন। তবে মুসলিম ব্যক্তির বিশ্বাস আর আস্তিক বিধর্মীর বিশ্বাসের মাঝে পার্থক্য এই যে, মুসলিম মনে করেন আল্লাহ কোনো কিছুর সমাধান বা পরিচালনা করতে কারো মুখাপেক্ষী নন। তার কাছে কিছু চাইতে কোনো ব্যক্তিকে মিডিয়া বানাবার দরকার পড়ে না। পক্ষান্তরে অমুসলিমের বিশ্বাস হলো, বাদশা যেমন রাষ্ট্র পরিচালনায় বিভিন্ন ব্যক্তির মুখাপেক্ষী থাকেন আল্লাহও এরকম মুখাপেক্ষী। বিশেষ ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ যেমন সরাসরি বাদশাহর কাছে কোনো কিছু চাইতে পারে না, মিডিয়ার প্রয়োজন হয়, ঠিক তদ্রূপ আল্লাহও সবাইকে চিনেন না, তাঁর কাছে সরাসরি পৌছা যায় না, তাই তাঁর কাছে কিছু চাইতে হলে বিশেষ ব্যক্তিকে মিডিয়া বানানো প্রয়োজন। কুরআনের অসংখ্য আয়াতে তাদের এসব বিশ্বাস বর্ণনা করা হয়েছে, যেগুলো থেকে তাদের এমন বিশ্বাসের প্রমাণ পাওয়া যায়। মক্কার সমস্ত কাফের এ ধরণের বিশ্বাস পোষণ করত। মূল পরিচালনায় তারা আল্লাহকে বিশ্বাস করত বলে কুরআনের একাধিক আয়াতে এর প্রমাণ মিলে। মূর্তির পূজা করলেও মূর্তিকে তারা মূল পরিচালনাকারী বলে বিশ্বাস করত না। তাদের নিজের মুখের কথা ছিল,
مَا نَعْبُدُهُمْ إِلَّا لِيُقَرِّبُونَا إِلَى اللَّهِ زُلْفَى
‘‘আমরা তাদের ইবাদত কেবল এ জন্য করি যে, তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়’’[1]
সবকিছুর ক্ষমতা, রক্ষা, সৃষ্টি, রিযিক, পরিচালনা ইত্যাদির মূল কর্তৃত্ব আল্লাহর হাতে বলে তাদের বিশ্বাস ছিল। কুরআনে অসংখ্য জায়গায় এর আলোচনা করা হয়েছে। মূল কর্তৃত্ব আল্লাহর হাতে স্বীকার করার পর অন্য কিছুর ইবাদত বা অন্যকিছুকে আল্লাহর অংশীদার করা অযৌক্তিক বলে কুরআনে বারবার দেখানো হয়েছে।
মোটকথা তারা যে সমস্ত মাখলুক বা নেক মানুষের ইবাদত করত ওসিলা হিসেবেই করত। কিন্তু যা ওসিলা হওয়ার যোগ্যতা রাখে না তাকে ওসিলা হিসেবে গ্রহণ বা বিশ্বাস করাকে আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে শির্কের মাধ্যম বা শির্ক বলেই আখ্যায়িত করেছন। অপরদিকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শির্কের সমস্ত পথকে বন্ধ করেছেন। রাসূলকেও যাতে কেউ কোনো বাহানায় আল্লাহ পর্যন্ত না পৌছায়, আল্লাহর কোনো গুণাবলীতে শরীক না করে, এ ব্যাপারে উম্মতকে সর্বোচ্চ সতর্ক করেছেন। উম্মতকে এ ব্যাপারে সতর্ক করার নির্দেশ স্বয়ং আল্লাহর পক্ষ থেকে ছিল। আল্লাহ বলেন,
﴿قُلْ لا أَمْلِكُ لِنَفْسِي نَفْعًا وَلا ضَرًّا إِلا مَا شَاءَ اللَّهُ ...﴾ (الاعراف:188)
‘‘হে নবী আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই...’’[2]
অন্যত্র এরশাদ হয়েছে,
﴿ وَإِنْ يَمْسَسْكَ اللَّهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهُ إِلَّا هُوَ وَإِنْ يُرِدْكَ بِخَيْرٍ فَلَا رَادَّ لِفَضْلِهِ... ﴾ (يونس:107)
‘‘আর আল্লাহ যদি আপনার উপর কোনো কষ্ট আরোপ করেন তবে তিনি ছাড়া কেউ তা খণ্ডাবার নেই, পক্ষান্তরে যদি তিনি আপনাকে কিছু কল্যাণ দান করেন তবে তার মেহেরবানীকে রহিত করার মতও কেউ নেই...’’[3]
এ মর্মের আয়াত কুরআনে অসংখ্য জায়গায় রয়েছে। আমাদের নবী ছাড়া অন্যান্য নবী রাসূলেরও এই শিক্ষাই ছিল বলে কুরআনের বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা জানতে পারি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বিষয়ে বাড়াবাড়ি করতে সর্বোচ্চ সতর্ক করেছেন। আল্লাহর সাথে শির্ক দুরের কথা, তার প্রশংসায় পর্যন্ত বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন। সহীহ হাদীসে বর্ণিত রয়েছে, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলল, যা আল্লাহ চেয়েছেন এবং আপনি চেয়েছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
" أجعلتني لله عدلا بل ما شاء الله وحده". ( مسند أحمد، حديث عبد الله بن عباس، رقم:1839 )
‘‘তুমি কি আমাকে আল্লাহর সমতুল্য করেছ, বরং যা একমাত্র আল্লাহ চেয়েছেন’’[4]
কোনো কোনো বর্ণনায়,
" ويلك اجعلتني والله عدلا قل ما شاء الله وحده". ( سنن النسائي ، باب النهي أن يقال ماشاء الله وشاء فلان )
‘‘তোমার ধ্বংস হউক, তুমি কি আমাকে আল্লাহর সাথে সমতুল্য করেছ? তুমি বল, যা শুধুমাত্র আল্লাহ চেয়েছেন’’।[5]
এক হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,
" لا تطروني كما أطرت النصارى ابن مريم فإنما أنا عبده فقولوا عبد الله ورسوله ". ( صحيح البخاري، كتاب التفسير، باب: واذكر في الكتاب مريم...رقم:3261)
‘‘তোমরা আমার প্রশংসায় সীমালংঘন করো না, যেমনটি খৃষ্টানরা মারয়ামের পুত্র ঈসার ক্ষেত্রে করেছে, কেননা আমিতো আল্লাহর বান্দা, তাই তোমরা বল আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল’’।[6]
এভাবে শির্কের আপনোদন করেছেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এবার আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়াসাল্লামের শিক্ষা ও ‘খতমে নারী’ নামক দো‘আটির বাক্যগুলো নিয়ে একটু বিবেচনা করি। আশা করি যিনি প্রকৃত সত্য জানার আগ্রহ রাখেন এবং সত্য প্রকাশিত হওয়ার পর সাথে সাথে গ্রহণের মানসিকতা রাখেন তার সামনে এই দো‘আর শির্কী শব্দগুলো অতি সহজেই ধরা পড়বে। আর যার মূল লক্ষ্যই হচ্ছে, যা করছি আজীবন করেই যাব, আমি টলব তবে আমার বিশ্বাস টলবে না, তার সামনে কুরআনের স্পষ্ট আয়াত পেশ করলেও একটি না একটি অজুহাতে তিনি তার মতকে অটুট ও প্রতিষ্ঠিত রাখতে বর্ণিত দো‘আটি বা কুরআনের আয়াতের বিভিন্ন ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করবেন। অন্যদের ভ্রান্তির ক্ষেত্রে তিনি আয়াতের ব্যাখ্যা রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী ও তাঁর আমল অথবা সাহাবিদের আমল দ্বারা করলেও এখানে এসে নিজের ভ্রান্ত মতকে অটুট রাখতে আহলুস-সুন্নাহ ওয়াল জামাতের আদর্শে আদর্শবান আকাবীর আসলাফদের এই উসূলটি ভুলে যাবেন। হানাফী হলেও আবু হানিফা রাহ. এর মানহাজ ভুলে যাবেন। কুরআনের আয়াত দলীল হিসেবে উপস্থাপনের কারণে সাধারণ মহিলার কথায় উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর মত খলীফার নিজ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আদর্শ ভুলে যাবেন। এখানে এসে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবিদের আদর্শের চেয়ে নিজ পীর বা নিজের মতের আলেমের কর্মই অগ্রাধিকার পাবে। যেমনটি রাসূল গাইব জানেন বা রাসূল হাজির-নাজির এজাতীয় শির্কী বিশ্বাস পোষণকারীরা তাদের ভ্রান্ত আক্বীদা প্রতিষ্ঠিত রাখার বেলায় করে থাকে। যদিও এ সব বিষয় কুরআনে দ্ব্যর্থহীনভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
একেই আল্লাহ তা‘আলা প্রবৃত্তি ও আলেমকে প্রভু বানিয়ে তাদের পূজা বলে আখ্যা দিয়েছেন। কুরআনের আয়াত ও হাদীসের আলোকে এজাতীয় কর্মকে ‘শিরক ফিল ইবাদত’ বা উপাসনাগত শির্ক বলে আখ্যায়িত করেছেন আহলুস্-সুন্নাহ ওয়াল-জামাতের আলেমগণ। আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
﴿ أَفَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَهَهُ هَوَاهُ وَأَضَلَّهُ اللَّهُ عَلَى عِلْمٍ وَخَتَمَ عَلَى سَمْعِهِ وَقَلْبِهِ وَجَعَلَ عَلَى بَصَرِهِ غِشَاوَةً فَمَنْ يَهْدِيهِ مِنْ بَعْدِ اللَّهِ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ ﴾ ( الجاثية:23 )
‘‘আপনি কি তাঁর প্রতি লক্ষ্য করেছেন, যে তার প্রবৃত্তি তথা মনের খেয়াল খুশিকে স্বীয় উপাস্য স্থির করে নিয়েছে। আল্লাহ জেনেশুনে তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, তার কানে ও অন্তরে মোহর এঁটে দিয়েছেন এবং তার চোখের উপর রেখেছেন পর্দা। আল্লাহ ছাড়া কে তাকে হেদায়াত করবে? তোমরা কি চিন্তা ভাবনা করো না?’’[7]
অন্যত্র এরশাদ করেন,
﴿ اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ وَالْمَسِيحَ ابْنَ مَرْيَمَ وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا إِلَهًا وَاحِدًالَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ سُبْحَانَهُ عَمَّا يُشْرِكُونَ ﴾ ( التوبة:31 )
‘‘তারা আল্লাহ ব্যতীত তাদের পণ্ডিত ও সংসার-বিরাগীদের এবং মারয়াম তনয় ঈসাকে তাদের পালনকর্তারূপে গ্রহণ করেছে, অথচ তাদেরকে নির্দেশ করা হয়েছিল শুধুমাত্র এক প্রভুর ইবাদত করতে। একমাত্র তিনি ছাড়া কোনো মা‘বুদ নেই। তারা আল্লাহর যে সমস্ত শরীক সাব্যস্ত করে তা থেকে তিনি পবিত্র’’[8]। এই দুরুদে একমাত্র আল্লাহ করতে পারেন এমন যাবতীয় সিফাত বা গুণাবলীতে রাসূলকে শরীক করা হয়েছে। মাধ্যম হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মিডিয়া বা মাধ্যম হিসেবে আল্লাহর শরীক করা হয়েছে। তাই মাধ্যম হিসেবে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নাম উল্লেখ করায় শির্কের মাঝে কোনো তারতম্য সৃষ্টি হবে না। কুরআনের অসংখ্য আয়াত এবং অগণিত হাদীস এর প্রমাণ। আল্লাহ আমাদের সবাইকে বোঝার তওফিক দান করুন এবং হেদায়াতের উপর অবিচল রাখুন।
>[2] সূরা আ‘রাফ : ১৮৮।
[3] সূরা ইউনুস:১০৭।
[4] মুসনাদে আহমদ, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. এর হাদীস, নং: ১৮৩৯।
[5] নাসাঈ, সুনান, হাদীস সহীহ, আল্লাহ এবং অমুক চেয়েছেন বলা নিষেধ অনুচ্ছেদ, নং:১০৮২৪।
[6] সহীহুল বুখারী, তাফসীর অধ্যায়, অনুচ্ছেদ: কিতাবে মারয়ামের কথা স্মরণ কর..., নং: ৩২৬১।
[7] সূরা আল-জাসিয়াহ: ২৩।
[8] সূরা তাওবা:৩১।