﴿وَلَا تُبَٰشِرُوهُنَّ وَأَنتُمۡ عَٰكِفُونَ فِي ٱلۡمَسَٰجِدِۗ تِلۡكَ حُدُودُ ٱللَّهِ فَلَا تَقۡرَبُوهَاۗ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ ءَايَٰتِهِۦ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمۡ يَتَّقُونَ ١٨٧﴾ [البقرة: ١٨٧]
“আর তোমরা মাসজিদে ই‘তিকাফরত অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়ো না। এটা আল্লাহর সীমারেখা। সুতরাং তোমরা তার নিকটবর্তী হয়ো না। এভাবেই আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহ মানুষের জন্য স্পষ্ট করেন, যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৭]
‘আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعْتَكِفُ العَشْرَ الأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ»
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের শেষ দশক ই‘তিকাফ করতেন।”[1]
নবী সহধর্মিণী ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত যে,
«أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، كَانَ يَعْتَكِفُ العَشْرَ الأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ حَتَّى تَوَفَّاهُ اللَّهُ، ثُمَّ اعْتَكَفَ أَزْوَاجُهُ مِنْ بَعْدِهِ»
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের শেষ দশক ই‘তিকাফ করতেন। তাঁর ওফাত পর্যন্ত এই নিয়মই ছিল। এরপর তাঁর স্ত্রীগণও (সে দিনগুলোতে) ই‘তিকাফ করতেন।”[2]
আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত যে,
«أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَعْتَكِفُ فِي العَشْرِ الأَوْسَطِ مِنْ رَمَضَانَ، فَاعْتَكَفَ عَامًا، حَتَّى إِذَا كَانَ لَيْلَةَ إِحْدَى وَعِشْرِينَ، وَهِيَ اللَّيْلَةُ الَّتِي يَخْرُجُ مِنْ صَبِيحَتِهَا مِنَ اعْتِكَافِهِ، قَالَ: مَنْ كَانَ اعْتَكَفَ مَعِي، فَلْيَعْتَكِفِ العَشْرَ الأَوَاخِرَ، وَقَدْ أُرِيتُ هَذِهِ اللَّيْلَةَ ثُمَّ أُنْسِيتُهَا، وَقَدْ رَأَيْتُنِي أَسْجُدُ فِي مَاءٍ وَطِينٍ مِنْ صَبِيحَتِهَا، فَالْتَمِسُوهَا فِي العَشْرِ الأَوَاخِرِ، وَالتَمِسُوهَا فِي كُلِّ وِتْرٍ»، فَمَطَرَتِ السَّمَاءُ تِلْكَ اللَّيْلَةَ وَكَانَ المَسْجِدُ عَلَى عَرِيشٍ، فَوَكَفَ المَسْجِدُ، فَبَصُرَتْ عَيْنَايَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى جَبْهَتِهِ أَثَرُ المَاءِ وَالطِّينِ، مِنْ صُبْحِ إِحْدَى وَعِشْرِينَ»
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের মধ্যম দশকে ই‘তিকাফ করতেন। এক বছর এরূপ ই‘তিকাফ করেন, যখন একুশের রাত আসলো, যে রাতের সকালে তিনি তাঁর ই‘তিকাফ থেকে বের হবেন, তিনি বললেন, যারা আমার সঙ্গে ই‘তিকাফ করেছে তারা যেন শেষ দশক ই‘তিকাফ করে। আমাকে স্বপ্নে এই রাত (লাইলাতুল কাদর) দেখানো হয়েছিল। পরে আমাকে তা (সঠিক তারিখ) ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। অবশ্য আমি স্বপ্নে দেখতে পেয়েছি যে, ঐ রাতের সকালে আমি কাদা পানির মাঝে সিজদা করছি। তোমরা তা শেষ দশকে তালাশ কর এবং প্রত্যেক বেজোড় রাতে তালাশ কর। পরে এই রাতে আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষিত হলো, মসজিদের ছাদ ছিল খেজুর পাতার ছাউনির। ফলে মসজিদে টপটপ করে বৃষ্টি পড়তে লাগল। একুশের রাতের সকালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কপালে কাদা পানির চিহ্ন আমার দু’চোখ দেখতে পায়।”[3]
[2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০২৬, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৭২।
[3] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০২৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬৭।
নবী সহধর্মিণী ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصْغِي إِلَيَّ رَأْسَهُ وَهُوَ مُجَاوِرٌ فِي المَسْجِدِ، فَأُرَجِّلُهُ وَأَنَا حَائِضٌ»
“মসজিদে ই‘তিকাফরত অবস্থায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার দিকে তাঁর মাথা ঝুকিয়ে দিতেন আর আমি ঋতুবতী অবস্থায় তাঁর চুল আঁচড়িয়ে দিতাম”।[1]
নবী সহধর্মিণী ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«وَإِنْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «لَيُدْخِلُ عَلَيَّ رَأْسَهُ وَهُوَ فِي المَسْجِدِ، فَأُرَجِّلُهُ، وَكَانَ لاَ يَدْخُلُ البَيْتَ إِلَّا لِحَاجَةٍ إِذَا كَانَ مُعْتَكِفًا»
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে থাকাবস্থায় আমার দিকে মাথা বাড়িয়ে দিতেন আর আমি তা আঁচড়িয়ে দিতাম এবং তিনি যখন ই‘তিকাফে থাকতেন তখন (প্রাকৃতিক) প্রয়োজন ছাড়া ঘরে প্রবেশ করতেন না।”[1]
>আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُبَاشِرُنِي وَأَنَا حَائِضٌ، وَكَانَ يُخْرِجُ رَأْسَهُ مِنَ المَسْجِدِ وَهُوَ مُعْتَكِفٌ، فَأَغْسِلُهُ وَأَنَا حَائِضٌ»
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঋতুবতী অবস্থায় আমার সঙ্গে কাটাতেন এবং তিনি ই‘তিকাফরত অবস্থায় মসজিদ থেকে তাঁর মাথা বের করে দিতেন। আমি ঋতুবতী অবস্থায় তা ধুয়ে দিতাম।”[1]
>ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
«أَنَّ عُمَرَ سَأَلَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: كُنْتُ نَذَرْتُ فِي الجَاهِلِيَّةِ أَنْ أَعْتَكِفَ لَيْلَةً فِي المَسْجِدِ الحَرَامِ، قَالَ: «فَأَوْفِ بِنَذْرِكَ»
“উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেন যে, আমি জাহিলিয়্যা যুগে মসজিদুল হারামে এক রাত ই‘তিকাফ করার মানত করেছিলাম। তিনি (উত্তরে) বললেন, তোমার মানত পুরা কর”।[1]
>‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَعْتَكِفُ فِي العَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ، فَكُنْتُ أَضْرِبُ لَهُ خِبَاءً فَيُصَلِّي الصُّبْحَ ثُمَّ يَدْخُلُهُ، فَاسْتَأْذَنَتْ حَفْصَةُ عَائِشَةَ أَنْ تَضْرِبَ خِبَاءً، فَأَذِنَتْ لَهَا، فَضَرَبَتْ خِبَاءً، فَلَمَّا رَأَتْهُ زَيْنَبُ ابْنَةُ جَحْشٍ ضَرَبَتْ خِبَاءً آخَرَ، فَلَمَّا أَصْبَحَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى الأَخْبِيَةَ، فَقَالَ: «مَا هَذَا؟» فَأُخْبِرَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَلْبِرَّ تُرَوْنَ بِهِنَّ فَتَرَكَ الِاعْتِكَافَ ذَلِكَ الشَّهْرَ، ثُمَّ اعْتَكَفَ عَشْرًا مِنْ شَوَّالٍ»
“রমযানের শেষ দশকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ই‘তিকাফ করতেন। আমি তাবু তৈরি করে দিতাম। তিনি ফজরের সালাত আদায় করে তাতে প্রবেশ করতেন। (নবী স্ত্রী) হাফসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তাঁবু খাটাবার জন্য ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার কাছে অনুমিতি চাইলেন। তিনি তাঁকে অনুমতি দিলে হাফসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তাবুঁ খাটালেন। (নবী স্ত্রী) যয়নাব বিনতে জাহাশ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তা দেখে আরেকটি তাবুঁ তৈরি করলেন। সকালে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবুঁগুলো দেখলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন এগুলো কী? তাঁকে জানানো হলে তিনি বললেন, তোমরা কি মনে কর এগুলো দিয়ে নেকী হাসিল হবে? এ মাসে তিনি ই‘তিকাফ ত্যাগ করলেন এবং পরে শাওয়াল মাসে ১০ দিন (কাযাস্বরূপ) ই‘তিকাফ করেন।”[1]
>‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা খেকে বর্ণিত যে,
«أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَرَادَ أَنْ يَعْتَكِفَ، فَلَمَّا انْصَرَفَ إِلَى المَكَانِ الَّذِي أَرَادَ أَنْ يَعْتَكِفَ إِذَا أَخْبِيَةٌ خِبَاءُ عَائِشَةَ، وَخِبَاءُ حَفْصَةَ، وَخِبَاءُ زَيْنَبَ، فَقَالَ: أَلْبِرَّ تَقُولُونَ بِهِنَّ» ثُمَّ انْصَرَفَ، فَلَمْ يَعْتَكِفْ حَتَّى اعْتَكَفَ عَشْرًا مِنْ شَوَّالٍ»
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ই‘তিকাফ করার ইচ্ছা করলেন। এরপর যে স্থানে ই‘তিকাফ করার ইচ্ছা করেছিলেন সেখানে এসে কয়েকটি তাঁবু দেখতে পেলেন। (তাঁবুগুলো হলো নবী সহধর্মিণী) ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা, হাফসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা ও যায়নাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার তাঁবু। তখন তিনি বললেন, তোমরা কি এগুলো দিয়ে নেকী হাসিলের ধারণা কর? এরপর তিনি চলে গেলেন আর ই‘তিকাফ করলেন না। পরে শাওয়াল মাসে দশ দিনের ই‘তিকাফ করলেন।”[1]
>ইমাম যুহরী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আলী ইবন হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা আমাকে নবী স্ত্রী সাফিয়্যা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে সংবাদ দিয়েছেন যে,
«أَنَّهَا جَاءَتْ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَزُورُهُ فِي اعْتِكَافِهِ فِي المَسْجِدِ فِي العَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ، فَتَحَدَّثَتْ عِنْدَهُ سَاعَةً، ثُمَّ قَامَتْ تَنْقَلِبُ، فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَعَهَا يَقْلِبُهَا، حَتَّى إِذَا بَلَغَتْ بَابَ المَسْجِدِ عِنْدَ بَابِ أُمِّ سَلَمَةَ، مَرَّ رَجُلاَنِ مِنَ الأَنْصَارِ، فَسَلَّمَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ لَهُمَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «عَلَى رِسْلِكُمَا، إِنَّمَا هِيَ صَفِيَّةُ بِنْتُ حُيَيٍّ»، فَقَالاَ: سُبْحَانَ اللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَكَبُرَ عَلَيْهِمَا، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ الشَّيْطَانَ يَبْلُغُ مِنَ الإِنْسَانِ مَبْلَغَ الدَّمِ، وَإِنِّي خَشِيتُ أَنْ يَقْذِفَ فِي قُلُوبِكُمَا شَيْئًا»
“একবার তিনি রমযানের শেষ দশকে মসজিদে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে হাযির হন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ই‘তিকাফরত ছিলেন। তিনি তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা-বার্তা বলেন। তারপর ফিরে যাবার জন্য উঠে দাঁড়ান। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে উঠে দাঁড়ালেন। যখন তিনি (উম্মুল মুমিনীন) উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার গৃহ সংলগ্ন মসজিদের দরজা পর্যন্ত পৌছলেন, তখন দু’জন আনসারী সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁরা উভয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সালাম করলেন। তাদের দু’জনকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা দু’জন থামো। ইনি তো (আমার স্ত্রী) সাফিয়্যা বিনতে হুয়াই। এতে তারা দু’জনে সুবহানাল্লাহ ইয়া রাসূলুল্লাহ বলে উঠলেন এবং তাঁরা বিব্রতবোধ করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘শয়তান মানুষের রক্ত শিরায় চলাচল করে। আমি আশংকা করলাম যে, সে তোমাদের মনে সন্দেহের সৃষ্টি করতে পারে’।”[1]
>আবু সালমা ইবন ‘আব্দুর রাহমান রহ. বলেন, আমি আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে জিজ্ঞাসা করলাম,
«هَلْ سَمِعْتَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَذْكُرُ لَيْلَةَ القَدْرِ؟ قَالَ: نَعَمِ، اعْتَكَفْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ العَشْرَ الأَوْسَطَ مِنْ رَمَضَانَ، قَالَ: فَخَرَجْنَا صَبِيحَةَ عِشْرِينَ، قَالَ: فَخَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَبِيحَةَ عِشْرِينَ فَقَالَ: إِنِّي أُرِيتُ لَيْلَةَ القَدْرِ، وَإِنِّي نُسِّيتُهَا، فَالْتَمِسُوهَا فِي العَشْرِ الأَوَاخِرِ فِي وِتْرٍ، فَإِنِّي رَأَيْتُ أَنِّي أَسْجُدُ فِي مَاءٍ وَطِينٍ، وَمَنْ كَانَ اعْتَكَفَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلْيَرْجِعْ، فَرَجَعَ النَّاسُ إِلَى المَسْجِدِ وَمَا نَرَى فِي السَّمَاءِ قَزَعَةً، قَالَ: فَجَاءَتْ سَحَابَةٌ، فَمَطَرَتْ، وَأُقِيمَتِ الصَّلاَةُ، فَسَجَدَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الطِّينِ وَالمَاءِ حَتَّى رَأَيْتُ أَثَرَ الطِّينِ فِي أَرْنَبَتِهِ وَجَبْهَتِهِ»
“আপনি কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে লাইলাতুল কাদর প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমরা রমযানের মধ্যম দশকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ই‘তিকাফ করেছিলাম। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর আমরা বিশ তারিখের সকালে বের থেকে চাইলাম। তিনি বিশ তারিখের সকালে আমাদেরকে সম্বোধন করে ভাষণ দিলেন। তিনি বললেন, আমাকে (স্বপ্নযোগে) লাইলাতুল কাদর (এর নির্দিষ্ট তারিখ) দেখানো হয়েছিল। পরে আমাকে তা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তোমরা শেষ দশকের বিজোড় তারিখে তা তালাশ কর। আমি দেখেছি যে, আমি পানি ও কাদার মধ্যে সিজদা করছি। অতএব যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ই‘তিকাফ করেছে সে যেন ফিরে আসে (বের হওয়া থেকে বিরত থাকে)। লোকেরা মসজিদে ফিরে এল। আমরা তখন আকাশে একখণ্ড মেঘও দেখতে পাই নি। একটু পরে একখণ্ড মেঘ দেখা দিল ও বর্ষণ হলো এবং সালাত শুরু হলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাদা পানির মাঝে সিজদা করলেন। এমনকি আমি তাঁর কপালে ও নাকে কাদার চিহ্ন দেখতে পেলাম।”[1]
>‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«اعْتَكَفَتْ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ امْرَأَةٌ مِنْ أَزْوَاجِهِ مُسْتَحَاضَةٌ، فَكَانَتْ تَرَى الحُمْرَةَ، وَالصُّفْرَةَ، فَرُبَّمَا وَضَعْنَا الطَّسْتَ تَحْتَهَا وَهِيَ تُصَلِّي»
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে তাঁর এক মুস্তাহাযা স্ত্রী ই‘তিকাফ করেন। তিনি লাল ও হলুদ রংয়ের স্রাব নির্গত থেকে দেখতে পেতেন। অনেক সময় আমরা তাঁর নিচে একটি গামলা রেখে দিতাম আর তিনি উহার উপর সালাত আদায় করতেন।”[1]
>