জওয়াব: যেসব ওযরে সাওম ভঙ্গ করা যায়:

১ – অসুস্থতা: অসুস্থ ব্যক্তির জন্য রমযান মাসে সাওম ভঙ্গ করা বৈধ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٖ فَعِدَّةٞ مِّنۡ أَيَّامٍ أُخَرَۚ﴾ [البقرة: ١٨٤]

“আর যে অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে তবে অন্যান্য দিবসে সংখ্যা পূরণ করে নেবে।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৪]

যে অসুস্থতার কারণে রমযান মাসে সাওম ভঙ্গ করা চলে তা হলো এমন অসুস্থতা যার কারণে সাওম রাখা অনেক কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায় অথবা সাওম রাখলে নিশ্চিত ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।

২ – সফর: মুসাফির ব্যক্তির জন্য রমযান মাসে সাওম ভঙ্গ করা বৈধ। তবে ভাঙ্গা সাওমগুলো পরবর্তীতে অবশ্যই কাযা করতে হবে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٖ فَعِدَّةٞ مِّنۡ أَيَّامٍ أُخَرَۚ﴾ [البقرة: ١٨٤]

“আর যে অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে তবে অন্যান্য দিবসে সংখ্যা পূরণ করে নেবে।” [সূরা আল-বাকারা, আযাত: ১৮৪]

যে সফরে সাওম ভঙ্গ করা চলে তা হলো একই ধরনের সফর যার কারণে সালাত কসর করা চলে।

কিন্তু যদি মুসাফির ব্যক্তি সাওম রাখে তবে তার সাওম শুদ্ধ হবে। আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সফর করতাম। যে ব্যক্তি সাওম রাখত তাকেও তিনি দোষারোপ করতেন না, আবার যে সাওম রাখত না তাকেও দোষারোপ করতেন না।’

তবে শর্ত হলো সাওম যেন মুসাফিরের জন্য খুব কষ্টকর না হয়। আর যদি সাওম রাখা খুব কষ্টকর হয় অথবা ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে সাওম ভঙ্গ করাই উত্তম হবে। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরাবস্থায় এক সাওমদার ব্যক্তিকে দেখলেন যে প্রচণ্ড গরমের কারণে তাকে ছায়া দেওয়া হচ্ছে এবং লোকজন তার চারপাশে ভিড় করছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘সফর অবস্থায় সাওম রাখা উত্তম কাজের মধ্যে শামিল নয়।’

৩- গর্ভ ও দুগ্ধদান: গর্ভাবস্থা অথবা দুগ্ধদান অবস্থায় নারী যদি তার ক্ষতির আশঙ্কা করে, তবে তার জন্য সাওম ভঙ্গ করা বৈধ হবে। তবে তাকে কাযা করতে হবে অসুস্থ ব্যক্তির মতো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা মুসাফির ব্যক্তির ওপর থেকে সাওম এবং সালাতের একাংশ উঠিয়ে নিয়েছেন। আর গর্ভধারী ও দুগ্ধদানকারী নারীর ওপর থেকে তিনি সাওম উঠিয়ে নিয়েছেন।’

আর যদি নিজের ক্ষতির কোনো ভয় না থাকে; কিন্তু বাচ্চার ক্ষতির আশঙ্কা থাকে তাহলেও সাওম ভঙ্গ করা বৈধ হবে, তবে তাকে কাযা করতে হবে ও প্রতিদিনের সাওমর পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্যদান করতে হবে। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, ‘দুগ্ধদানকারী ও গর্ভধারী নারী যদি তার সন্তানের ব্যাপারে আশঙ্কা করে তাহলে সে সাওম ভঙ্গ করবে ও মিসকীনকে খাদ্যদান করবে।’

৪- হায়েয ও নিফাস: যে নারী হায়েয ও নিফাসগ্রস্ত হয়েছে সে আবশ্যিকভাবে সাওম ভঙ্গ করবে। এ অবস্থায় সাওম রাখা হারাম হবে। এমতাবস্থায় সাওম রাখলে তা শুদ্ধ হবে না। তবে ভাঙ্গা সাওমগুলো পরবর্তীতে কাযা করতে হবে। এর প্রমাণ, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে হায়েযগ্রস্ত নারী সাওম কাযা করবে কিনা -এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমাদেরকেও স্পর্শ করত, অতঃপর আমাদেরকে সাওম কাযা করার নির্দেশ দেওয়া হতো, তবে সালাত কাযা করার নির্দেশ দেওয়া হতো না।’