“সালাত” শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে দো‘আ।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَصَلِّ عَلَيۡهِمۡۖ إِنَّ صَلَوٰتَكَ سَكَنٞ لَّهُمۡ﴾ [التوبة: ١٠٣]
“আর তুমি তাদের জন্য দো‘আ করো। নিশ্চয় তোমার দো‘আ তাদের জন্য শান্তি স্বরূপ”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ১০৩]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِذَا دُعِيَ أَحَدُكُمْ فَلْيُجِبْ، فَإِنْ كَانَ صَائِماً فَلْيُصَلِّ، وَإِنْ كَانَ مُفْطِراً فَلْيَطْعَمْ».
“তোমাদের কাউকে খাবারের দাওয়াত দেওয়া হলে সে যেন উক্ত দাওয়াতে উপস্থিত হয়। অতঃপর সে যদি সাওম পালনকারী হয়ে থাকে তাহলে সে যেন মেজবানের জন্য বরকত, কল্যাণ ও মাগফিরাতের দো‘আ করে। আর যদি সে সাওম পালনকারী না হয়ে থাকে তাহলে সে যেন উক্ত খাবার গ্রহণ করে”।[1]
কারোর ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলার “সালাত” মানে ফিরিশতাগণের নিকট তার ভূয়সী প্রশংসা করা। আর ফিরিশতাগণের পক্ষ থেকে কারোর জন্য “সালাত” মানে তার জন্য মহান আল্লাহ তা‘আলার নিকট দো‘আ করা।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿إِنَّ ٱللَّهَ وَمَلَٰٓئِكَتَهُۥ يُصَلُّونَ عَلَى ٱلنَّبِيِّۚ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ صَلُّواْ عَلَيۡهِ وَسَلِّمُواْ تَسۡلِيمًا ٥٦﴾ [الاحزاب: ٥٦]
“নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা ফিরিশতাগণের নিকট নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রশংসা করেন এবং তাঁর ফিরিশতাগণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য দো‘আ করেন। অতএব, হে মুমিনগণ তোমরাও তাঁর জন্য দো‘আ করো এবং তাঁর ওপর সালাম পাঠাও”। [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫৬]
শরী‘আতের পরিভাষায় “সালাত” বলতে এমন এক ইবাদাতকে বুঝানো হয় যা হবে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি ও তাঁর সাওয়াবের আশায় এবং যাতে রয়েছে বিশেষ কিছু কথা ও কাজ যার শুরু তাকবীর দিয়ে এবং শেষ সালাম দিয়ে। যা আমাদের নিকট সালাত নামেই অধিক পরিচিত।
উক্ত সালাতকে সালাত এ জন্যই বলা হয় কারণ, তাতে উভয় প্রকারেরই দো‘আ রয়েছে। তার একটি হচ্ছে আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে কোনো ফায়েদা হাসিল কিংবা কোনো ক্ষতি ও লোকসান অথবা বিপদ থেকে রক্ষা তথা যে কোনো প্রয়োজন পূরণের দো‘আ। যাকে সরাসরি প্রার্থনা তথা চাওয়া-পাওয়ার দো‘আই বলা হয়। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে ইবাদাতের দো‘আ তথা ক্বিয়াম, কিরাত, রুকু’ ও সাজদাহ’র মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার নিকট সাওয়াবের আশা করা। যার মূল লক্ষ্যও আল্লাহ তা‘আলার মাগফিরাতই হয়ে থাকে।
“জামা‘আত” শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে কোনো জিনিসের আধিক্য। তেমনিভাবে কিছু সংখ্যক মানুষ কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে কোথাও একত্রিত হওয়াকেও “জামা‘আত” বলে আখ্যায়িত করা হয়। শরী‘আতের পরিভাষায় “জামা‘আত” বলতে সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে দু’ (ইমাম ও মুক্তাদি) বা ততোধিক ব্যক্তির মসজিদ অথবা সেরূপ কোনো জায়গায় একই সময়ে একত্রিত হওয়াকে বুঝানো হয়।