সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্যে যিনি আমাদেরকে নিখাদ তাওহীদের দিশা এবং সুন্নাত ও বিদ‘আতের পার্থক্যজ্ঞান দিয়েছেন। অসংখ্য সালাত ও সালাম তাঁর জন্যে যিনি আমাদেরকে তা-কিয়ামত সফল জীবন অতিবাহনের পথ বাতলিয়েছেন। তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবীদের প্রতিও রইল অসংখ্য সালাম।
প্রতিনিয়ত মসজিদে গমনকারী প্রতিটি ধর্মপ্রাণ মুসলিমই মসজিদের এই করুণ মুসল্লীশূন্যতা অবলোকন করে কমবেশি মর্মব্যাথা অনুভব না করে পারেন না। আমি ও তাদেরই একজন। এ মহাগুরুত্বপূর্ণ মুসলিম জাতির বাহ্যিক নিদর্শনের প্রতি চরম অবহেলা থেকে উত্তরণের জন্য যে কোনো সঠিক পন্থা অনুসন্ধান করা নিজস্ব ধর্মীয় কর্তব্য বলে জ্ঞান করি। তাই প্রথমতঃ সবাইকে মৌখিকভাবে জামা‘আতে উপস্থিতির প্রতি উৎসাহ প্রদান ও তা থেকে পিছিয়ে থাকার ভয়ঙ্করতা বুঝাতে সচেষ্ট হই, কিন্তু তাতে আশানুরূপ কোনো ফল পাওয়া যায় নি। ভাবলাম হয়তো বা কেউ মনোযোগ দিয়ে শুনছেন না অথবা তা দীর্ঘক্ষণ ক্রিয়াশীল থাকার জন্য যথাযোগ্য কোনো প্রকল্প এখনো হাতে নেওয়া হয় নি। তাই লেখালেখিকে দ্বিতীয় মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করি, অথচ আমি এ ক্ষেত্রে নবাগত। কতটুকু সফলকাম হতে পারবো তা আল্লাহ মালুম। তবুও প্রয়োজনের খাতিরে ভুল-ত্রুটির প্রচুর সম্ভাবনা পশ্চাতে রেখে ক্ষুদ্র কলম খানা হস্তে ধারণের দুঃসাহসিকতা দেখাচ্ছি। সফলতা তো একমাত্র আল্লাহ তা‘আলারই হাতে। তবে ‘নিয়্যাতের ওপরই সকল কর্মের ফলাফল নির্ভরশীল’ রাসূল মুখনিঃসৃত এ মহান বাণীই আমার দীর্ঘ পথসঙ্গী।
অত্যন্ত আনন্দের বিষয় হচ্ছে এই যে, এ পুস্তিকাটিতে রাসূলুল্লাহ @ সম্পৃক্ত যতগুলো হাদীস উল্লিখিত হয়েছে সাধ্যমত এর বিশুদ্ধতার প্রতি সযত্ন দায়িত্বশীল দৃষ্টি রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে নিদেনপক্ষে সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ আল্লামা নাসেরুদ্দীন আল্বানী রহ.-এর হাদীস শুদ্ধাশুদ্ধনির্ণয়ন নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। এতদসত্ত্বেও সকল যোগ্য গবেষকদের পুনর্বিবেচনার সুবিধার্থে প্রতিটি হাদীসের সাথে তার প্রাপ্তিস্থাননির্দেশ সংযোজন করা হয়েছে। তবুও সম্পূর্ণরূপে নিরেট নির্ভুল হওয়ার জোর দাবি করার ধৃষ্টতা দেখাচ্ছি না।
শব্দ ও ভাষাগত প্রচুর ভুল-ভ্রান্তি বিজ্ঞ পাঠকবর্গের চক্ষুগোচরে আসা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে ভুল গুরুসামান্য যতটুকুই হোক না কেন লেখকের দৃষ্টিগোচর করলে চরম কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ থাকবো। যে কোনো কল্যাণকর পরামর্শ দিয়ে দাওয়াতী স্পৃহাকে আরো বর্ধিত করণে সর্বসাধারণের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি। আল্লাহ তা‘আলা সবার সহায় হোন।
এ পুস্তিকা প্রকাশে যে কোনো জনের যে কোনো ধরণের সহযোগিতার জন্য সমুচিত কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনে এতটুকুও কোতাহী করছি না। ইহপরকালে আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেককে আকাঙ্ক্ষাতীত কামিয়াব করুন তাই হচ্ছে আমার সর্বোচ্চ প্রত্যাশা। আমীন সুম্মা আমীন ইয়া রাব্বাল আলামীন।
সর্বশেষে জনাব শাইখ আব্দুল হামীদ ফায়যী সাহেবের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করে পারছিনে। যিনি অনেক ব্যস্ততার মাঝেও আমার আবেদনক্রমে পান্ডুলিপিটি আদ্যপান্ত অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখেছেন এবং তাঁর অতীব মূল্যবান মতামত ব্যক্ত করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা তাকে এর উত্তম প্রতিদান দিন এবং তাঁর জ্ঞান আরো বাড়িয়ে দিন এ আশা রেখে এখানেই শেষ করলাম।
লেখক