সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তা‘আলার জন্য। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক প্রিয় হাবীব মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সকল নবী-রাসূলগণের ওপর। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ব্যতীত আর কোনো সত্য ইলাহ নেই। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল।
অবিশ্বাস, ধর্মহীনতা আর নাস্তিক্যবাদের অবিরাম ধেয়ে আসা ঝড়ের মুখে পড়ে আজ আমাদের যুবসমাজ দিগ্বিদিকশূন্য। যে জাতি এক সময় গোটা পৃথিবীর নেতৃত্ব দিয়েছে, বিস্তৃত দুনিয়ার দিগ-দিগন্তে বিজয়াভিযান পরিচালনা করেছে, মহান খালিকের মহাপবিত্র রিসালতের আলোকমালা অন্ধকার পৃথিবীর অলিতে-গলিতে পৌঁছে দিয়ে বিশ্ব-মানবতাকে হিদায়াতের রাজপথে এনে দাঁড় করিয়েছে, তৎকালীন পৃথিবীর মানবতার ঘাড়ে চেপে বসা সারশূন্য ধর্মগুলোর জের-জুলুম থেকে মুক্ত করে ইসলামের আদল-ইনসাফের সুশীতল ছায়াতলে এনে আশ্রয় দিয়েছে, শির্কের যিন্দানখানা থেকে আযাদ করে তাওহীদের পেয়ালা মানবতার অধরে তুলে ধরেছে- সেই জাতিই আজ সর্বহারা। বিশ্ব বিজেতা সেই জাতিই আজ বিশ্বের সবচেয়ে ভীতু ও পরাভূত জাতি। সবধরনের জুলুম আর জাহালত আজ সে জাতির সর্বত্র জেঁকে বসেছে। তাদের নতুন প্রজন্ম স্বীয় দীন-ধর্ম আর ঐতিহ্য থেকে সর্বদা পালানোর পথ খুঁজছে। পূর্বপুরুষের গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে পাশে ফেলে রেখে কুফর, নাস্তিক্যবাদ আর পৌত্তলিকতার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ছে।
উম্মাহর এই সর্বনাশা সংকটঘন পরিস্থিতিতে কোনো সচেতন মানুষের পক্ষে কি বসে বসে তামাশা দেখা সম্ভব? আমিও তাই পারিনি। নিজের সকল দুর্বলতার কথা মনে রেখেই, পাথেয়ের স্বল্পতা আর পথের বন্ধুরতার কথা জেনেও আল্লাহর ওপর ভরসা করে সামনে অগ্রসর হওয়ার সাহস পেয়েছি। কারণ সন্দেহ নেই, আজ গোটা মুসলিম উম্মাহর ভাবী উত্তরাধিকারী যুবসমাজ যেসব আগ্রাসন আর হুমকির সম্মুখীন নাস্তিক্যবাদ রয়েছে এর সামনের কাতারে। আর তাই নিজের ঈমানের দাবি পূরণের লক্ষ্যে নাস্তিক্যবাদের উৎস, কার্যকারণ ও সমাধানের ওপর কয়েকটি পৃষ্ঠা কলম চালনার প্রয়াস পেয়েছি। যদি একজন দিশেহারা পথিকও এর মাধ্যমে দিশা লাভ করেন, একজন আলোক-সন্ধানীও যদি এর মাঝে এতটুকু আলোর রেখা খুঁজে পান- তবেই আমার শ্রম সার্থক। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সহায় হোন। আমীন।
আব্দুর রহমান আব্দুল খালেক
কুয়েত, ৭ জুমাদাল আউয়াল ১৪০৩ হিজরী
১৯ ফেব্রুয়ারী, ১৯৮৩ ঈসায়ী